আজ্ঞাবাহ নির্বাচন প্রতিহত করার অঙ্গিকারে বান্দরবানে বিএনপির দু-গ্রুপের মিছিল-সমাবেশ

Bandarban BNP jari 27.11.2013

স্টাফ রিপোর্টার :

বান্দরবানে বিএনপির দু-গ্রুপ ও ১৮ দলীয় জোট অহিংস আন্দেলনের মাধ্যমে ২য় দিনের অবরোধ পালন করেছে। পুলিশের বাঁধা অপেক্ষা করে জেরি-মাম্যাচিং বিএনপির দু-গ্রুপ পাল্টাপাল্টি মিছিল-সমাবেশের মধ্যে দিয়ে শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ন স্থানগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

বুধবারও নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার প্রতিববদে আঞ্চলিক সড়ক বান্দরবান-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের হলুদিয়াসহ কয়েকটি স্থানে রাস্তায় গছের গুঁড়ি ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিএনপি-জামায়াতসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে শহরে বিএনপি দু-গ্রুপ ও জামায়াত শিবির কয়েক ভাগে বিভক্ত হয়ে এবং বাস স্টেশনসহ অভ্যন্তরীন সড়কগুলো অবরোধ করে রাখে। এ সময় সবধরনের ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কার্যত বান্দরবান জেলার সাথে আঞ্চলিক সড়কের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এছাড়া জেলা শহর থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। জেলার অভ্যান্তরীণ সড়কগুলোতে সীমিত আকারে হালকা যানবাহন চলাচল করেছে। দুর্ভোগের মধ্যে পরছে যাত্রী ও স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। অনেকে যানবাহন না পেয়ে পায়ে হেটে গন্তব্যে পৌঁছার চেষ্টা করে।

জেলা শহরের বাস স্টেশন এলাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির উপজাতীয় বিষয়ক সম্পাদিকা মা ম্যাচিংয়ের নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবক দল, ও যুবদল, ছাত্রদল, মহিলাদলের একাংশের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন।  অন্যদিকে দশগজ দুরুত্বে জেলা বিএনপির সভাপতি সাচিং প্রু জেরির নেতৃত্বে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন এবং ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন।

অবরোধের সমর্থনে মা ম্যাচিং বলেন, সরকারের আজ্ঞাবাহী নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করে সরকার দেশকে সহিংসতার দিকে ঠেলে দিয়েছে। সরকার জনগণের আঙ্খাংকাকে তাচ্ছিল্য করে এক তরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা শুরু করেছে।

তিনি আরও বলেন, এ তফসিল সঙ্কট আরও ঘনীভূত করবে এবং সহিংসতা আরও বাড়াবে। এজন্য সৃষ্ট অস্থিতিশীলতার দায় সরকারকেই নিতে হবে। মা ম্যাচিং বলেন, সরকারের এজেন্ডা বাস্তাবয়নের জন্য নির্বাচন কমিশন তড়িঘড়ি করে তফসিল ঘোষণা করেছে। দেশবাসী, সুশীল সমাজ ও বুদ্ধিজীবীরা নির্বাচন কমিশনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিলকে সরকার ও নির্বাচন কমিশনের যৌথ জাতীয় তামাশা বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।

এসময় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, জেলা যুবদলের সভাপতি মশিউর রহমান মিঠন, সেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নেজাম উদ্দিন চৌধুরী, পৌর যুবদলের আহবায়ক আইযুব খান।

একই স্থানে জেলা বিএনপির সভাপতি সাচিং প্রু জেরি বলেন, ক্ষমতার মোহে প্রধানমন্ত্রী ধারাবাহিক নীলনকশা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রাখার সব কুট কৌশল প্রয়োগ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের তফসিল ঘোষণা দেশের বিদ্যমান অস্থিতিশীলতা, অশান্তির যে পরিবেশ বিরাজ করছে তা আরও ঘনীভূত করা হয়েছে। সরকারের গোপন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ হিসেবে তফসিল ঘোষণা করেছে। বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটসহ অন্যান্য রাজনৈতিক জোট এবং সুশীল সমাজ এ নির্বাচনী তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে।

জেরী বলেন, ঘোষিত তফসিলকে উদ্দেশ্যমূলক। ১৮ দলের শান্তিপূর্ণ অবরোধে সারাদেশে মানুষ সম্পৃক্ত হয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী দলের শান্তি পূর্ণ কর্মসুচিকে বানচালরে জন্য সরকার সাজানো পুলিশ প্রশাসন দিয়ে নির্যাতন ও দমন পীড়ন অব্যাহত রেখেছে।

এসময় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপি সহ-সভাপতি অধ্যাপক ওসমান গনি, সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান, জামায়াতের পৌর সভাপতি গোলাম মোস্তফা তাজ, উপজেলা যুবদলের সভাপতি হারুনুর রশিদ, সাধারণ সম্পাদক শিমুল দাশ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সাবিকুর রহমান জুয়েল, ছাত্র শিবিরের সভাপতি মো. হারুনসহ ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন