কক্সবাজার সদর হাসপাতালে আধুনিক বহির্বিভাগে মিলবে সমন্বিত সেবা, কমবে দুর্ভোগ
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে যুক্ত হলো আধুনিক বহির্বিভাগ। যেখানে সব ধরণের চিকিৎসা ও পরীক্ষার সুযোগ রয়েছে। মিলবে সমন্বিত সেবা। আগের তুলনায় রোগীদের চাপ ও দুর্ভোগ কমবে অনেকটা ।
দাতা সংস্থা-ইউএনএইচসিআর এর অর্থায়নে ৩ তলা বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন ভবন নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এখন শুধু আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পালা। অল্প সময়ের মধ্যে আধুনিক ভবনটি উদ্বোধন করা হবে।
তবে, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের আগেই সোমবার থেকে শুরু হয়েছে চিকিৎসাসেবা। প্রথম দিনে রোগির ভীড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এই এক দিনেই ১৪৯৭ জন সেবা পেয়েছে।
আধুনিক বহির্বিভাগে মেডিসিন, অর্থোপেডিক, সার্জারি, গাইনি, চক্ষু, নাক-কান-গলা, দন্ত, চর্মরোগ, হৃদরোগ বিভাগসহ সরকারি সব ধরণের স্বাস্থ্যসেবা মিলবে।
বিশেষ সেবা হিসেবে রয়েছে শিশু বিকাশকেন্দ্র, ফিজিওথেরাপি ইউনিট, নিয়মিত ভেকসিন কার্যক্রম, এইচআইভি বা এইডস সেবা, প্রতিবন্ধী সেবা ও মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগ।
কিশোরদের এডোলেসন কর্নার, গর্ভবতী ও প্রসব পরবর্তী মা-দের এএনসি বা পিএনসি সেবা, জরায়ু মুখের ক্যান্সার স্ক্রিনিং করতে ভায়া সেন্টার, ব্রেস্ট ক্লিনিকে দেওয়া হবে মা-দের স্তন ক্যান্সারের চিকিৎসা।
আধুনিক বহির্বিভাগে যুক্ত আছে পুষ্টি ও ব্রেস্ট ফিডিং সেন্টার। ব্রেইন, লিভার, কিডনি, পরিপাকতন্ত্র বিভাগের ডাক্তার নিয়মিত থাকবেন।
শিশু বিকাশকেন্দ্রে প্রতিবন্ধী ও বিকলাঙ্গ শিশু রোগীদের থেরাপি নিশ্চিত করা হবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট মেডিকেল অফিসারগণ নিয়মিত রোগি দেখবেন। পাশাপাশি ইসিজি, ইকো কার্ডিওগ্রাফি, এনসিডি কর্নার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ নানাবিধ অসংক্রামক রোগ ব্যাধির পরিপূর্ণ চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা আছে বহির্বিভাগে।
নীচ তলায় টিকিট কাউন্টার। তার পাশেই মহিলাদের পৃথক নামাজঘর। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের জন্য আধুনিক কনফারেন্স রুমও রাখা হয়েছে।
চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণের পর বরাদ্দ অনুপাতে রোগীদের মাঝে প্রয়োজনীয় সরকারি ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও ফার্মাকোভিল্যান্স ফোকাল পয়েন্ট ডা. মো. আশিকুর রহমান জানান, জেলায় জনসংখ্যা ও রোগীদের চাহিদার আলোকে বেড এবং প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট অপ্রতুল। হাসপাতালের ধারণ ক্ষমতার ৪ গুণের মতো রোগী ভর্তি থাকে। বহির্বিভাগে দৈনিক প্রায় দেড় হাজার জনকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি জানান, বহির্বিভাগে টিকিট মূল্য মাত্র ৫ টাকা। সোমবার (১৪ নভেম্বর) একদিনেই ১৪৯৭ জন রোগী চিকিৎসা সেবা নিয়েছে। সরকারি স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে চিকিৎসকসহ সবাই আন্তরিক।
সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদুল হক জানান, আধুনিক বহির্বিভাগ ভবনে সুপরিসর দুইটি লিফট রয়েছে। শুধুমাত্র আউটডোরে রোগি দেখার জন্য এধরণের ডেডিকেটেড ভবন দেশের আর কোথাও নেই। যা জেলাবাসীর অনেক বড় প্রাপ্তি। তিনি জানান, তিন তলা বিশিষ্ট নবনির্মিত আধুনিক ভবনটি বুধবার (১৬ নভেম্বর) ঠিকাদারের নিকট থেকে বোঝে নেওয়া হবে। প্রয়োজনের তাগিদে ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করে দেওয়া হয়েছে। পরে সম্ভাব্য অতিথি পাওয়া সাপেক্ষে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।
ভবনটি ভবিষ্যতে ১০তলা পর্যন্ত উন্নীত ও পৃথক চিকিৎসা বিভাগ চালুসহ অনেক কিছু করা যাবে বলে মন্তব্য করেন সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদুল হক।