ঘাগড়ায় ঘুষসহ হাতেনাতে আটক হলেও বনপ্রহরীকে ছেড়ে দিলেন স্টেশন কর্মকর্তা

ahtok1-300x198

আলমগীর মানিক,রাঙামাটি:
কাউখালীর ঘাগড়ায় প্রকাশ্য উৎকোচ আদায়কালে এক বনপ্রহরীকে আটক করেছে একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় ঘাগড়া বন চেক ষ্টেশন ফাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

সংশিষ্ট সুত্র থেকে পাওয়া তথ্যে জানাগেছে, জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে রাঙামাটি থেকে প্রায় প্রতিদিনই বিভিন্ন যানবাহনে করে স্থানীয় কাঠের তৈরি ফার্নিচার জেলার বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। রাঙ্গামাটি থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত এসব ফার্নিচার নেয়ার সময় সরকারী দপ্তর থেকে অনুমতি থাকার পরও পথে পথে বিভিন্ন স্থানে বনবিভাগের লোকদেরকে উৎকোচ দিতে হয়। অন্যথায় কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে বিভিন্নভাবে হয়রানীর শিকার হতে হয় সংশ্লিষ্টকে।

রাঙ্গামাটি দক্ষিন বনবিভাগের অধীন ঘাগড়া ফরেষ্ট চেক ষ্টেশন এলাকা অতিক্রম করার সময় বনবিভাগের লোকজনকে তাদের চাহিদা মোতাবেক উৎকোচ দিতে ব্যর্থ হলে ফার্নিচার আটকসহ বিভিন্ন মামলার হুমকি দিয়ে থাকে। আর প্রতিনিয়তই চলছে এসব কর্মকান্ড। কথিত আছে এই চেক ষ্টেশনে বিপুল পরিমান টাকা উৎকোচের মাধ্যমে বদলি হযে আসেন এখানে কর্মরতরা। তাও আবার শর্ত থাকে যে, উপর মহলকে যথাযথ খুশি করতে হবে, নাহয় কপালে “শনি” আছে।

শনিবার সন্ধ্যায় রাঙ্গামাটি থেকে এস,এ পরিবহনের একটি গাড়ীতে করে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের অনুমতি পত্র নিয়ে কাঠের তৈরি ফার্নিচার নিয়ে শহরের বাইরে যাবার সময় একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা’র লোকজন যাত্রীবেশে ঐ গাড়ীতে করে ঘাগড়ায় আসে। ঘাগড়া চেক ষ্টেশনে আসলে দায়িত্বপ্রাপ্ত বন প্রহরী আওলাদ হোসেন উক্ত ফার্নিচার বাবদ অতিরিক্ত টাকা দাবী করেন।

ফার্নিচারের মালিক বনপ্রহরীর চাহিদামতো টাকা পরিশোধের সাথে সাথেই সঙ্গে থাকা গোয়েন্দা সংস্থার সার্জেন্ট মোঃ জাকির হোসেন ও কর্পোরাল এমদাদ বনপ্রহরীকে হাতে নাতে আটক করে পার্শ্ববর্তী আনসার চেকপোষ্টে নিয়ে যায়। এসময় তারা ঘটনাস্থল ঘাগড়া ষ্টেশনে কর্মরত বনবিভাগের অফিসার মোর্শেদুল আলমকে বিষয়টি অবহিত করেন।পরে ষ্টেশন কর্মকর্তা কেএম মোর্শেদুল আলম ঘটনাস্থলে এসে উৎকোচের টাকা ফেরত দিতে বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের কাছে আওলাদ হোসেনকে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে আটককৃতকে ছেড়ে দেয়।

এ ব্যাপারে ঘাগড়া ফরেষ্ট ষ্টেশন কর্মকর্তা কেএম মোর্শেদুল আলম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,সামান্য একটু ভূল বুঝাবুঝি হয়েছে তবে যে টাকা নেয়া হয়েছে তা সাথে সাথেই ফেরত দেয়া হয়েছে। তিনি জানান, কয়েকদিন আগে অনুমতিবিহীন ফার্নিচার আটকে দেয়ায় বনবিভাগের সুনাম ক্ষুন্ন করতে এ অপকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে গোয়েন্দা বিভাগের লোকজন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন