পানছড়িতে বৈসাবি ও ইউপি নির্বাচন ঘিরে খুশীর জোয়ার

VOTE PIC

স্টাফ রিপোর্টার:

বৈসাবি উৎসব ও ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে পানছড়ির সর্বত্র লেগেছে উৎসবের সাজ। প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় বাজছে বৈসাবি উৎসবের সূর আর চায়ের দোকানে জমে উঠেছে নির্বাচনী আলাপচারিতা।

চাকমা সম্প্রদায়ের ফুলবিজু, মূলবিজু ও গয্যা পয্যা চলে বৈত্র মাসের শেষের দু‘দিন ও পহেলা বৈশাখ পর্যন্ত। মারমারা পহেলা বৈশাখ থেকে সাংগ্রাই, আক্যে ও আতাদা নামের উৎসবে হয়ে উঠবে মাতোয়ারা। চৈত্র সংক্রান্তির শুরু দিন থেকে ত্রিপুরাদের হারিবসু, বিসুমা ও বিসুকাতাল অনুষ্ঠান।

আগামী ১২, ১৩ ও ১৪ এপ্রিল থেকে বৈসাবি উৎসব শুরু হওয়ার কথা। আর বৈসাবি উৎসব শেষ হওয়ার সপ্তাহ খানেক পরেই ইউপি নির্বাচন।

একদিকে ধনী-গরীব সকলের ঘরে ঘরে চলছে উৎসবের প্রস্তুতি অপরদিকে ইউপি নির্বাচনকে ঘেরে প্রার্থীরা ধনী গরীব ভেদাভেদ ভুলে একটি ভোটের আশায় যাকে যেখানে পাচ্ছেন বুকে টেনে নিচ্ছেন। এপ্রিল মাসেই বৈসাবি ও ইউপি নির্বাচন কাছাকাছি সময়ে হওয়ায় সকল সম্প্রদায়ের মাঝে বিরাজ করছে উৎসব মূখর পরিবেশ।

বিশেষ করে বৈসাবি উৎসবের আনন্দে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান আর মুসলিম যেন জাতিগত সব বিভেদ ভুলে যায়। পাহাড়ের এই উৎসব ভুলিয়ে দিয়েছে জাতিগত বিভেদ। সবাই ভুলে যায় কে পাহাড়ী বা কে বাঙ্গালী। সবাই মেতে উঠে ধর্মীয় উৎসবের অনাবিল এক আনন্দ আয়োজনে। তৈরী হয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত।

বৈসাবির বিদায় লগ্নেই ইউপি নির্বাচন। এরই মাঝে মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই শেষ। ৬ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন।

তবে দুটি উৎসব সন্নিকটে হওয়ায় বিপাকে আছে নির্বাচনী প্রার্থীরা। একদিকে বৈসাবি উৎসব পালনের আবদার অপরদিকে ভোটারদের সাথে দিনে রাতে সালাম, নমস্কার ও চায়ের দোকানে ভোটাদের সময় দেয়া ইত্যাদি নিয়ে প্রার্র্থীরা যেন দিশেহারা।

এদিকে পানছড়ি সদর বাজার থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন পাড়া মহল্লার দোকানগুলোর মালিকরা একটু বেশি ব্যস্ত সময় পার করছেন। নির্বাচনী হাওয়া শুরুর সাথেই সাথেই বেড়ে গেছে তাদের ব্যস্ততা। দোকানে দোকানে বাড়ানো হয়েছে চায়ের কেৎলি ও কাপের সংখ্যা। যেখানে দু’কেৎলি চা বিক্রি হতো সেখানে হচ্ছে ৬/৭ কেৎলি। সাথে বিস্কুট, পান, সিগারেট ও বিড়ি তো আছেই।

সব মিলিয়ে ভোটার ও ব্যবসায়ীদে যেন সু-সময়। আর প্রার্থীরাতো বিপাকে। সারাক্ষণ থাকতে হয় হাসিমুখে। একটু মুখ কালো দেখলেই সমালোচনার পাত্র হয়ে উঠে আসে ভোটারদের মুখে মুখে।

এ দ্বিমুখী উৎসব উপলক্ষ্যে পানছড়ির বিভিন্ন জায়গায় শোভা পেয়েছে নানা রংঙের ডিজিটাল ব্যানার। বৈসাবির উৎসবের শুভেচ্ছা এবং ইউপি নির্বাচনে অমুক ভাই আপনাদের দোয়াপ্রার্থী লেখা ডিজিটাল ব্যানার দিন দিন বেড়েই চলছে। এগুলো দ্বিমূখী আয়োজনকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলবে বলে মত ব্যক্ত করেন অভিজ্ঞ মহল। এই দ্বিমূখী আনন্দে যাতে ভাটা না পড়ে সেই লক্ষে নিরাপত্তায় কাজ করবে ২০ বিজিবি, পানছড়ি সাব জোন, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন