চকরিয়ার উত্তর মানিকপুরে বসেছে জাফর বৈদ্যের প্রতারণার হাট
চকরিয়া প্রতিনিধি:
চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের উত্তর মানিকপুর আশ্রয়ন প্রকল্প সংলগ্ন নতুন পাহাড় এলাকায় এবার বসেছে ভন্ড বৈদ্যের প্রতারণার হাট। জাফর আলম নামে এক ভন্ড বৈদ্য প্রতিদিন প্রতারণার মাধ্যমে ঝারফোক-তাবিজ-টোনা দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। গত কয়েক বছর ধরে চালিয়ে আসছে এসব বৈদ্যালি প্রতারণ। স্থানীয় জনতা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা নুরুন্নবী, হামিদ হোছাইন, হাবিবুল্লাহ, মো. রাসেল, কবির আহমদ, সালাহউদ্দিন, আলি আহমদ, মুসলেহ উদ্দিন, নজরুল ইসলামসহ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এক সময়ের কুলি শ্রমিক অক্ষরজ্ঞানহীন জাফর আলম নিজেকে স্বপ্নেপ্রাপ্ত বড় পীর-বৈদ্য পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন সোর্স মারফতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত লোকজনের কাছ থেকে সর্বরোগের ওষুধ দেওয়ার নামে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
ভন্ড বৈদ্য জাফর আলমের আবির্ভাব ঘটার পর থেকে তার কাছে গিয়ে প্রতিনিয়তই প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এলাকার কতিপয় প্রভাবশালীদের ছাত্র-ছায়ায় এবং নাম ভাঙ্গিয়ে বৈদ্যালির নামে চালাচ্ছে এসব অপকর্ম। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান ধরেছে। প্রতারক ও ভন্ড বৈদ্য জাফর আলম পবিত্র কোরআন শরীফকে অজুবিহীন ও অপবিত্র অবস্থায় হাতে ধরে নানাভাবে অবমাননা করে চলছে।
তার বিরুদ্ধে রয়েছে তার কাছে আসা যুবতী নারীদের ঝাড়পোকের নামে গোপানাঙ্গে হাত দেয়াসহ শ্লীলতাহানীর অভিযোগ। অভিযোগ উঠেছে, ভন্ড জাফর বৈদ্য কোরআন শরীফের পৃষ্টা ও বিভিন্ন মৌলভীদের কাছ থেকে কাগজে আরবি লিখে নিয়ে তা হাজার হাজার কপি ফটোস্ট্যাট করে তাবিজের নামে বিপুল অর্থে বিক্রি করছে। সাথে দেওয়া হচ্ছে পানি পড়া।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান, গত কয়েক বছর পূর্বে উপজেলার হারবাং ইউনিয়ন ৩ জন ভন্ড বৈদ্যকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে। এর পর থেকে ভন্ড বৈদ্যরা পালিয়ে যায়। বর্তমানে উত্তর মানিকপুর নতুন পাহাড় এলাকায় প্রশাসন অভিযান চালিয়ে ভন্ড বৈদ্য জাফরের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে জাফর ও তার সহযোগি নুরুল আলম নুরুকে গ্রেপ্তার করলে সাধারণ মানুষ প্রতারণা থেকে পরিত্রাণ পাবে।
স্থানীয় সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ড এমইউপি জাহিদুল ইসলাম সিকদার বলেন, জাফর আলম বৈদ্য দীর্ঘদিন ধরে উত্তর মানিকপুর নতুন পাহাড় এলাকায় বৈদ্যালির নামে প্রতারণার হাট বসিয়েছে। অনেক মানুষ তার কাছে বৈদ্যালি সেবা নিতে এসে নি:স্ব হয়ে বাড়ি ফিরছে। প্রতি রোগির কাছ থেকে ৫শ, ১ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হজার টাকা পযর্ন্ত। বিশেষ করে সাপ্তাহের প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবারে বেশি রোগি আসে। বিভিন্ন স্থানে তার দেয়া অনেক ধরণের সোর্স রয়েছে। সেসব সোর্স দিয়ে ভন্ডামীর মাধ্যমে বিপুল আর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।
ইউপি সদস্য জাহিদ সিকদার আরো বলেন, ভন্ড বৈদ্য জাফরকে ইউপি চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম পরিষদে ডেকে নিয়েছিল। কিন্তু বৈদ্যালির বিষয়ে কোন সদোত্তর দিতে পারেননি।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, ভন্ড বৈদ্য জাফর আলমের বিষয়ে মৌখিকভাবে অবহিত হয়েছি। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে প্রয়োজনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে জানান তিনি।