ক্রোক্ষ্যং সরকারি স্কুলে এক শিক্ষকে চলছে পাঠদান
নিজস্ব প্রতিনিধি:
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার দোছড়ি ইউনিয়নের ক্রোক্ষ্যং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে একজন শিক্ষক দিয়েই চলছে পাঠদান। বিদ্যালয়ের শিশু থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ৬টি শ্রেণীতে ৩৩জন ছাত্র ও ৩১জন ছাত্রীসহ মোট ৬৪ জনকে একজন শিক্ষককেই সামলাতে হচ্ছে।
জানা যায়, দোছড়ি ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে দূর্গম ক্রোক্ষ্যংয়ে ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ক্রোক্ষ্যং প্রাথমিক বিদ্যালয়। যা চার বছর পর স্বাধীনতা পরবর্তী ১৯৭২ সালে সরকারিকরণ করা হয়।
চাক ও ত্রিপুরা সম্প্রদায় অধ্যুষিত বিদ্যালয়টিতে চারজন শিক্ষকের পদ থাকলেও বর্তমানে প্রধান শিক্ষকসহ ২জনের পদ খালি। যে ২ জন শিক্ষক থাকার কথা তার মধ্যে ফোচাঅং চাক নামে এক সহকারী শিক্ষক গত বছর জানুয়ারি থেকে রয়েছেন ডিপিএড ট্রেনিংয়ে। যার কারনে একজন শিক্ষক নিয়ে জোড়াতালির মাধ্যমে চলছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।
৫ম শ্রেণির ছাত্র মথি ত্রিপুরা ও ৪র্থ শ্রেণির ছাত্র উচাইন্দাই চাক জানায়, স্যার কম থাকায় অনেক সময় আমাদের পড়া দিয়ে অন্য ক্লাসে চলে যান। শিক্ষক না থাকায় তাদের পড়া লেখার ক্ষতি হচ্ছে বলেও তারা জানায়।
এ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ম্লাচিংহ্লা চাক বলেন, বিশেষ করে গত বছর থেকে দুইজন শিক্ষককেই শিশু থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসগুলো নিতে হচ্ছে। ক্লাস চলাকালে একটি করে ক্লাস ফাঁকা থাকে। এ জন্য একটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের পড়া দিয়ে আরেকটি ক্লাসে যেতে হয়। অনেক সময় অফিসিয়াল কাজে শিক্ষা অফিসে যেতে হয়। তারমধ্যে একজন সহকারী শিক্ষক ডিপিএড ট্রেনিংয়ে রয়েছেন।
ডিপিএড ট্রেনিংয়ে থাকা সহকারী শিক্ষক ফোছাঅং চাক জানান, চারটি পদের মধ্যে স্কুলে প্রধান শিক্ষকসহ দুটি পদ খালি রয়েছে। বর্তমানে আমি ডিপিএড ট্রেনিংয়ে আছি যা আগামী জুন মাসে শেষ হবে। এই অবস্থায় স্কুলে নতুন শিক্ষক নিয়োগদান জরুরী হয়ে পড়েছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ক্যাহ্লাচিং চাক বলেন, জেলা পরিষদ ও শিক্ষা অফিসে বার বার আবেদনের পরও শূণ্য পদগুলো পূরণ করা হচ্ছে না। শিক্ষকের ঘাটতি থাকায় শিক্ষার্থীদের পড়া লেখার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
স্কুলের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর অভিভাবক ক্যাছিং মং চাক ও অভিরাম ত্রিপুরা অভিযোগে জানান, বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক সংকট থাকলেও শিক্ষা অফিস কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না। যার কারনে ছেলে মেয়েরা এই স্কুল থেকে বেশি কিছু শিক্ষা অর্জন করা সম্ভব নয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, শিক্ষক সংকটের বিষয়টি ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ জানেন। আশা করছি আগামী মাসের মধ্যে শিক্ষক সংকট বিষয়টি সমাধান হবে।