পাকিস্তানের হৃদয় ভেঙে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

fec-image

গ্রুপ পর্বে বিদায়ের শঙ্কা থেকে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ফাইনালে পা রেখেছিল পাকিস্তান। অল্প পুঁজি নিয়েও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের মাঝামাঝি সময়ে ফাইট করেছিলেন তারা। ঠিক পঞ্চাশ ওভারের ‘৯২ আসরের মতো। প্রতিপক্ষ হিসেবে ইংল্যান্ডকে পেয়ে যাওয়ায় ৩০ বছর আগের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি দেখাতে চেয়েছিলেন বাবর আজমরা। কিন্তু ইতিহাস ফিরে আসেনি! বরং ৫ উইকেটের সহজ জয়ে পাকিস্তানের হৃদয় ভেঙে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইংল্যান্ড। এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতল ইংলিশরা, আগেরবার জিতেছিল ২০১০ সালে।

ইংলিশদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানের ইনিংসে শাদাব খান ছাড়া কেউই টি-টোয়েন্টিসুলভ খেলতে পারেননি। ফলে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৭ রান করে বাবর আজম বাহিনী। জবাবে ইংল্যান্ডও একটা পর্যায়ে ভীষণ চাপে পড়েছিল। কিন্তু বেন স্টোকসের বুদ্ধিদীপ্ত ইনিংস ও শেষ দিকে মঈন আলির ঝড়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইংল্যান্ড।

রোববার (১৩ নভেম্বর) মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই বিদায় নেন আলেক্স হেলস। শাহিন শাহ আফ্রিদির ওভারের শেষ বলে স্টাম্প ভাঙে হেলসের। উইকেট হারালেও নিজের রিদম হারায়নি ইংল্যান্ড। জস বাটলার ও ফিলিপ সল্ট খেলতে থাকেন আক্রমণাত্মক ঢঙে। চতুর্থ ওভারে হারিস রউফের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সল্ট। ৮ বলে তিনি করেন ১০ রান। সল্টের পর বাটলারকেও ফেরান সেই রউফ। ১৭ বলে ২৬ রান করেন ইংলিশ ওপেনার।

ইংল্যান্ড ৩ উইকেট হারায় দলীয় ৪৫ রানে। এরপর ৩৯ রানের জুটি গড়েন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুক। ব্রুককে বিদায় করেন শাদাব খান। ২৩ বলে ২০ রান করেন ইংলিশ ব্যাটার। শেষ দিকে ঝড় তুলে মঈন আউট হন ১৩ বলে ১৯ রান করে। পাকিস্তানের হয়ে হারিস রউফ ২টি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান শাহিন আফ্রিদি, শাদাব ও ওয়াসিম।

এর আগে ছন্নছাড়া ব্যাটিংয়ে ১৩৭ রান করে পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে হাত খুলে খেলতেই পারেননি বাবররা। টি-টোয়েন্টিসুলভ খেলা শাদাব খান করেছেন ১৪ বলে ২০। ইংল্যান্ডের হয়ে বল হাতে দারুণ হিসাবি ছিলেন স্যাম কুরান ও আদিল রশিদ। ৩৪ রান দিয়ে দুজনে মিলে নিয়েছেন ৫ উইকেট।

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ২৯ রান তুলে পাকিস্তান। ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম আঘাত হানেন স্যাম কুরান। দুর্দান্ত এক ইনসুইংয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানকে ইনসাইড এজ বানিয়ে সাজঘরে পাঠান তিনি। ফেরার আগে ১৪ বলে ১৫ রান করেন পাকিস্তান ওপেনার। রিজওয়ানকে আউট করার ওভারে মাত্র ১ রান খরচ করেন কুরান। কুরান কিপটে বোলিং করলেও খরুচে ছিলেন তার সতীর্থ ক্রিস ওকস। প্রথম ৩ ওভারে ২৬ রান দিয়ে কোনো উইকেটও নিতে পারেননি তিনি। বেন স্টোকস এক ওভারে দিয়েছিলেন ৮ রান। আর পাকিস্তান পাওয়ার-প্লে শেষে করে ৩৯ রান।

অষ্টম ওভারে আদিল রশিদের হাতে বল তুলে দেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। অ্যাটাকে এসে প্রথম বলেই সাফল্যের দেখা পান রশিদ। তার শর্ট বলে লং অনে ক্যাচ তুলে দেন মোহাম্মদ হারিস। ১২ বলে কেবল ৮ রান করেন তিনি। ইংলিশ লেগ স্পিনার ওই ওভারে দেন ৫ রান। ৬ ওভার শেষে ৩৯ রান তুলেছিল পাকিস্তান। সেই চাপ সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন বাবর আজম ও শান মাসুদ মিলে। কিন্তু রশিদের ঘূর্ণিতে ১২তম ওভারে সাজঘরে ফিরতে হয় পাকিস্তান দলপতিকে। ২৮ বলে ৩২ রান করে আউট হয়েছেন বাবর। তার ইনিংসে ছিল ২টি চারের মার। ৬ বল খেলে ইফতিখার এক রানও যোগ করতে পারেননি স্কোর বোর্ডে। তাকে শিকারে পরিণত করেন বেন স্টোকস।

৪ উইকেট হারানোর পর ৪১ রান আসে মাসুদ-শাদাব খান জুটি থেকে। ১৭তম ওভারে কুরানের বলে ডিপ মিডউইকেটে লিভিংস্টোনকে ক্যাচ তুলে দেন মাসুদ। ২৮ বলে তিনি করেন ৩৮ রান। পাকিস্তানকে আশা দেখাচ্ছিলেন শাদাব। তিনিও ফিরে যান পরের ওভারে। ক্রিস জর্ডানের বলে আউট হওয়া শাদাব ১৪ বলে করেন ২০ রান। নেওয়াজকে প্যাভিলিয়নে পাঠান কুরান। ইংল্যান্ডের হয়ে কুরান ৩টি, জর্ডান ও আদিল রশিদ ২টি করে উইকেট পান।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইংল্যান্ড, ক্রিকেট, পাকিস্তান
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন