খাগড়াছড়িতে শারদীয় দুর্গোৎসবের সকল আয়োজন সম্পন্ন : রাত পোহালেই উৎসবের শুরু

durga-puja1-300x180

মুজিবুর রহমান ভুইয়া :

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব পালনের জন্য খাগড়াছড়ির প্রায় সবগুলো পূজামন্ডপে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। পূজা অনুষ্ঠানের সকল আয়োজন শেষ করেছে কর্তৃপক্ষ। রাত পোহালেই পূজা-অর্চনা আর ষষ্ঠী পুজার মধ্য দিয়ে মন্ডপগুলোতে উৎসবের শুরু হবে। মন্ডপগুলোতে শোভা পাচ্ছে শিল্পীর হাতে গড়া প্রতিমা। পূজা মন্ডপের আশপাশে সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ শেষ করেছে স্থানীয় পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ।

খাগড়াছড়ি জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য পার্বত্যনিউজকে বলেন, এ বছর খাগড়াছড়ির ৮টি উপজেলায় ৪৫টি পূজা-মন্ডপে স্বাড়ম্বরে দুর্গোৎসব পালিত হবে। সরকারিভাবে প্রদত্ত্ অনুদানের সাথে নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ দিয়ে প্রতিমা তৈরি করে উৎসবের আয়োজন করেছেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। তার দেয়া হিসেব মতে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় ১৪টি, মাটিরাঙ্গা উপজেলায় ৮টি, পানছড়ি উপজেলায় ৮টি, দীঘিনালা উপজেলায় ৯টি, মানিকছড়ি উপজেলায় ২টি, রামগড় উপজেলায় ২টি, লক্ষীছড়ি উপজেলায় ১টি, মহালছড়ি উপজেলায় ২টি মন্ডপে শারদীয় দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।

এদিকে সনাতন ধর্মের হিন্দু ও ত্রিপুরাদের প্রধান সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপুজা আনন্দঘন ও সুষ্ঠু শান্তিপূর্ন পরিবেশে উদযাপনের প্রস্তুতি হিসেবে গত ১৯ সেপ্টেম্বর শনিবার খাগড়াছড়ি পুলিশ লাইন্সে আইন শৃংখলা বিষয়ক বিশেষ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ সুপার শেখ মো: মিজানুর রহমান সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় জানানো হয়েছে, এবার খাগড়াছড়িতে ১টি ঘট পুজাসহ মোট ৪৫টি পুজা মন্ডপে শারদীয় দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, পুজা শান্তিপূর্ন পরিবেশে উদযাপনে তিন স্তরের নিরাপত্তা বলয় থাকবে। মোতায়েন থাকবে ২৪টি স্টাইকিং ফোর্সসহ ১৩শ ৪৬ জন পুলিশ, আনসার ও ভিডিপি সদস্য।

গতকাল খাগড়াছড়ির বিভিন্ন উপজেলায় সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শেষ বারের মতো শিল্পীর তুলিতে শাড়ি পরিহিত দুর্গার চেহারার সৌন্দর্য সৃষ্টি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে সকল মন্ডপে পুজা উদযাপনে সকল প্রস্তুতি শেষ করে এনছে পুজা উদযাপন কমিটি। এবছর খাগড়াছড়িতে সর্বনিম্ন ১১ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকার প্রতিমা তৈরি করা হয়েছে বলে বিভিন্ন মন্ডপ সুত্রে জানা গেছে।

খাগড়াছড়ি জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক তরুন কুমার ভট্টাচার্য্য পার্বত্যনিউজকে বলেন, এবছর  শারদীয় দুর্গোৎসব পালনে সরকারের পক্ষ থেকে ২৩ মেট্রিক টন খাদ্য-শষ্য বরাদ্ধ এসেছে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয় থেকে। অন্যদিকে বাংলাদেশ হিন্দু কল্যান ট্রাস্ট থেকে নগদ এক লাখ টাকা অনুদান পাওয়া গেছে। ইতিমধ্যে বরাদ্ধকৃত খাদ্য-শষ্য উপজেলা পর্যায়ের পুজা উদযাপন কমিটিকে প্রদান করা হয়েছে। এছাাও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী ৪৫ মেট্রিক টন খাদ্য-শষ্য প্রদানের প্রতিশ্রুতি দিলেও তা এখনও পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি।

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার শেখ মো. মিজানুর রহমান জানান, খাগড়াছড়ির সবগুলো পূজা মন্ডপে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। যে কোনো ধরনের নাশকতা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশের বিশেষ টিম ব্যবস্থা নিতে সার্বক্ষণিক তৎপর থাকবে। শান্তিপূর্ণভাবে উৎসব পালনে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।

উল্লেখ্য হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান সামাজিক ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব ১০ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে দেবী দর্গার বিসর্জনের মধ্য দিয়ে ১৪ অক্টোবর শেষ হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন