খাগড়াছড়ির কমলছড়িতে গৃহবধুর লাশ উদ্ধার : ধর্ষণের পর হত্যা অভিযোগ হিল উইমেন্স ফেডারেশনের
আল-মামুন,খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি :
খাগড়াছড়ি জেলা সদরের কমলছড়ি এলাকা থেকে সবিতা চাকমা (৩২) নামে এক উপজাতীয় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকেলে কে বা কারা তাকে হত্যা করে বাড়ীর পাশের সীম ক্ষেতে লাশ ফেলে রেখে যায়। স্থানীয়রা লাশ দেখে পুলিশে খবর দিলে শনিবার রাতে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
জানা যায়,সবিতা চাকমার স্বামী দেব রতন চাকমা প্রতিদিনের মত কাজে সারা দিন বাড়ির বাহিরে ছিল। দুপুরে পরে খানা খেতে এসে সবিতাকে না দেখে খোজাখুজির এক পর্যায়ে বাড়ীর পাশে তার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ও স্থানীয় অনেকের ধারণা পারিবারিক কলহের জের ধরে এ হত্যাকান্ড ঘটে থাকতে পারে। তবে এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক হয়নি।
খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, শনিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সুপন চাকমার সংবাদে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে একটি শিম ক্ষেতে থেকে সবিতা চাকমার লাশ উদ্বার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে। তবে এটি পারিবারীক কলহের জের ধরে খুন না শত্রুতার জের ধরে হত্যাকান্ড তা এখনো স্পট নয়।
হিল উইমেন্স ফেডারেশনের প্রতিবাদ
এদিকে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান ও সাধারণ সম্পাদক রীনা দেওয়ান ১৬ ফেব্রুয়ারী রবিবার সংবাদ মাধ্যমে দেয়া এক বিবৃতিতে গতকাল শনিবার খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার কমলছড়িতে দেব রতন চাকমার স্ত্রী সবিতা চাকমাকে(৩০) ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে দাবী করে এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, গতকাল শনিবার সকালে নিজ বাড়ির পার্শ্ববর্তী কমলছড়ি ঘাটপাড় এলাকায় পালিত গরুর জন্য ঘাস আনতে গেলে দুর্বত্তরা সবিতা চাকমাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে বিবস্ত্র অবস্থায় ফেলে রেখে যায়। বিকেল ৩টার দিকে গ্রামবাসীরা তার লাশ পড়ে থাকতে দেখে খাগড়াছড়ি সদর থানা পুলিশকে খবর দেয়। সন্ধ্যায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এলাকাবাসীর বরাত দিয়ে অভিযোগ করে বলেন, যেখানে সবিতা চাকমা গরুর জন্য ঘাস কাটছিলেন তার পার্শ্ববর্তী চেঙ্গী নদী থেকে বালু বহনকারী একটি ট্রাক্টর নষ্ট হওয়ার উছিলায় সেখানে থামায়। এ সময় একা পেয়ে ঐ ট্রাক্টরে থাকা চালক, হেলপার ও শ্রমিকরা সবিতা চাকমাকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। বিবৃতিতে তারা বলেন, দিন-দুপুরে এভাবে একজন অসহায় নারীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা খুবই উদ্বেগজনক। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি না হওয়ার কারণে এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটেই চলেছে।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় অবিলম্বে সবিতা চাকমাকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করে গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও নারীদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানান।
বিবৃতিতে তারা একই দিন(শনিবার) বিকেলে গুইমারা থেকে বাসে করে ঠাকুরছড়ায় নিজ বাড়িতে আসার পথে এক পাহাড়ি কিশোরীর শ্লীলতাহানির ঘটনারও তীব্র নিন্দা জানান। এ ঘটনায় ভিকটিম কিশোরী রাতে খাগড়াছড়ি সদর থানায় অভিযোগ দিতে গেলে পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ না করে ‘মীমাংসার’ নামে অভিযুক্তকে রক্ষা করেছে অভিযোগ করে নেতৃদ্বয় এ নিয়ে পুলিশের রহস্যজনক ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করেন।