পেকুয়ায় যুবলীগ নেতার বাঁধায় সিডিউল জমা দিতে পারেনি ঠিকাদার

চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের পেকুয়ায় প্রায় ২০ লাখ টাকা মূল্যের এলজিইডির তিনটি কাজের বিপরীতে আহ্বানকৃত দরপত্রের সিডিউল জমা দিতে পারেননি ঠিকাদারেরা। স্থানীয় যুবলীগ নেতারা সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর একটা পর্যন্ত দরপত্র জমা দেওয়ার বাক্স ঘিরে রাখে। প্রায় ৭০ জন ঠিকাদার উপস্থিত হলেও তারা দরপত্রের সিডিউল বাক্সে ফেলতে পারেননি।

এমনকি বাঁধাপ্রাপ্ত ঠিকাদারেরা দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারম্যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকেও বিষয়টি মৌখিক এবং লিখিতভাবে জানালেও রহস্যজনক কারণে তিনি কোন উদ্যোগ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধুমাত্র যুবলীগ নেতারাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তিনটি প্রকল্পের বিপরীতে তিনটি সিডিউল বাক্সে ফেলেন বলে জানা গেছে।

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সিডিউল জমা দিতে যাওয়া মেসার্স জাকের উল্লাহ এন্টারপ্রাইজের জাকের উল্লাহসহ ক্ষুদ্ধ ঠিকাদারেরা বলেন, ‘সিডিউল জমা দিতে চাইলেও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম দলবল নিয়ে দরপত্রের সিডিউল জমা দেওয়ার বাক্স ঘিরে রাখেন। যুবলীগ নেতারা ছাড়া আর কেউ সিডিউল জমা দিতে পারবে না। এ সময় উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম তার দপ্তর ছেড়ে ইউএনওর কক্ষে গিয়ে বসে থাকেন’।

জানা গেছে, প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এলজিইডি সম্প্রতি দরপত্র (বিজ্ঞপ্তি নং-৪) আহ্বান করে। ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের জিওবি ফান্ডের অর্থায়নে এবং এডিপি থোক বরাদ্দের কাজগুলো হলো পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন মেরামত, উপজেলা হলরুম মেরামত ও উপজেলা পরিষদের সংযোগ সড়ক সংস্কার। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর এসব কাজের বিপরীতে ২১০টি সিডিউল ক্রয় করেন ৭০ জন ঠিকাদার।

এ প্রসঙ্গে পেকুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সিডিউল জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন ঠিকাদারকে বাঁধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেনি। অল্প টাকার কাজ যুবলীগের ছেলেরা করতে চেয়েছে। তাই আমি ঠিকাদারদের অনুরোধ করেছিলাম তারা যাতে সিডিউল জমা না দেয়। এর পরও যেসব ঠিকাদার সিডিউল ক্রয়ে আর্থিক ব্যয় করেছেন তা ফেরত দেওয়া হবে।’

উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল ইসলাম বলেন, ‘ঠিকাদাররা যথাসময়ে যাতে দরপত্রের সিডিউল বাক্সে ফেলতে পারেন সেজন্য আমাদের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এমনকি সিডিউল ফেলার বাক্স একেবারে উম্মুক্ত রাখা হয়। তবে কেউ বাঁধা দিয়েছেন কী-না তা আমার জানা নেই। যারা দরপত্র জমা দিয়েছেন তাদেরকে কার্যাদেশ দেওয়া হবে।’

এ ব্যাপারে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চেয়ারম্যান এবং পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইএনও) মো. মারুফুর রশিদ খান বলেন, ‘দরপত্রের সিডিউল জমা দিতে গিয়ে কেউ বাঁধা পেয়েছেন, এমন তথ্য আমার জানা নেই। কোন ঠিকাদারও আমার কাছে এ ধরণের অভিযোগ করেননি। এর পরও ঠিকাদারেরা যাতে নির্বিঘেœ দরপত্রের সিডিউল জমা দিতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় সকল উদ্যোগ নেওয়া হয়। বাইরে যদি কেউ বাঁধা দেয় তাহলে আমার কিছুই করার নেই বলে তিনি জানান’।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন