দীঘিনালার জাম্বুরা পাড়াবাসী ছড়া ও কুয়ার পরিষ্কার পানিই ভরসা
দীঘিনালা প্রতিনিধি,
দীঘিনালা উপজেলার দূর্গম গ্রাম জাম্বুরা পাড়া। এ গ্রামে বিশুদ্ধ পানির সংস্থান নেই। সবাই ছড়ার পরিষ্কার ও কুয়ার পানির উপর নির্ভর। এ গ্রামের বাসিন্দাদের বছরে ছয় মাস কুয়ার পানি তাদের চাহিদা মেটালেও বর্ষা মৌসুম আর ফালগুন, চৈত্র মাসে পানির কষ্ট বেড়ে যায়।
সরেজমিন জাম্বুরা পাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড়ের নিচে জমির পাশে একটি ছোট্ট কূয়া খনন করা হয়েছে। কুয়ার পানি উপচে জমিতে গিয়ে পড়ছে। কুয়া থেকে পানি সংগ্রহ করছেন সবিতা চাকমা (৩৮) ও সুমতি চাকমা (৩০) নামে দুই নারী।
তারা জানান, এ কুয়াটিই শতাধিক পরিবারের পান করা ও ব্যবহারের একমাত্র পানির ভরসা। বছরে ছয় মাস কুয়ায় প্রচুর পানি থাকে। পানি স্বচ্ছতাও থাকে। কিন্তু বর্ষা মৌসুমে পানি আর পান করা যায় না। পাহাড় থেকে আর্বজনা নেমে এসে কুয়ার পানি দূষিত করে ফেলে। আর ফালগুন, চৈত্র মাসে কুয়ায় পানি খুব কম পাওয়া যায়। তখন পানির জন্য এক প্রকার প্রতিযোগীতা সৃষ্টি হয়।
গ্রামের চঞ্চলা দেবী চাকমা, পূর্ণ মঙ্গল চাকমা, রসায়ন চাকমা, প্রবীর রঞ্জন চাকমা ও কল্প রঞ্জন চাকমাসহ গ্রামবাসীরা জানান, জাম্বুরা এলাকায় মাটির নিচে পাথর থাকায় নলকূপ স্থাপন করা যায় না। পাহাড়ের নিচে যে কুয়াটি খনন করা হয়েছে সেখানে প্রচুর পানি থাকে। আমরা বাপ দাদার আমল থেকে এ কুয়ার পানিই পান করে আসছি। যে পরিমাণে কুয়ার পানি অপচয় হয় তা সংরক্ষণ করলে জাম্বুরাবাসী সারাবছরই পানি পেত। শত বছরের পানির কষ্ট থেকে মুক্তি পেত। সরকারীভাবে কোন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে কুয়ার পানি গুলো সংরক্ষণ করে তা সরবরাহ করা হয় তাহলে পানির অপচয় আর হতো না। গ্রামবাসীরাও সারা বছর পানি পেত।
উপজেলার কবাখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১, ২, ৩ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য সীমা দেওয়ান বলেন, জাম্বুরাবাসীর পানি কষ্ট শত বছরের। তবে গ্রামবাসী যে কুয়াটি খনন করে পানির সুবিধা পাচ্ছে তাতে প্রচুর পানি পাওয়া যায়। পানি গুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে পানির সমস্যা আর থাকবে না।
দীঘিনালা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, জাম্বুরা পাড়া এলাকায় নলকূপ স্থাপন করা যায় না। কুয়ায় যে পানি গুলো পাওয়া যায় তা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় কিনা এবং সেখানে পানি গুলো সংরক্ষণ করে সরবরাহ করা যায় কিনা তা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করা হবে। এ ছাড়াও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে গ্রামীণ পানি সরবরাহ নামে একটি প্রকল্প চালু হয়েছে সে প্রকল্পের আওতায় আনা যায় কিনা চেষ্টা করা হবে।