ঘূর্ণিঝড়ে ৬ জেলায় ১০ জনের মৃত্যু

fec-image

ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে ৬ উপজেলায় এখন পর্যন্ত ১০ জন মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে, সোমবার (২৭ মে) আটজন এবং রোববার দুইজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এরমধ্যে, পটুয়াখালীতে তিনজন, ভোলা ও বরিশালে দুইজন করে এবং সাতক্ষীরা, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লায় একজন করে রয়েছে।

সোমবার (২৭ মে) ভোরে বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকায় বহুতল ভবনের দেয়াল ধসে ২ জন নিহত হন। এসময় আহত হন একজন।

পুলিশ জানিয়েছে, ৪ জন হোটেলে অবস্থান করছিলেন। বাতাসের তীব্রতায় আকস্মিক পাশের চারতলা ভবনের একটি অংশের দেয়াল ধসে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন হোটেল মালিক লোকমান ও কর্মচারী মোকছেদুল। আহত হন কর্মচারী সাকিব। তাকে শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে ভোলায় প্রাণ গেছে দুইজনের। এর মধ্যে বসতঘরে চাপা পড়ে মারা যান মনেজা খাতুন নামের এক নারী। তিনি লালমোহন উপজেলার চর উমেদ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কাদেরের স্ত্রী। স্থানীয়রা জানান, রাতে মনেজা খাতুন তার এক নাতিকে নিয়ে নিজ ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। ভোরে ঝড়ো বাতাসে তার টিনের ঘর ভেঙে চাপা পড়েন তিনি। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মনেজা। তবে অক্ষত আছেন তার নাতি।

এছাড়া, জেলার দৌলতখানে ঘর চাপা পড়ে মাইশা (৪) নামে আরও এক শিশুর প্রাণ গেছে। সে দৌলতখান পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মো. ম‌নির হোসেনের মেয়ে। স্থানীয়রা জানান, রাতে বাবা-মার সাথে ঘু‌মিয়ে ছিল শিশু মাইশা। ভোরের দিকে ঘূ‌র্ণিঝড় রিমালে তাদরে ঘরের পাশে গাছ ভেঙে পড়ে। এতে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মাইশার মৃত্যু হয়। এঘটনায় তাদের প‌রিবারের আ‌রও তিনজন আহত হয়েছে।

সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ থানার টেক্সটাইল এলাকায় দেয়াল চাপায় মারা যান এক পথচারী। স্থানীয়রা জানায়, ঝড়ের সময় ভারী বৃষ্টি হচ্ছিলো। এসময় একটি দেয়ালের পাশে আশ্রয় নেন সাইফুল ইসলাম হৃদয়। হঠাৎ সীমানা দেয়ালটি ভেঙে পড়লে চাপা পড়ে মারা যান হৃদয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস তার মরদেহ উদ্ধার করে।

অন্যদিকে পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মারা গেছেন তিনজন। এর মধ্যে, দুমকী উপজেলায় ঝড়ো হাওয়ায় গাছচাপায় জয়নাল হাওলাদার নামে (৭০) এক বৃদ্ধের প্রাণহানি ঘটে। তিনি উপজেলার পাঙ্গা‌শিয়া ইউ‌নিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড নলদোয়া‌নি স্লুইসগেট এলাকার বাসিন্দা।

পটুয়াখালীর বাউফলে ঘূর্ণিঝড় রিমালে মৃত্যু হয়েছে মো. আব্দুল করিম (৬০) নামের এক পথচারীর। সকাল ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ গেটের সামনে ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানিয়েছে, নিহত আব্দুল করিম সামান্য মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ের কোনো একসময় তিনি উপজেলা পরিষদ গেট সংলগ্ন বিএনপির পুরানো (পরিত্যক্ত) অফিসের নিচে আশ্রয় নেয়। ঝড়ের তাণ্ডবে অফিসটি ভেঙে পড়লে তিনি চাপা পড়ে প্রাণ হারান।

এর আগে, রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালি আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকত মোড়ল নামে এক বৃদ্ধ মারা যান। একইদিন বিকেলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধূলাসর ইউনিয়নের কাউয়ারচর এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে প্লা‌বিত এলাকা থেকে বোনকে রক্ষা করতে গিয়ে মো. শরীফুল ইসলাম নামে একজনের মৃত্যু হয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ক্ষতিগ্রস্ত, ঘূর্ণিঝড় রেমাল
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন