আরাকান আর্মির নেতা ডা. রেনিন সোয়ে আটক
স্টাফ রিপোর্টার:
দীর্ঘদিন পুলিশের চোখ ফাাঁকি দিয়ে চলা মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র গ্রুপের নেতা ডা. রেনিন সোয়ে অবশেষে আটক হলো। মঙ্গলবার মধ্যরাতে রাজস্থলী উপজেলার ইসলামপুর আদর্শ নতুন পাড়া এলাকা থেকে আরাকান আর্মির আলোচিত নেতা ডা: রেনিন সো’ কে আটক করেছে যৌথবাহিনী। গত একমাস ধরে হণ্য হয়ে খোঁজা আরাকান আর্মির এই নেতাকে শেষ পর্যন্ত আটক করতে সক্ষম বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি’র সদস্যরা।
বিজিবি’র মেজর শাব্বির আহমেদের নেতৃত্বে একটি টিম মঙ্গলবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে অভিযান চালিয়ে রাজস্থলীর ইসলামপুরের একটি নির্মাণাধীন মসজিদ থেকে তাকে আটক করে। পরে থাকে রাজস্থলী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। রাজস্থলী থানার ওসি ওহিদুল্লাহ সরকার এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
আটকের সময় তার কাছ থেকে ৫০ টি ৫০০ টাকার নোটের ভারতীয় রুপি, বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের পার্সপোট, একটি ল্যাপটপ কম্পিউটার, ২ টি মোবাইল সেট, তিনটি ক্রেডিট কার্ড আর একটি ব্যাগে ব্যবহৃত পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে। ডা. রেনিন সোয়ে রাজস্থলী থানায় পুলিশের দায়ের করা দুইটি মামলার এজহারভুক্ত আসামী।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট বান্দরবানের থানচির তিন্দু ও আন্দারমানিক এলাকায় আরাকান আর্মির জন্য ক্রয়কৃত দুই দফায় ১৩টি ঘোড়া আটক করে বিজিবি। এ ঘটনার জের ধরে ২৭ আগস্ট সকালে বড় মদকের দোলিয়ান পাড়া বিজিবি ক্যাম্পে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি (এ, এ) সদস্যরা হামলা চালায়। এতে জাকির হোসেন ও আহম্মদ গনি আহত হন। বিজিবির সদস্যরাও পাল্টা গুলি এবং মর্টারশেল ছোঁড়েন। বিমান বাহিনীর ৫টি হেলিকপ্টার ও জঙ্গী বিমান এ হামলায় ব্যবহৃত হয়। পরে সেনাবাহিনী ও বিজিবির তীব্র প্রতিরোধের মুখে সন্ত্রাসীরা পিছু হটে।
এ ঘটনার পর আলোচনায় আসেন ডা. রেনিন সোয়ে। জানা যায়, রেনিন সোয়ে আরাকান আর্মির জন্য এই ঘোড়াগুলো ক্রয় করে বান্দরবানে পাঠিয়েছিলেন। একই দিন অর্থাৎ ২৭ আগস্ট গোপন সূত্রে খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর একটি দল রাজস্থলীর কলেজ পাড়া এলাকার স্থানীয় রেনিন সোয়ের বাসায় অভিযান চালায়। এসময় তাকে আটক করা না গেলেও মিয়ানমারের নাগরিক ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সহযোগী অং ইউ ইয়াং রাখাইনকে আটক করে সেনাবাহিনীর দলটি। বাড়ীতে তল্লাশী চালিয়ে তিনটি আরাকান আর্মির পোশাক, পোশাক তৈরির ৩০ গজ কাপড়, তিনটি ল্যাপটপ, মোডেম, দুইটি ডিজিটাল ক্যামেরা, একটি হেন্ডিক্যাম, দুইটি ঘোড়া, তিনটি মটরসাইকেল, মোবাইল ও পার্সপোট পাওয়া যায়।
রেনিন সুয়ের বাড়িটি চিহ্নিত হবার পর সেখানে অভিযান পরিচালনার মাত্র কয়েকঘন্টা আগেই রেনিন সু সেখান থেকে সটকে পড়েছিলেন। এরপর তিনি প্রথমে মায়ানমার ও পরে ভারতে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ভারতের দিল্লীতেই তিনি থাকতেন এবং সেখান থেকেই তিনি তার বাহিনীর কর্মকান্ড পরিচালনার পাশাপাশি বাংলাদেশের সর্বশেষ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতেন। আটকের পর তার কাছ থেকে ৪১ হাজার ভারতীয় রুপি, নেদারল্যান্ডের পার্সপোট, একটি ল্যাপটপ কম্পিউটার, মোবাইল সেট আর একটি ব্যাগে ব্যবহৃত পোশাক উদ্ধার করা হয়েছে।