কক্সবাজারে ৫ দিন টানা বর্ষণের পর নামতে শুরু করেছে বানের পানি

fec-image

টানা ৫দিনের বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার (৩০ জুলাই) সকাল থেকে প্লাবিত এলাকা হতে পানি নামতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে ফুটে উঠছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি চিত্র। বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ভেসে গেছে পুকুর ও ঘেরের মাছ। এতে দূর্গত মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই।

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের প্রথম দিন থেকে এসব দুর্গত মানুষের সহায়তায় মাঠে ছিল কক্সবাজার জেলা প্রশাসক। প্রতিদিনই পানিবন্দি মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছে শুকনো খাবার। এছাড়া মানুষকে নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে আসা এবং সব ধরণের সহায়তা করে আসছে। আর দূর্গতদের দূর্ভোগ লাঘবের জন্য ইতিমধ্যে অতিরিক্ত চাহিদাও প্রেরণ করা হয়েছে।

এদিকে, শুক্রবার (৩০ জুলাই) দিনব্যাপি কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় দূর্গত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম তদারকি এবং ত্রাণ বিতরণ করেন। এছাড়া করোনার কারণে কর্মহীনদের মাঝেও প্রধানমন্ত্রীর খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক।

শুক্রবার বিকেলে শহরের সমিতি পাড়ায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণকালে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারের ৫১টি ইউনিয়নের ৫১৮ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। কয়েকদিন পানিবন্দি আছে দুই লাখের অধিক মানুষ। এতে ৩০০ কাঁচা ঘরসহ রাস্তা, কৃষি, মৎস্য ও বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার সকাল থেকে প্লাবিত এলাকা থেকে পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। এর ফলে সব ধরণের ক্ষয়ক্ষতি চিত্র ভেসে উঠছে। এখন সব উপজেলা থেকে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, দূর্গত মানুষের কষ্ট লাঘবে সরকারি সহায়তা হিসেবে ৩০০ মেট্রিক টন চাল, ২০০০ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং নগদ ১৫ লক্ষ টাকা উপজেলাগুলোকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে ত্রাণ বিতরণ করছেন। পাশাপাশি কিছু বেসরকারি সংস্থাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসনের ত্রাণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, করোনায় কর্মহীনরা লোকলজ্জার ভয়ে যারা লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে চাননা; তারা জাতীয় হেল্পলাইন ৩৩৩ তে ফোন করলে গোপনীয়তা বজায় রেখে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। সর্বোপরি মানুষের বিপদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সরকার তথা স্থানীয় প্রশাসন তাদের পাশে আছে। বন্যা পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে স্বাস্থ্য সেবা, রাস্তাঘাট, কৃষি, মৎস্য, লবণ, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে।

আর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় করোনায় কর্মহীন ও বন্যা কবলিত মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগ। পাহাড়ে ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করা মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে এনে আশ্রয় কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। তাদের প্রতিদিন রান্না করা খাবার দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে।

খাদ্য সামগ্রী বিতরণকালে আরও বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আমিন আল পারভেজ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. জাহিদ ইকবাল, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জ্বল কর, কাউন্সিলর আকতার কামাল, কাউন্সিলর শাহেনা আক্তার পাখি ও ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিক উল্লাহ কোম্পানি। শুক্রবার দিনব্যাপী খুরুশকুল, ঝিলংজার চান্দের পাড়াসহ অন্যান্য উপজেলায়ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন