খাগড়াছড়িতে আ.লীগ-বিএনপির সংঘর্ষে সাংবাদিক ও পুলিশসহ আহত দেড় শতাধিক
খাগড়াছড়িতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ছে। সংঘর্ষে সাংবাদিক ও পুলিশসহ উভয়ের অন্তত দেড় শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। সংঘর্ষে খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান ও এসআই মামুন সহ ৩ পুলিশ ও সাংবাদিক আহত হন।সংঘর্ষ চলাকালে খাগড়াছড়ি পৌরসভার সামনে ১০টি মোটরসাইকেল ভাংচুর ও আগুন দেওয়া হয়। ঘটনার জন্য বিএনপি ও আওয়ামী লীগ পরস্পরকে দায়ী করেছে। এই ঘটনায় উপজেলা শহরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শহরে যানবাহন চলাচল ও ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, পদযাত্রা কর্মসূচির প্রস্তুতির সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির অফিসে আওয়ামী লীগের নেতকর্মীরা হামলা চালায়। এতে বিএনপির নেতা হোসেন মো. বাবুসহ বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়। পরে বিএনপির নেতাকর্মী সংঘবদ্ধ হয়ে আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা চালালে জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক নরুল আজমসহ বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আহত হয়। এরপর পুরো শহরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। হামলায় উভয়পক্ষ বাঁশ-লাঠি ও লোহার রড ব্যবহার করে। সংঘর্ষ চলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত । সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
আওয়ামী লীগ উন্নয়ন শোভাযাত্রা এবং বিএনপি তাদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী পদযাত্রা বের করাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। থেমে থেমে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক নুরুল আজম, মো. আলমাছ, ক্যজরী মারমাসহ ৮০-৯০ জন এবং জেলা বিএনপির সমবায় সম্পাদক মো. হোসেন বাবুসহ ৩০-৪০ জন আহত হয়েছেন। আহত কয়েকজনকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।
খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমএন আবছার অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা পদযাত্রায় অংশ নিতে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জমায়েত হওয়ার প্রাক্ককালে আওয়ামী লীগ বিনা উস্কানিতে হামলা চালিয়ে ভাংচর করেছে। এছাড়া আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের বিএনপির নেতাকর্মীদের মারধর করা হয়েছে। এতে বিএনপির ১০০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী জানান, উন্নয়ন শোভাযাত্রায় অংশ নিতে আসার পথে বিএনপির ক্যাডাররা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এসময় খাগড়াছড়ি পৌরসভাসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে। এসময় খাগড়াছড়ি সদর থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান, সদর থানার দুজন এসআইসহ অন্যান্য পুলিশ ও সাংবাদিক আহত হন।
জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কেএম ইসমাইল হোসেন পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপির সরকারের উন্নয়ন বিরোধী কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে খাগড়াছড়ি শহরের অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। তারা আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা চালিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করেছে।
নিউজটি ভিডিওতে দেখুন: