কক্সবাজার সরকারি পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ৫ ঘন্টা অবরুদ্ধ!
আবদুল্লাহ নয়ন, কক্সবাজার:
কক্সবাজার সরকারি পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে অনিয়মই নিয়মে পরিণত হয়েছে। বিশেষ মডেল স্টেটের আড়াই ঘন্টার পরীক্ষায় শিক্ষার্থীরা সাড়ে চার ঘন্টা আটকা পড়ে। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থী শ্রেণি কক্ষে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় শহরের অপরাপর স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবকদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। অভিভাবকসহ শহরের সচেতন নাগরিকেরা পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের ঘটনার সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের শাস্তি দাবী করেছে।
প্রাপ্ত তথ্যে প্রকাশ, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৭ জুন থেকে পঞ্চম শ্রেণীর একটি গণিত, ইংরেজি ও বাংলা বিষয়ে বিশেষ মডেল স্টেট হওয়ার কথা। কক্সবাজার সদর উপজেলার পঞ্চম শ্রেণীর শ্ক্ষিার্থীদের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসার গোলাম রহমান চৌধুরী ১৭-০৬-২০১৩ তারিখে উশিঅ/সদর/১৩/৩৯৬/১০০ স্মারক নম্বর মূলে সদর উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরীক্ষার রুটিন তৈরি করে প্রদান করেন। রুটিন অনুযায়ী দুপুর ২টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু কক্সবাজার সরকারি পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের নির্দেশ উপেক্ষা করে তাদের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১২টা নেওয়ার জন্য রুটির প্রচার করে এবং ২৭ জুন বৃহস্পতিবার গণিত বিষয়ের পরীক্ষা সকাল ১০টায় নেওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণি কক্ষে বসিয়ে দেয় এবং প্রশ্নপত্র প্রদান করে।
বিষয়টি প্রচার হয়ে গেলে অন্যান্য স্কুলের শিক্ষক এবং অভিভাবকেরা তা জানার জন্য পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে। বেলা ১১টায় পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে গিয়ে জানতে পারে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিচ্ছে। এবিষয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে জানতে চাইলে তারা বলেন বিষয়টি ভুল হয়ে গেছে। এদিকে দুপুর ১২টায় যথারীতি ছাত্রছাত্রীদের উত্তরপত্র লেখা শেষ হলেও প্রশ্নপত্র অন্যান্য স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হস্তগত হবে এই আশংকায় তাদেরকে বের হতে না দিয়ে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষে আটকে রাখে। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত দীর্ঘ ৫ঘন্টা শ্রেণি কক্ষে আটকে রাখার ফলে কোন কোন অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। কিন্তু প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাবে এই অজুহাতে অসুস্থ হওয়ার পরেও তাদেরকে আটকে রাখার ফলে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ হয়েছে।
এব্যাপারে কক্সবাজার শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনসটিটিউটের সুপার মিসেস কামরুন নাহারের কাছ থেকে মোবাইলে (০১৭১১-২৪১২৭১) জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সরকারি কাজে ঢাকা এসেছি। তবে বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। সরকারি নির্ধারিত সময়ের আগে পরীক্ষা নেওয়া ভুল হয়ে গেছে। এজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখিত। তবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিনা রাণী সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার জন্য দায়ী।
এব্যাপারে কক্সবাজার জেলা শিক্ষা অফিসার রিটন কুমার বড়–য়ার সাথে টেলিফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি অবশ্যই গর্হিত। উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে বেঁধে দেওয়া সময়ের আগে পরীক্ষা একটি অপরাধ। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে জানান।