ঐতিহ্যবাহী কল্প জাহাজ ভাসা উৎসব যেন সম্প্রীতির মিলনমেলা

fec-image

কক্সবাজারের রামুর বাঁকখালী নদীতে ভাসলো ঐতিহ্যবাহী কল্প জাহাজ। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বর্ণিল এই উৎসবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করেছে। এরই মধ্যে দিয়ে পরিণত হয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলনমেলা।

বৌদ্ধদের শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারেও বাঁকখালী নদীতে জাহাজ ভাসা উৎসবের আয়োজন করেছে রামু কেন্দ্রীয় প্রবারণা ও জাহাজ ভাসা উৎসব উদযাপন পরিষদ।

বাঁকখালীর পাড়ে গিয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, এই উৎসবে রামু উপজেলার ৬টি বৌদ্ধ পল্লীতে নির্মিত ৯টি কল্প জাহাজ অংশ নেয়। বাঁশ, বেত, কাঠ, রঙিন কাগজ দিয়ে অপূর্ব কারুকাজে তৈরি জাহাজে সম্রাট অশোকের প্রতিকৃতি, ঈগল, ময়ূর, ঘোড়া, চূড়াসহ বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ছয় থেকে সাতটি নৌকায় এক করে সেই নৌকার ভেলায় বসানো হয় এক একটি জাহাজ। এসব জাহাজেই চলে শিশু-কিশোর ও যুবকদের বাঁধভাঙা আনন্দ। উৎসবে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, এটি শুধুমাত্র ধর্মীয় উৎসব নয় এটি একটি অসাম্প্রদায়িক সম্প্রতির মিলনমেলা।

অর্পণ বড়ুয়া নামে এক যুবক জানান, এই উৎসবে অসাম্প্রদায়িক চেতনার একটি বিষয় রয়েছে। এতে সকল ধর্মের মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এই মেলাকে প্রগতিশীল ও ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসীদের মিলনমেলাও বলা যেতে পারে।

জাহাজ ভাসা উৎসবে আসা লাকী নামে এক নারী জানান, এই উৎসব একটি অসাম্প্রদায়িক চেতনার বহিরপ্রকাশ। এখানে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ সবাই সম্মিলিতভাবে এই অনুষ্ঠান উপভোগ করে থাকে। এরই মাধ্যমে একটি সুন্দর বন্ধন তৈরি হয়।

সংসদ সদস্য (কক্সবাজার-৩-সদর, রামু, ঈদগাঁও) সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, অসাম্প্রদায়িক চেতনা কখনো ঐতিহ্যকে বিনষ্ট করতে পারেনা। এই জাহাজ ভাসা উৎসব তারই প্রমাণ। এই উৎসবে সকল ধর্ম-বর্ণের অংশগ্রহণ রয়েছে। নানা ধর্ম-বর্ণের হাজার হাজার মানুষের মিলনমেলায় প্রমাণিত এখানে সাম্প্রদায়িক শক্তি পরাজিত।

এই উৎসবের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। প্রবারণা পূর্ণিমার জাহাজ ভাসানো উৎসবে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের সম্প্রীতি মেলবন্ধন দেখে এই কথার সত্যতা ফুটে উঠেছে। এই আয়োজন বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের হলেও এই উৎসব যেন সবার। এরই মাধ্যমে একটি অসাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি তৈরি হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: বৌদ্ধ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন