দখলদারদের কবলে কক্সবাজারের ফুটপাত, ব্যবস্থা নেই প্রশাসনের

dsc_0026-copy

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন সড়কের ফুটপাতগুলো চলে যাচ্ছে দখলবাজদের হাতে। দিন দিন বাড়ছে এ দখল পক্রিয়া। এতে যানজট সৃষ্টি’র পাশাপাশি পথচারীদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। আর এ অব্যবস্থাপনা জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করছেন সচেতন মহল। প্রয়োজন স্থায়ী সমাধানের। এদিকে ফুটপাত দখলবাজরা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের নির্দেশে’ই তারা ফুটপাতে অবস্থান করছেন। অন্যদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন বার বার উচ্ছেদ করা হলেও তারা পুন:রায় অবস্থান করছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের শহীদ স্মরণী’র মোড় হতে ভোলা বাবুর পেট্রোল পাম্প পর্যন্ত ফল বিক্রেতা ও গরম কাপড় বিক্রেতারা দখল করে রেখেছে ফুটপাত। এছাড়া ওই জায়গা থেকে বাস টার্মিনাল পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সম্মুখের ফুটপাতগুলো দখল হয়ে আছে ওই প্রতিষ্ঠানের বাড়তি স্থাপনায়। সবচেয়ে বেশি ফুটপাত দখলের দৃশ্য দেখা যায়, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের দ্বিতীয় গেইট, হাসপাতাল সড়ক, খানেকা মসজিদ সড়ক ও কেন্দ্রিয় জামে মসজিদ সড়কটি। ওই সড়কে’র রাস্তার দুই পাশের ফুটপাত দখল করে রীতিমত নিয়মিত বাজার বসবে। এ দখল থেকে বাদ যাচ্ছেনা উপসড়ক পর্যন্ত। যেখানে বসছে ছোট-খাট বিক্রয় কেন্দ্র।

অবৈধভাবে এভাবে গণহারে ফুটপাত দখল করায় পর্যটন নগরীর বড় ক্ষতি হচ্ছে। এতে  স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি হয়রানির শিকার হচ্ছে দুর-দুরান্ত থেকে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা। এমনটাই বলছেন, ভোক্তভূগিরা।

ফুটপাত দখল করা ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, অনেকে নিজ ইচ্ছায় ফুটপাত দখল করে বসেছে। আবার অনেকে প্রভাবশালী’র ইন্দনে ফুটপাত দখল করেবে। আবার কয়েকজন ব্যবসায়ী প্রভাবশালীদের চাঁদাবাজদের মাসিক বা দৈনিক টাকা দিয়ে অবস্থান করছে।

লালদিঘীর পাড়স্থ জেলা আওয়ামী লীগ অফিসের সম্মুখের শাহাদাত নামে এক কাপড় বিক্রেতা জানান, কে টাকা তুলে তার নাম বলতে পারবেন না। তবে দাঁড়ি ওয়ালা এক ব্যক্তি এসে প্রতি মাসে টাকা তুলে নিয়ে যায়। অনেক সময় প্রতি সপ্তাহে।

এছাড়া পাবলিক লাইব্রেরী সংলগ্ন ফুটপাত ব্যবসায়ীদের মধ্যে মান্নান নামে একজন জানান, অবৈধভাবে ফুটপাতের বিক্রেতাদেরও একটি সমিতি রয়েছে। আর তাদেরকে বসতে দিয়েছেন প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতা।

মৌল্লা নামে আরেক কাপড় বিক্রেতা জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে লালদিঘীর পাড়ে ফুটপাত দখল করে কাপড় বিক্রি করে। তিনি কাউকে টাকা দেননা এবং কেউ তাদেরকে উঠাতেও পারবেনা।

এ ব্যাপারে এডভোটেক লিয়াকত আলী বলেন, পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সড়কগুলো এমনিতে ছোট তারমধ্যে ফুটপাত দখল। এটি খুবই অনিয়ম। এতে ভোগান্তি চরমে। এ ফুটপাত দখলের বিষয়টি প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছুই না। তাদের যথেষ্ঠ অবহেলা রয়েছে ফুটপাত দখলমুক্ত করণে। প্রশাসন চাইলে পুরো শহরের ফুটপাতগুলো দখলমুক্ত হয়। আর সুন্দর ও পরিপাটি হয় পর্যটন নগরী।

কলেজ শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, এ গরীব ব্যবসায়ীদের উচ্ছেদের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে দেখতে অমানবিক মনেহলেও এটিই করতে হবে। নয়ত পর্যটন নগরীর বড় ধরনের ক্ষতি হবে।

এ ব্যাপারে কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, দখলবাজদের উচ্ছেদ করলে তারা পুন:রায় অবস্থান করে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা ছাড়া সবসময় উচ্ছেদ করা যায়না। প্রভাবশালীদের ইন্দনে দখলের ব্যাপারে তিনি কিছুই বলেননি।

এ ব্যাপারে জানতে কক্সবাজার পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন করলেও পাওয়া যায়নি। পরে প্রশাসনিক কর্মকর্তা খোরশেদ আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন আগেও কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আশ-পাশ এলাকার সড়কের ফুটপাত থেকে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হয়েছিল। কিন্তু পুনরায় এ দখলবাজরা বসেছে। এছাড়া ফুটপাত দখল মুক্ত করতে পৌরসভা বরাবরই সক্রিয়।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন