আজ বাংলাদেশ-মায়ানমার বর্ডার ট্রেড জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা
মুহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান, টেকনাফ:
আজ বাংলাদেশ-মায়ানমার বর্ডার ট্রেড জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্র“পের সভা অবশেষে আজ ২২ জুন দ্বি-পক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোজাহিদ উদ্দিন গতকাল এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ বৈঠক উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে । এ সভার ভেন্যু নিধারণ করেছে টেকনাফ সী-বীচ সড়কস্থ সেন্ট্রাল রিসোর্ট হোটেলে।
দীর্ঘ প্রায় ১ বছর পর গত ১৮ মে শনিবার ৭ তম এসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এর আগে ৯ মার্চ বৈঠক অনুষ্টানের নির্ধারিত তারিখ থাকলেও মায়ানমার দু’বারই বৈঠক স্থগিত করেছিল। তথ্যানূসন্ধানে জানা গেছে, সর্বশেষ ৬ষ্ঠ তম বৈঠক অনুষ্টিত হয়েছিল ২০১২ সনের ২ মে মায়ানমারের আরাকান প্রদেশের জেলা শহর আকিয়াবে বা সিটওয়ে। এর কয়েকদিন পরে ৮ জুন ২০১২ মায়ানমারের মংডু শহরে রোহিঙ্গা মুসলিম- রাখাইন জাতিগত সংঘাত সহিংস ঘটনার পর থেকে দীর্ঘ প্রায় ১ বছর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। এমনকি উক্ত ঘটনার পর টেকনাফ-মংডু সীমান্ত বাণিজ্য, টেকনাফ-মংডু ট্রানজিট পাস এবং ইমিগ্রিশন যাতায়াত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
উল্লেখ্য, ১৮ মে বৈঠকটি ছিল বাংলাদেশ-মায়ানমার বর্ডার ট্রেড জয়েন্ট ওয়ার্কিং অফিসিয়াল গ্রুপের ৭তম সভা। ১ম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল টেকনাফের সড়ক ও জনপথ বিভাগের রেষ্ট হাউজে ১ মে ২০১১। ২য় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল মায়ানমারের মংডু টাউনশীপে ৭ জুলাই ২০১১। এই সভা দু’টিতে বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন তৎকালীন টেকনাফের ইউএনও আ.ন.ম.নাজিম উদ্দিন। ৩য় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল কক্সবাজার লং-বীচ হোটেলের সম্মেলন কক্ষে ২২ আগষ্ট ২০১১।
মংডু টাউনশীপে ৪র্থ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮ অক্টোবর ২০১১। কক্সবাজার জেলা প্রশাকের সম্মেলন কক্ষে ১৮ ডিসেম্বর ২০১১ তারিখে ৫ম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর ২৯ মে ২০১২ মায়ানমারের আকিয়াবে ৬ষ্ঠ সভার পর দীর্ঘ প্রায় ১বছর আর বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। শেষোক্ত ৪টি সভায় বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিত্ব করেন কক্সবাজারের এডিসি জেনারেল। ১৮ মে টেকনাফের হোটেল সেন্ট্রাল রিসোটের্র ৭তম সভায় ১৯ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেয়ার কথা ছিল কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) সৈয়দ মোঃ নুরুল বশির।
বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অপর সদস্যরা হলেন- টেকনাফের ইউএনও শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন, টেকনাফস্থ ৪২ বিজিবির ১জন প্রতিনিধি, টেকনাফ সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার আবদুল করিম, বাংলাদেশ ল্যান্ড পোর্ট অথরিটির সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) মোঃ বাবুল হোছাইন, টেকনাফ স্থল বন্দর কাস্টমস রাজস্ব অফিসার হুমায়ুন কবির, টেকনাফ ইমিগ্রিশন অফিসার তৌহিদুল আনোয়ার, ইউনাইটেড ল্যান্ড পোর্টের জিএম মেজর (অব:) মাকসুদুর রহমান, বাংলাদেশ ফ্রুজেন ফুড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশনের পরিচালক সৈয়দ জিয়াউল হক, বাংলাদেশ- মায়ানমার চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রির ডিরেক্টর শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, বাংলাদেশ ফ্রুজেন শিল্ড ফিস্ ইম্পোর্টারস এসোসিয়েশনের সভাপতি আশ্রাফ হোসাইন মাসুদ, টেকনাফ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোঃ দিদার হোসেন, কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের প্রতিনিধি আবু মোরশেদ খোকা, টেকনাফ সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সেক্রেটারী এহেতেশামুল হক বাহাদুর, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি আবদুস শুকুর সিআইপি ও মোঃ আবুল হাশেম সিআইপি, এক্সপোর্ট-ইম্পোর্ট এসোসিয়েশনের মোঃ শফিক উল্লাহ ও ব্যবসায়ী মোঃ জিয়াবুল সিআইপি।
এবারের বৈঠকে এজেন্ডার মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ দলীয় প্রধানের সূচনা বক্তব্য ও পরিচিতি, মায়ানমার দলীয় প্রধানের শুভেচ্ছা বক্তব্য ও পরিচিতি, ৬ষ্ঠ তম বৈঠকের সিদ্ধান্তের পর্যালোচনা, বাংলাদেশ টিম লিডারের বক্তব্য ও মায়ানমার দলের জবাব, মায়ানমার টিম লিডারের বক্তব্য ও বাংলাদেশ দলের জবাব, পরবর্তী ৮তম বৈঠকের তারিখ ও স্থান নির্ধারন, উপহার সেশন ও ফটো সেশন। টেকনাফ সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সেক্রেটারী এহেতেশামুল হক বাহাদুর ও টেকনাফ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোঃ দিদার হোসেন জানান- নির্ধারিত এজেন্ডা ছাড়াও আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষ্যে ছোলা আমদানী, বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের মায়ানমারের আকিয়াবসহ বাইরে যাতায়াত সুবিধা, মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপ ব্যবহারের অনুমতি, বাংলাদেশ থেকে রপ্তানীকৃত ট্যাক্স ফ্রি পণ্যের সেদেশে ট্যাক্স মওকুফ, এলসি খোলা, বর্ডার হাট চালুসহ উভয় দেশের ব্যবসায়িক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং বাণিজ্য প্রসার বিষয়ক আলোচনা করা হবে।