টেকনাফে নাফনদে গুলিবিদ্ধ জেলের মৃত্যু

fec-image

টেকনাফের নাফ নদে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। সে টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ৯ নং ওয়ার্ড বরইতলী এলাকার গুরা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ ইসলাম (৩৫)।

স্থানীয় ও পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, টেকনাফ স্থলবন্দর সংলগ্ন জালিয়ার দ্বীপের পাশে নাফনদের মিয়ানমার অংশে শনিবার (৭ নভেম্বর) কয়েকজন জেলে মাছ শিকার করতে যায়। সেখানে এঘটনা ঘটে। আহত মোহাম্মদ ইসলামের ভাই কোরবান আলী জানান, আমার ভাইসহ ৩ জন জেলে নদীতে মাছ শিকারে গেলে সেখানে আমার ভাই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। খবর পেয়ে আমরা তাকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে, সেখানে রবিবার (৮ নভেম্বর) সকালে চিকিৎসারত অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

জানাযায়, শনিবার (৭ নভেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে টেকনাফ স্থলবন্দর সংলগ্ন নাফনদী জালিয়ার দ্বীপ এলাকায় কয়েকজন জেলে মাছ শিকার করতে যায়। নদী থেকে অক্ষত ফিরে আসা আবু বক্কর ও শফি উল্লাহ প্রকাশ শবুল্লাহ জানান, নাফনদে নৌকা নিয়ে বিচরণ দেখে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বিজিপি সদস্যরা জেলেদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষন করে। তাদের ছোঁড়া গুলিতে টেকনাফ সদর ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ড বরইতলী এলাকার গুরা মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ ইসলাম(৩৫) পেটে গুলিবিদ্ধ হয়।

এরপর তার সাথে থাকা অন্য জেলেরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে রাত ৮টার দিকে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে আসে।

এ সময় জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত স্বাস্থ্য সহকারী ইসকান্দর মির্জা গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির অবস্থা আশংকা জনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে রেফার করে।

তারা আরো জানান, আমরা জেলে নদীতে মাছ শিকার করে কোন মতে সংসার চলে। দীর্ঘদিন মাছ শিকার বন্ধ থাকায় আমরা বেকার হয়ে পড়ি। আমাদের পরিবারে ছোট ছোট শিশুরা অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। অভাবের কারণেই একটি ডিংগি নৌকায় করে তিন জেলে নাফনদে মাছ শিকারে যায়। সন্ধ্যার দিকে নাফ নদীর জালিয়ার দ্বীপ নামক জায়গায় হঠাৎ করে মিয়ানমার জলসীমানা থেকে আমাদের উপর গুলিবর্ষণ করে। এসময় আমাদের সাথে থাকা একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়। পরে কোন মতে আমরা উপকুলে ফিরে আসি।

টেকনাফ-২ বিজিবি’র অধিনায়ক ফয়সাল হাসান খাঁন বলেন, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে নাফনদীতে জেলেদের মাছ শিকার নিষিদ্ধ করা রয়েছে। তারপর স্থানীয় জেলেরা কেনো বা কিভাবে নাফনদীতে যাচ্ছে সেই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।

উল্লেখ্য ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মাসে মিয়ানমারের সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঘটনার জের ও মাদক পাচার প্রতিরোধ করতে সরকার নাফনদীতে মাছ শিকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর থেকে সীমান্তে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কোন জেলেকে নাফনদীতে মাছ শিকার করতে দেয়নি। তবে অনেক জেলে রাতের আধারে কর্মরত বাহিনীর চোঁখ ফাঁকি দিয়ে বা ভিন্ন কৌশলে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জেলেরা মাছ শিকার করে থাকে। আবার অনেকে মাদক পাচারে জড়িয়ে যাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: গুলিবিদ্ধ, টেকনাফ, নাফনদ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন