পাহাড় ও সমতলে সমান উন্নয়ন হচ্ছে: পার্বত্যমন্ত্রী

fec-image

পাহাড় ও সমতলে সমান উন্নয়ন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং।

রোববার (১১ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক পর্বত দিবস উপলক্ষে সচিবালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য বিষয়ক সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগমের সভাপতিত্বে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন।

মন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি বলেন, পাহাড় এখন আর পিছিয়ে পড়া কোনো জনপদ নয়। পার্বত্য অঞ্চলের নারীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে দেশের অর্থনীতির ভীত আরও সুদৃঢ় হয়েছে। তিনি বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের নারীরা সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যগত জ্ঞানের ধারক ও বাহক। পার্বত্য অঞ্চলে পরিবেশ সুরক্ষা এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীরা মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। নারীরা হলো পর্বত সম্পদের সুরক্ষাকারী ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা সেবক।

তিনি বলেন, পাহাড়ের জুম চাষে নারীদের ভূমিকা অনেক। পাহাড়ি ঝরণা থেকে পানি সংগ্রহ করে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পানির চাহিদা মেটায় তারা। পর্বতের নারীরা কৃষক, পর্বতের নারীরা ব্যবসায়ী, পর্বতের নারীরা কারিগর, উদ্যোক্তা এবং সম্প্রদায়ের নেতা হিসেবে অধিষ্ঠিত হচ্ছে। তাদেরকে ক্ষুধা, অপুষ্টি এবং দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে চালিকা শক্তিতে পরিণত হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার বৃহত্তর পার্বত্য অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বিগত সময়ে পার্বত্য অঞ্চলে সংঘটিত প্রতিটি দুর্যোগ সরকারের পক্ষ থেকে অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে সমন্বিতভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান পার্বত্য অঞ্চলের জান-মালের নিরাপত্তায় নিরলসভাবে কাজ করেছে। আমি মনে করি, এটি একটি সমন্বিত উদ্যোগ। আপনারা নিশ্চয়ই অবগত আছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তা ও সময়োচিত উদ্যোগের ফলে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি সম্পাদন করা সম্ভব হয়েছিল। ঐতিহাসিক এ শান্তি চুক্তি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ দুই যুগের সংঘাতময় পরিস্থিতির অবসান ঘটে। এর পর থেকেই পার্বত্য অঞ্চলে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। যার ফলে পার্বত্য অঞ্চলে টেকসই উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে। সেখানে সরকারি-বেসরকারি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসমূহের উন্নয়নমূলক কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়েছে।

পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সজল কান্তি বণিকের সঞ্চালনায় এসময় আরো বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নিখিল কুমার চাকমা, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সত্যেন্দ্র কুমার সরকার, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) আলেয়া আক্তার, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ রাঙামাটির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা, শরণার্থী বিষয়ক টাস্ক ফোর্সের নির্বাহী মুখ্য কর্মকর্তা কৃষ্ণ চন্দ্র চাকমা, হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল-এর নির্বাহী পরিচালক মিজ হান হান, নারী উদ্যোক্তা বিবলি চাকমা প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মোসাম্মৎ হামিদা বেগম বলেন, পাহাড়ি গর্ভবতী নারীরা তাদের পিঠে বোঝা বহন করে সন্তানকে কাঁধে নিয়ে খাড়া পাহাড়ে ওঠে যায়, আবার নারীরা মাথায় পানি নিয়ে পাহাড়ে ওঠে যাচ্ছে, আবার বিভিন্ন চিত্রে দেখি তারা জুম চাষ করছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদের উপস্থিতি রয়েছে। পাহাড়কে নারী ছাড়া এর অস্তিত্ব সম্পর্কে চিন্তা করা যায় না। সকল স্থানে নারীদের অস্তিত্ব বিদ্যমান রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পার্বত্যমন্ত্রী, পাহাড়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন