আতঙ্কে উধাও উখিয়ার ইয়াবা ব্যবসায়ীরা

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

উখিয়ার উপকূলীয় এলাকা রূপপতি মেরিনড্রাইভের একটি নির্জন স্থানে বৃহস্পতিবার (১৫ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে ইয়াবার চালান লেনদেন নিয়ে ইয়াবা কারবারী দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, পরে গুলি বিনিময়ের ঘটনায় দুইজন শীর্ষ ইয়াবা কারবারী নিহত হওয়ার ঘটনায় পালংখালী, থাইংখালী, ধামনখালী, বটতলী, রহমতেরবিল, বালুখালী, কুতুপালং, সোনারপাড়া ও হিজোলীয়া এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করা গেছে।

অনেকেই হাস্যরশিকতা করে বলেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ধরপাকড় আতংকে চিহ্নিত ও এলাকায় অবৈধ ইয়াবা বেপারী হিসাবে পরিচিত ছোট বড় ইয়াবা কারবারীরা গ্রাম ছেড়ে উধাও হয়ে গেছে।

সরেজমিন ধামনখালী এলাকা ঘুরে নিহত মোস্তাক ও মোকতারের ব্যাপারে খুটিনাটি জানতে চাইলে কেউ মুখ খুলতে নারাজ। এলাকায় সাধারণ কৃষক, দিনমজুর, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতা কর্মী ছাড়া ইয়াবার সাথে জড়িত কাউকে দেখা যায়নি।

তবে মোস্তাক ও মোকতারের বাড়িতে কিছু কিছু লোক আসা যাওয়া করতে দেখা গেছে। তারাও সাংবাদিকদের সামনে পড়ে সংকোচ বোধ করতে দেখা গেছে।

প্রায় জনমানবহীন ধামনখালী এলাকায় বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দুজন স্কুল ছাত্রের সাথে মোস্তাক ও মোকতারের ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন, তারা মূলত ইয়াবা ব্যবসায়ী। মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি গ্রাম হওয়ার সুবাধে নাফ নদী পার হয়ে তাদের নিয়ন্ত্রনে লাখ লাখ ইয়াবার চালান গুদামজাত হয়।

এসময় থাইংখালী থেকে বাড়ী ফেরার পথি মধ্যে দেখা হয়, ৫৫ বছর বয়সী এক কৃষকের সাথে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, নিহত মোস্তাক ও মোকতার একসময় চোরা কারবারীর সাথে জড়িত ছিল। মিয়ানমার থেকে চোরাই পণ্য এপারে নিয়ে আসার সময় তারা দলবল নিয়ে ওইসব মালামাল লুটপাট করত। পরে মাঝে মধ্যে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও ওই বয়োবৃদ্ধ জানান।

ফেরার পথে রহমতেরবিল এলাকায় বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী হোছন আলী (৩৫), ছালামত উল্লাহ (৩৮) নামের দুইজনের সাথে কিছুক্ষণ কথা হয়।

তারা প্রথমে হত্যাকান্ডের ব্যাপারে আলোচনা করতে অপরাগতা প্রকাশ করলেও সাংবাদিকেরা বারবার তাগিদ দিয়ে জানতে চাওয়ার কারণে বলেন, এদের কারনে গুটা পালংখালীর সার্বিক চিত্র পাল্টে গেছে। ইয়াবা জগত খ্যাত কলংকের কালিমা লেপন করে সাধারণ জনমনে আতংকের সৃষ্টি করেছে।

এ ব্যাপারে মোজাফফর মেম্বারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মোস্তাক ও মোকতার দুই ভায়ের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় কোন প্রতিক্রিয় নেই।

তিনি বলেন, যারা অবৈধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত তাদের একদিন করুন পরিনিতি হবে। তা এঘটনায় প্রমান করেছে। তবুও যদি মানুষ সৎ পথে ফিরে না আসে তা হলে করার কিছু নেই।

উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. নুরুল ইসলাম জানান, নিহত মোস্তাক ও মোকতারের মৃত্যু নিয়ে থানার এস আই আব্দুল খালেক বাদী হয়ে অস্ত্র, ডাকাতি ও মাদকদ্রব্য প্রতিরোধ আইনে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তিদের আসামী করে ৩টি মামলা রুজু করা হয়েছে।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবুল খায়ের জানান, তিনি এই থানায় অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াবা পাচার শূণ্যের কোটায় নিয়ে আসার জন্য যা কিছু প্রয়োজন পুলিশ তাই করবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আতঙ্কে উধাও উখিয়ার ইয়াবা ব্যবসায়ীরা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন