পুতিনের কট্টর সমালোচক রাশিয়ার বিরোধী নেতা নাভালনির মৃত্যু

fec-image

রাশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা ও প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনি মারা গেছেন। কারাগারে বন্দি অবস্থায় তার আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে।

৪৭ বছর বয়সী নাভালনি আর্কটিক সার্কেল থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের একটি নির্জন কারাগারে ছিলেন। সেখানে তিনি ৩০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন।

রুশ প্রেসিডেন্টের দপ্তর ক্রেমলিন জানিয়েছে, নাভালনির মৃত্যুর কারণ তারা জানে না। স্থানীয় কারা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাঁটার সময় হঠাৎ করে পড়ে যান নাভালনি। এরপর দ্রুত তার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ডাকা হয়। কিন্তু প্যারামেডিকরা ইতিবাচক কিছু করতে পারেননি। তবে কী কারণে তার মৃত্যু হলো সে বিষয়টি এখন জানার চেষ্টা চলছে।

গত জানুয়ারিতে ভিডিও কলের মাধ্যমে আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন নাভালনি। তখন তার মাথা মুণ্ডন করা অবস্থায় ছিল। এছাড়া তার শারীরিক অবস্থাও বেশ খারাপ দেখা যাচ্ছিল।

গত ডিসেম্বরে হঠাৎ করে কারাগার থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন নাভালনি। প্রায় ছয় সপ্তাহ তার কোনো খোঁজ-খবর ছিল না।

সন্ত্রাসবাদ এবং জালিয়াতির অভিযোগে নাভালনিকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। ২০১০ সাল থেকেই তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড চালাচ্ছিলেন। পুতিন প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় নাভালনির মুক্তি পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু পুতিনের শাসনের অবসান দেখার সুযোগ আর তার হয়নি। এর আগেই দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে চলে গেছেন তিনি।

২০১১-১২ সালে রাশিয়ার নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়। ওই বিক্ষোভ আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন নাভালনি। রাশিয়ার সরকারের দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য সামনে এনেছিলেন তিনি। এছাড়া পুতিনের কাছের লোকদের বিভিন্ন গোপন তথ্যসংবলিত ভিডিও প্রকাশ করতেন তিনি। যা লাখ লাখ মানুষ দেখতেন।

২০১৩ সালে নাভালনি রাশিয়ার রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হয়ে ওঠেন। সেই বছর মস্কোর মেয়র নির্বাচনে তিনি ২৭ শতাংশ ভোট পান। রাশিয়ার বেশিরভাগ মানুষের বিশ্বাস ছিল মস্কোর মেয়র নির্বাচন স্বচ্ছ ছিল না। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এত ভোট পেয়েছিলেন।

নাভালনিকে ২০২০ সালে সাইবেরিয়ায় বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে সেবার তিনি বেঁচে যান। ওই সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়া হয়। পশ্চিমা দেশগুলোর ল্যাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যায় নাভালনির দেহে নার্ভ এজেন্ট নামের একটি পদার্থ প্রয়োগ করা হয়েছিল।

সুস্থ হয়ে ২০২১ সালে আবারও রাশিয়ায় ফিরে আসেন নাভালনি। তবে দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কারাগারে পাঠানোর আগে নাভালনি তার স্ত্রী ইউলিয়া ও দুই সন্তানের সঙ্গে মস্কোতে থাকতেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পুতিন, রাশিয়া, রাশিয়া ইউক্রেন সংকট
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন