পাহাড়ে লটকনের বাম্পার ফলন, আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের

fec-image

লটকন চাষে আগ্রহ দিন দিন বেড়েই চলছে পাহাড়ের চাষিদের মধ্যে। বাজারে এ ফলের ব্যাপক চাহিদা এবং দেশি ফলের প্রতি মানুষের আকর্ষণের পাশাপাশি খরচ কম ও অল্প সময়ে লাভজনক হওয়ায় বাড়ছে এই ফল চাষের আগ্রহ। বেশ কয়েকবছর আগেও এই সুস্বাদু ফল চাষে কৃষকদের তেমন কোন আগ্রহ ছিলো না। তবে ব্যাপক চাহিদা আর ভালো মুনাফা দেখে তিন-চার বছর ধরে পাহাড়ের চাষিরাও শুরু করেছেন এ ফলের চাষ। বাড়ির আশেপাশে, অনাবাদি জমিতে চাষীরা এখন এই ফলের চাষ করছে।

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ে, প্রত্যন্ত এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লটকনের পুরো গাছকে আগলে রেখেছে ফলগুলো। গাছের গুড়া থেকে শাখা-প্রশাখায়ও ফলে ফলে ছেঁয়ে গেছে। বাগানের লটকনের গাছগুলো হলুদ রঙে রঙিন হয়ে গেছে। পুরো এলাকায় এখন গাছভর্তি লটকন আর লটকন।

লটকন চাষিরা জানান, চলতি মৌসুমে এখানে লটকনের আবাদ বেশ ভালো হয়েছে। এ ছাড়া এখানকার লটকন অন্যান্য এলাকার তুলনায় অনেক মিষ্টি হওয়ায় ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ি হর্টিকালচার’র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মালেক বলেন, পাহাড়ে খুব খরচে লটকন চাষ করা যায়। লটকন চাষে বাণিজ্যিকভাবে অনেক লাভবান হওয়া যায়। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় কয়েক বছর ব্যাপক পরিমাণ চাষ হচ্ছে। পাহাড়ের লটকন অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে দ্বিগুণ সুস্বাদু ও সম্পূর্ণ ফরমালিনমুক্ত। তাই পার্বত্য অঞ্চলে লটকন ফলের চাহিদা বেশি। এখানকার লটকন অনেক মিষ্টি এবং গুণগত মান অনেক ভালো। চাষাবাদে কম খরচ, কম পরিচর্যা ও লাভজনক হওয়ায় এখানে লটকনের আবাদ বেড়েই চলছে। তিনিসহ কৃষি বিভাগ সবসময় চাষিদের পাশে থেকে পরামর্শসহ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিয়ে থাকেন।

পাহাড়ে লটকন গাছে গতবছরের মতো এবারও ভালো ফলন হয়েছে। চাষীরা প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকার লটকন বিক্রি করেছেন। এই লটকনের বাগানের টাকায় অনেকেই সংসার চালাচ্ছেন।

লটকন চাষী লিলি খীসা বলেন, এ ফলের আবাদে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। কম পরিচর্যায়ও ভালো ফলন দেয়। অনেক সময় প্রাকৃতিক অবস্থার কারণে ফসল নষ্ট হলে লোকসানও গুণতে হয়। অন্যদিকে মাত্র ২-৩টি লটকন গাছের ফল বিক্রি করেই বছরে ২০-৩০ হাজার টাকা আয় করা যায়।

জানা যায়, প্রতিদিন খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা ও শহরের আশপাশের এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ও খুচরা ক্রেতা-বিক্রেতার আগমন ঘটে এখানে। এই এলাকার লটকন সুস্বাদু হওয়ায় দেশব্যাপী ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তারা এখানকার চাষিদের কাছ থেকে লটকন কিনে ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে বিক্রি করে থাকে।চলতি মৌসুমের শুরুতে ৮০ থেকে ৯০ টাকা এবং বর্তমান ভরা মৌসুমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে লটকন বিক্রি করেছেন বলেও জানান চাষীরা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন