পানছড়ি উপজেলার পুজগাঙ্গে সন্ত্রাসীদের গুলীতে ইউপিডিএফ সংগঠক সমীরণ চাকমাসহ নিহত ২, অপহৃত ১

khun - Copy

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী পুজগাং এলাকায় আবারো প্রাণ হানির ঘটনা ঘটেছে।
 আজ  বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের গুলীতে ইউনইিটেড পিপলস্ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সংগঠক সমীরণ চাকমা ও জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা)  সংস্কার প্রন্থী গ্রুপের সদস্য জার্মান চাকমা  ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারিয়েছেন। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা অপর ইউপিডিএফ সদস্য শ্যামল চাকমাকে  অস্ত্রের মুখে সন্ত্রাসীরা জোর করে তুলে নিয়ে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয়রা জানান, ইউপিডিএফ পানছড়ি উপজেলা সংগঠক সমীরণ চাকমা ও জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা)  সংস্কার প্রন্থী গ্রুপের সদস্য জার্মান চাকমাসহ তিনজন পুজগাং বাজারে আসার সময় পুর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা খুব কাছ থেকে তাদের উপর গুলি চালায়।  বৃহস্পতবিার সকাল সাড়ে ৭টার দি সন্তু বাহিনীর ৭ জনের একটি সশস্ত্র গ্রুপ পুজগাঙ বাজার এলাকা থেকে সমীরণ চাকমা ও শ্যামল চাকমাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে সন্ত্রাসীরা যুগেশ্বর পাড়ার শনটিলা রাস্তায় সমীরণ চাকমাকে গুলি করে হত্যা করে ফেলে রেখে শ্যামল চাকমাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

ঘটনার সময় সমীরণ চাকমা ও শ্যামল চাকমা পুজগাঙ বাজারের পাশের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। সন্ত্রাসীরা আগে থেকে তাদের জন্য ওঁৎ পেতেছিল। একই সময় সন্ত্রাসীরা র্জামান চাকমার ওপর ব্রাশ ফায়ার করলে তিনি গুরুতর আহত হন। তার মাথায় গুলবিদ্ধ হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
 নিহত সমীরণ চাকমা যুবনাশ্ব পাড়ার শীলধন চাকমার ছেলে এবং শ্যামল চাকমা বড়কলক গ্রামের জীতেন্দ্রীয় চাকমার ছেলে। র্জামান চাকমার বাড়ি খাগড়াছড়ির শিবমন্দির এলাকার জোরমরম গ্রামে। তার পিতার নাম কৃষ্ণ রাম চাকমা। সমীরণ চাকমা পাহাড়ি ছাত্র পরষিদের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সহ সাধারণ সম্পাদক এবং পানছড়ি থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে তিনি ইউপডিএফের সাথে যুক্ত হন এবং ঘটনার আগ পর্যন্ত ইউপডিএফের পানছড়ি ইউনিটের পুজগাঙ এলাকায় সংগঠক হিসেবে র্কমরত ছিলেন।

 ইউপিডিএফ’র কেন্দ্রীয় প্রচার সেলের মুখপাত্র নিরন চাকমা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, সন্তু লারমা’র ভাড়াটিয়া খুনীরাই এইসব গুপ্ত হত্যা চালাচ্ছে। তবে সন্তু লারমা সমর্থিত জনসংহতি সমিতির পক্ষ এই অভিযোগ নাকচ করে এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিরোধ বলে দাবী করেছে।
পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, ঘটনাস্থল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দুরে। মরদেহ উদ্ধারের প্রক্রিয়া চলছে।
এই ঘটনার পর সীমান্তবর্তী ওই এলাকায় জনমনে তীব্র আতংক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেছে।

ইউপিডিএফ’র পানছড়ি উপজেলা সংগঠকের মৃত্যুর খবর জানাজানি হলে খাগড়াছড়ি ও পানছড়িতে ইউপিডিএফ বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তারা প্রতিবাদ সমাবেশ করে সন্তু লারমার শাস্তির দাবী জানায়।
উল্লেখ্য যে, চাঁদা আদায় ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে চলতি সপ্তাহের গত তিন দিনে এ নিয়ে দীঘিনালা ও পানছড়ি   দুইটি আঞ্চলিক দলের ৪ জন খুন হল।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন