উখিয়ার সীমান্ত দিয়ে হঠাৎ বেড়েছে ইয়াবা পাচার: ৫ লাখ ৭০ হাজার ইয়াবা উদ্ধার, আটক ৩, নিহত ৩

fec-image

করোনা লকডাউনের পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল হতে না হতে সীমান্ত এলাকা দিয়ে হঠাৎ আশঙ্কজনক ভাবে বেড়েছে ইয়াবা পাচার। যা স্থানীয়দের ভাবিয়ে তুলেছে। গত ২৬ দিনের ব্যবধানে উখিয়ার সীমান্ত এলাকা থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র সদস্যরা পৃথক অভিযান চালিয়ে ৫ লাখ ৭০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করেছে।

এসময় বিজিবি’র হাতে ৩ জন পাচারকারিকে আটক ও ৩ জন রোহিঙ্গা ইয়াবা পাচারকারি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।

সূত্রে জানা গেছে, করোরা লকডাউনের কারনে সীমান্তে কড়াকড়ি থাকা অবস্থায় মিয়ানমার থেকে ইয়াবা ও মাদক অনুপ্রবেশ কিছুটা বন্ধ ছিল। সরকারের সিদ্ধান্তের আলোকে লকডাউন শিথিল হলে হঠাৎ করে বেড়ে যায় ইয়াবা পাচার।

সম্প্রতি ২৬ দিনের ব্যবধানে উখিয়ার সীমান্ত জনপদ রাজাপালং ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের তুলাতুলি জইল্লারগোদা নামক স্থানে সীমান্তের রেজু আমতলী বিজিবি’র সদস্যরা ২৬ ও ২৭ জুন দুই দফা অভিযান চালিয়ে ২ লাখ ৭০ হাজার পিস ইয়াবা‘সহ ৩ জনকে আটক করে। এসব ইয়াবা আনুমানিক মূল্য ৮কোটি ১০ লাখ টাকা।

আটককৃত ৩জনই স্থানীয় নাগরিক। এরা হলেন- রাজাপালং ইউনিয়নের ডিগলিয়া গ্রামের মো. সৈয়দের ছেলে মো. শেখ আনোয়ার (২০), রত্নাপালং ইউনিয়নের করইবনিয়া গ্রামের হাকিম আলীর ছেলে মো. জোবায়ের (২০) ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের গর্জনবুনিয়া গ্রামের মো. আলীর ছেলে বাপ্পি (১৯)।

একই স্থানে ৯জুলাই কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি’র অধিনায়ক লে. কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ এর নেতৃত্বে তুমব্রু বিওপির সদস্যরা মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ৩ লাখ ইয়াবা জব্ধ করে। যার আনুমানিক মূল্য ৯ কোটি টাকা।

এসময় ওই স্থানে বিজিবির সাথে বন্দুকযুদ্ধে ৩জন রোহিঙ্গা ইয়াবা পাচারকারী নিহত হয়। নিহতরা হলেন-তুমব্রু কোনারপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরের বাসিন্দা মৃত জুলুর মুল্লুকের ছেলে নুর আলম (৪৫), উখিয়ার বালু্খালী ১নং ক্যাম্পের গুরা মিয়ার ছেলে মো. হামিদ (২৫), কুতুপালং ২ নং ক্যাম্পের ছৈয়দ হোসেনের ছেলে নাজির হোসেন(২৫)।

সীমান্তের রেজু আমতলী এলাকার ফরিদ আলম জানান, সীমান্ত দিয়ে আগে এ ধরনের ইয়াবা আসতে দেখিনি। কিন্তু এই করোনাকালীন সময়ে এ ধরনের বৃহৎ ইয়াবা চালান আসতে শুনেছি।

তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কিছু ইয়াবা ও মাদক পাচারকারি সরাসরি মিয়ানমার থেকে ইয়াবা চালান নিয়ে এসে রেজু আমতলী, তুলাতুলি, বাইশফাড়ি, আজুখাইয়া, বড়বিল সীমান্ত এলাকা দিয়ে ক্যাম্পে ঢুকে পড়ছে।

রোহিঙ্গারা পাচার কাজে ব্যবহার করছে স্থানীয় যুবকদের। যারা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ধরা পড়লেও রোহিঙ্গা গডফাদাররা রয়েছে যাচ্ছে ধরাছোয়ার বাইরে।

যাদের মধ্যে রয়েছে কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা শিবিরের মাস্টার মুন্না, মো. ইউনুছ প্রকাশ কানা ইউনুছ, শফিক আলমসহ অন্তত ১০/১৫ জন রোহিঙ্গা।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি’র অধিনায়ক লে.কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ বিপিএম-সেবা জানান, প্রধানমন্ত্রী মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণার প্রেক্ষিতে বিজিবি বিশেষ মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছে।

যার প্রেক্ষিতে গত ১ জানুয়ারি হতে উখিয়ার বিভিন্ন স্থানে চোরাচালান ও মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ৩৪ কোটি ২৩ লাখ টাকা মূল্যের ১১ লাখ ৪১ হাজার ২৯৭ পিস ইয়াবা‘সহ ৮৯ জন আসামিকে আটক করেছে।

এছাড়াও বিজিবি’র সাথে বন্দুক যুদ্ধে ৯ জন ইয়াবা ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইয়াবা, উখিয়া, করোনা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন