নাফ নদী থেকে ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে বিজিপি

বিজিপি

টেকনাফ প্রতিনিধি:

নাফ নদীতে মাছ শিকারের সময় ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। সোমবার দুপুরে ২ টি নৌকাসহ নাফনদী থেকে তাদেরকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদের মধ্যে দুই জন নাফনদী থেকে লাফ দিয়ে সাঁতরিয়ে বাংলাদেশে চলে আসে। আটক ছয়জন এখনও বিজিপির জিম্মায় রয়েছে। তাদেরকে ফেরত পেতে ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে এবং আটক জেলেদের মংডু বিজিপি ক্যাম্পে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ফেরত আসা জেলেরা।

এ ঘটনায় নৌকার মালিক মো. জাফর আলম ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের ফিরিয়ে আনতে বিজিবির সহায়তা চেয়ে সোমবার দুপুরে টেকনাফ সদর বিজিবি ক্যাম্পে লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। সদর বিওপি ফাঁড়ির কোম্পানি কমান্ডার শামসুল ইসলাম জানিয়েছেন বিজিবির পক্ষ থেকে মিয়ানমার বিজিপির সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।

ফিরে আসা আবদুল আমিন ও নুর মোহাম্মদ জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাফ নদীর মাঝামাঝি স্থানে হোসেনের মালিকানাধীন ২টি নৌকার ছয় জেলে বিহিঙ্গি জাল ফেলে মাছ শিকার করছিলেন। এর কিছুক্ষণ পর স্পিড বোট যোগে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির সদস্যরা এসে অস্ত্রের মুখে তাদেরকে ধরে নিয়ে যায়। তাদেরকে মংডু বিজিবি ক্যাম্পে আটকে রাখা হয় বলেও জানায় জেলেরা। আটক জেলেরা হলো-টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়ার মো: হোসেন (৩০), মো: করিম (২৮), আকতার ফারুক((১৬), সাদেক হোসেন (১৮), মো: ফারুক (১৭), মো: সাদেক (১৫)।

এ দিকে স্থানীয়রা জানিয়েছে, বাংলাদেশি জেলেরা মাসিক টোকেনের বিনিময়ে মিয়ানমার জলসীমায় মাছ শিকার করে থাকে। এতে প্রতিটি জালের পেছনে মাসিক এক হাজার টাকা করে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে প্রদান করতে হয়। কোন জেলে এর হেরফের করলে তাদেরকে ধরে নিয়ে টাকা আদায় ও নির্যাতন করে মিয়ানমার বাহিনী। দীর্ঘকাল ধরে নাফ নদীতে এ প্রথা চলে আসছে বলেও জানিয়েছে জেলে সম্প্রদায়। মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদীর গভীরতা বেশি হওয়ায় মাছও বেশি ধরা পড়ে। ফলে টেকনাফের জেলেরা এই টোকেনের বিনিময়ে মাছ শিকার করে থাকে।

আটকের বিষয়টি টেকনাফ-২ বিজিবির উপ-অধিনায়ক আবু রাসেল ছিদ্দিকী জানান, জেলেদের ডিঙ্গি জাল নিয়ে মাছ শিকার করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবু জেলেরা নদীতে ডিঙ্গি জাল মাছ শিকারের ফলে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। তিনি জেলে আটকের বিষয়টি শুনেছেন, খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন