পেকুয়ার রাজাখালীতে সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী

পেকুয়া প্রতিনিধি:
পেকুয়ার রাজাখালী ইউনিয়নে দূধর্ষ সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে এলাকাবাসী। তাদের দস্যুতা, প্রভাব, মহিলাদের ইভটিজিং ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যহত রাখায় এর প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি, আওয়ামীলীগ নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সার্কেল (চকরিয়া-পেকুয়া-কুতুবদিয়া) বরাবর লিখিত একটি অভিযোগ দায়ের করেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার রাজাখালী ইউনিয়নের বামুলা পাড়া এলাকার আহমদ ছবির পুত্র আনসার উদ্দিন (প্রকাশ ডাকাত আনসার) ও মো: শফির পুত্র মো: বাদশার নেতৃত্বে মো: কাছিম, জাবের অঅহমদ, মো: আইয়ুব, মো: শরিফ, বদিউল আলম ও নুরুচ্ছবীরসহ আরো কয়েকজনের সংঘবদ্ধ একটি সন্ত্রাসী গ্র“প রয়েছে। তারা প্রতিদিন জমি জবর-দখল, মহিলাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ইভটিজিং, নৌযান ডাকাতি, পথচারীদের ছিনতায় চুরি, বসতবাড়িতে ডাকাতি, মোবাইল ফোনে চাঁদাদাবী ও হুমকিসহ নানা অপকর্ম করেই চলেছে। এমনকি আওয়ামীলীগ ও সহযোগি সংগঠনের নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের হামলা চালাতে তারা দ্বিধাবোধ করেনা। অবৈধ, অস্ত্রের মহড়াও তাদের কাছে নিত্যদিনের রুটিন। এমনকি প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে ঘোরাফেরা করলে তার প্রতিবাদ করলে তাদের হতে হয় চরম নাজেহাল। যার কারণে কেউ প্রতিবাদ করারও সাহস পায়না।

সার্কেল বরাবর লিখিত অভিযোগ সূত্রে আরো জানা যায়, গত ৩ ডিসেম্বর রাত ৯টার সময় ওই ইউনিয়নের বামুলা পাড়ায় আওয়ামীলীগ, প্রজন্মলীগ ও মৎস্যজীবিলীগের নেতৃবৃন্দরা প্রয়াত উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আ.ক.ম শাহাবউদ্দিন ফরায়েজীর মেজবান ও শোকসভা উপলক্ষে এক আলোচনা সভা আয়োজন করেছিল মুক্তিযুদ্ধা গোলাম নবীর ছেলে বদিউল আলমের বাড়িতে। আয়োজন শেষের একপর্যায়ে স্থানীয় আ’লীগ নেতাদের উপর হামলা চালায় আনসার ও বাদশার নেতৃত্বে সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসীরা। ওই সময় সন্ত্রাসীরা লম্বা, কাটা বন্দুক ব্যবহার করে কিরিচ নিয়ে হামলা চালালে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা জাফর আহমদ (৪০) ও আব্বাস আহমদসহ (৩৬) আরো কয়েকজন মহিলা গুরুতর আহত হয়।

গত ৭ ডিসেম্বর ওই হামলার ঘটনায় উল্লেখিত ব্যক্তিরদের নামে এজহার করে একটি মামলা হয়। যার মামলা নং ০৫/১৫ । একই ঘটনায় নুরুল আলমের স্ত্রী ছকিনা বেগম ও বদিউল আলম বাদী হয়ে চকরিয়া আদালতে পৃথক দুটি মামলা করে। এর আগে ২০১০ সালে ছাদেকা বেগম, ২০১৪ সালে আবুল কাশেম বাদী হয়ে মামলা করলে তা বর্তমানে আদালতে চলমান রয়েছে। যার মামলা নং ২০/১৪ ও ৩৩/১০ ইং। এছাড়াও তাদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা চলমান রয়েছে।

মুক্তিযোদ্ধা গোলাম নবীর ছেলে শফিউল আলম ও ইউনিয়ন মৎস্যজীবিলীগের সভাপতি মো: নাজেম উদ্দিন জানান, আনসার, বাদশা ও কাছিমসহ তাদের অনুগত সন্ত্রাসীদের অত্যাচার ও অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারে রাজাখালীসহ উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দারা অতিষ্ট হয়ে ওঠেছে। তাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও মামলা করায় ইতিমধ্যে আমাদের কাছ থেকে চাঁদাদাবীসহ মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে তারা ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত আর অপকর্ম আড়াল করতে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক ভাইদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে সংবাদও পরিবেশন করিয়েছে। আমরা এ নিয়ে চরম আতংকের মধ্যে রয়েছি। প্রশাসনের প্রতি আমাদের দাবী উল্লেখিত নামের সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেফতার পূর্বক আইনের হাতে সোপর্দ করা হউক। না হলে এলাকার আইন শৃংখলার চরম অবনতি তারা ঘটাবে।

এ প্রসঙ্গে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া মুহাম্মদ মোস্তাফিজ ভুইয়া জানান, পেকুয়া উপজেলার আইন শৃংখলা আগের চেয়ে অনেক ভাল অবস্থানে রয়েছে। রাজাখালীর বিষয়ে আমরা বিশেষ পরিকল্পনা নিয়েছি। কোন অপরাধীকে ছাড় দেওয়া হবেনা। ইতিমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের ধরতে আমরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন