কমিউনিটি ক্লিনিক জনগণের স্বাস্থ্য সেবার প্রতীক হয়ে উঠেছে

ramu pic 26.04

রামু প্রতিনিধি:

রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম বলেছেন, তৃণমূল জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবার লক্ষ্যে নিভৃত গ্রামাঞ্চলে গড়ে তোলা কমিউনিটি ক্লিনিক জনগণের স্বাস্থ্য সেবার প্রতীক হয়ে উঠেছে। সেখানে প্রসূতি মায়ের নিরাপদ প্রসবসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সেবা ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

দেশের জনগণকে একটি নির্দিষ্ট মান সম্মত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গ্রামীণ জনগণের দোরগোড়ায় একটি নির্দিষ্ট কেন্দ্র থেকেও অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্যাকেজের মাধ্যমে সমন্বিত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবা প্রদানের  লক্ষ্যে গ্রাম/ওয়ার্ড পর্যায়ে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন ও  কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে সেবা প্রদানের লক্ষ্যে প্রতিটি  কমিউনিটি ক্লিনিকে একজন করে কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আর জনগণ পাচ্ছে হাতের নাগালে স্বাস্থ্য সেবা।

রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃক আয়োজিত কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠা র্বাষিকী উপলক্ষ্যে র‌্যালি শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াজ উল আলম এসব কথা বলেন। বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে রিয়াজ উল আলম আরও বলেন, কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) দের হতাশার কোন কারণ নেই।

এটি প্রধানমন্ত্রীর অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রকল্প। তাই এখানে কর্মরতদের চাকরি সহসাই জাতীয়করণ করা হবে। এটা দ্রুত বাস্তবায়নে তিনি করণীয় সকল কিছু করার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, আগামী জুনের মধ্যে রামুর কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে সোলার প্যানেল দেয়া হবে। যেসব ক্লিনিকে পানির সমস্যা রয়েছে সেখানে গভীর নলকূপ দেয়া হবে। জরাজীর্ণ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো অবিলম্বে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হবে।

রামু উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবদুল মান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা মাস্টার ফরিদ আহমদ, রামু উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া, ডা. সাইদুল মোস্তাকিম, বেসরকারি সংস্থা পিএইচডি এর কো-অর্ডিনেটর নুরুল কবির, ফার্মাসিষ্ট সমর শর্মা, স্বাস্থ্য পরিদর্শক বিপ্লব বড়ুয়া, সিএইচসিপি রেজাউল করিম, সুদর্শন কান্তি দাশ, রোকসানা আকতার বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ কেক কেটে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর শুভ সূচনা করেন। এর আগে হাসপাতাল চত্বর থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন, সিএইচসিপি নুরুল আমিন ও পিংকী দাশ। শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন, সিএইচসিপি এএসএম জাফর আলম।

সভায় লিখিত প্রতিবেদনে সিএইচসিপি এসোসিয়েশন নেতৃবৃন্দ জানান, দেশের পল্লী এলাকার জনগণকে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সুবিধার্থে ও প্রাথমিক সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী  শেখ হাসিনা সরকার গ্রামীণ পর্যায়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্র তথা কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়। দেশের শহর এলাকায় সরকারি বেসরকারি পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য কেন্দ্র নির্মিত হওয়ার পর ১৯৯৮ সালের শেষের দিকে সরকার পল্লী এলাকায় কম বেশি ৬হাজার জনগোষ্ঠীর জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয়।

সেই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ২০০১ সালের মধ্যে ১০ হাজার ৭২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ এবং ৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করতে সক্ষম হয়। কিন্তু মাঝখানে বিএনপি সরকারে এসে কমিউনিটি ক্লিনিক গুলো বন্ধ করে জনগণের স্বাস্থ্য সেবার পথ রুখে দেয়।আবার ২০০৯ সালে বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক পুনরায় চালু করে। বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক চালু রয়েছে।

এতে আরও জানানো হয়, রামুতে রয়েছে ২৩টি কমিউনিটি ক্লিনিক। উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে আরও চারটি। পল্লী এলাকার জনগণকে বিশেষত দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে একটি কেন্দ্র থেকে সমন্বিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা।

এ উদ্দ্যেশ্য অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৮ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকে যাত্রা শুরু হলেও আজ থেকে ১৭ বছর পূর্বে ২০০০ সালে ২৬শে এপ্রিল দেশের প্রথম কমিউনিটি ক্লিনিক গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতি ইউনিয়নের গিমাডাঙ্গা গ্রামে তৎকালীন ও বর্তমান সরকার প্রধান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গিমাডাঙ্গা কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্বোধন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় পর্যায়ক্রমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু হয় ও বর্তমানে অব্যাহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন