আ’লীগের বিরোধীতার মুখে পেকুয়ায় সাব-রেজিষ্ট্রারের কার্যক্রম বন্ধ

এম.জুবাইদ, পেকুয়া:
পেকুয়া উপজেলা প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ১২ বছর পর ১৯ আগষ্ট সাব-রেজিষ্ট্রারের কার্যক্রম চালু হাওয়ার আগমুহুর্তে আ’লীগের বিরোধীতার কারণে রহস্যজনকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন আ’লীগ নেতা জানান, বর্তমান মহাজোট সরকার আমলে পেকুয়ায় সরকারীভাবে সাব-রেজিষ্ট্রারের কার্যালয় চালু করতে হলে বর্তমান মহাজোট সরকারের উধর্ধতন কতৃপক্ষ বা মহাজোটের দলীয় নেতৃবৃন্দদের দিয়ে উদ্বোধন করতে হবে। অন্যথায় কোন সরকারী অফিস চালু করা যাবেনা। স্থানীয় আ’লীগ নেতৃবৃন্দদের দাবীর প্রেক্ষিতে গত ১৯ আগষ্ট কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য জেলা সাব রেজিষ্ট্রারের কার্যালয় থেকে মৌখিকভাবে একটি আদেশ জারি করা হয়েছে বলে সূত্রে জানায়।

এদিকে সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের কার্যক্রম হঠাৎ করে বন্ধ ঘোষণা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে দলিল লেখকরা। গতকাল দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দরা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার কাছে যান। সেখানে কোন ধরণের সুরাহা না হাওয়ায় তারা জেলা প্রশাসকের কাছে যান। তবে এলাকাবাসীর দাবী ততকালিন চারদলীয় জোট সরকারের যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমেদের প্রচেষ্টায় ও ততকালিন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০০২ সালের ২ এপ্রিল চকরিয়া উপজেলা কে দুভাগে ভাগ করে ৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে পেকুয়া কে একটি উপজেলা ঘোষণা করেন। উপজেলা প্রতিষ্ঠার পর থেকে হাটিহাটি পা পা করে উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন, ডাকবাংলো, কলেজ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ক্রীড়া কমপ্লেক্স, উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনারের কার্যালয় সহ যাবতীয় সরকারী অফিস আদালত পৃথক হয়ে পেকুয়া উপজেলা কে একটি পূর্ণাঙ্গ উপজেলায় রূপ নেয়।

কিন্তু দীর্ঘ ১২ বছর ধরে স্থানাভাবে চালু হয়নি উপজেলা রেজিষ্টারের কার্যালয়। কিন্তু সম্প্রতি পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি খালী ভবন ভাড়া নিয়ে এ অফিসের কার্যক্রম চালু করার সব উদ্যোগ সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শুরুতেই শুধুমাত্র আওয়ামীলীগের অদৃশ্য নেতাদের বিরোধীতার মুখে হোচোট খেল পেকুয়ার মানুষের প্রাণের দাবি সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের কার্যক্রম।

গতকাল চৌমুহনী এলাকায় গিয়ে প্রথমদিন রেজিষ্ট্রি করতে আসা শামশুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোছাইন, মাষ্টার আলী আহমদ, ছরওয়ার কামাল সহ অনেকের সাথে কথা বলে জানা যায়, “আমরা শুনেছিলাম আজকে রেজিষ্ট্রি হবে কিন্তু এখানে এসে জানতে পারলাম আওয়ামীলীগ নেতাদের মাধ্যমে উদ্বোধন না করায় এ অফিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।” তারা জানান, ‘সুদুর চকরিয়া গিয়ে জমি রেজিষ্ট্রি করতে গিয়ে শত শত মানুষকে দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়। আমরা মনে করছিলাম আমাদের দুর্ভোগ লাঘব হবে কিন্তু কপালে দু:খই রয়ে গেল। অনেক সময় কাগজপত্র গোচাতে সময় চলে গেলে অতিরিক্ত ফি দিয়ে কবলা করতে হয়। চুক্তিবদ্ধ হাওয়ার পর গত ১৬ আগষ্ট পেকুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীবাসে অস্থায়ী কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন জেলা সাব রেজিষ্ট্রার মোস্তাক আহম্মদ সহ মহেশখালী- চকরিয়া- পেকুয়া- কুতুবদিয়া উপজেলায় দায়িত্বরত সাব- রেজিষ্ট্রার আশরাফুল ইসলাম সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা। সবকিছু সেরে অবশেষে পেকুয়া সাব রেজিষ্ট্রারের কার্যক্রম ১৯ আগষ্ট শুরু হাওয়ার কথা ছিল।

অফিসসূত্রে জানায় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সাব রেজিষ্ট্রারের পদ শূন্য থাকার কারণে চকরিয়ায় দায়িত্বরত সাব রেজিষ্ট্রার কে পেকুয়ায় অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তিনি সপ্তাহে সোম ও মঙ্গলবার দুই দিন রেজি: কার্যক্রম করবেন। অফিসের জনবল সম্পর্কে জানতে জেলা সাব রেজিষ্ট্রার মোস্তাক আহম্মদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান চকরিয়া থেকে এক অফিস সহকারী ও একজন মহুরী এবং কিছু সংখ্যাক কর্মচারী দিয়ে পেকুয়া অফিসের কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন