বাংলাদেশের মেয়েদের অনূর্ধ্ব-১৭ সাফে শুভসূচনা

ভুটানের জালে বাংলাদেশের মেয়েদের ৮ গোল

fec-image

ভুটানকে ৮-১ গোলে উড়িয়ে অনূর্ধ্ব-১৭ সাফে শুভসূচনা করেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। জোড়া গোল করেছেন শ্রীমতি তৃষ্ণারানী ও থুইনু মারমা। একটি করে গোল সুরভী আকন্দ প্রীতি, সুলতানা আক্তার, সাগরিকা ও মুন্নির।

ম্যাচ জুড়েই আধিপত্য দেখিয়েছে স্বাগতিক মেয়েরা। বাংলাদেশের আগ্রাসী ফুটবলের সামনে চিড়েচ্যাপটা হয়ে যায় ভুটান। পরিষ্কার কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি তারা। সেক্ষেত্রে কোনো কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়নি বাংলাদেশের রক্ষণভাগকে।

বয়সভিত্তিক তো বটেই, বড়দের ফুটবলে কখনোই বাংলাদেশের মেয়েদের হারাতে পারেনি ভুটানের মেয়েরা। ব্যতিক্রম হয়নি আজকের ম্যাচেও। পাঁচ দলের অনূর্ধ্ব-১৭ সাফে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ইতিহাস পাল্টানোর সুযোগ দেয়নি লাল-সবুজ মেয়েরা। গোলাম রব্বানী ছোটনের শীর্ষদের জয় ৮-১ গোলের বড় ব্যবধানে।

আজ (২০ মার্চ) ম্যাচ শুরুর বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই আক্রমণে বাংলাদেশ। ভুটানের রক্ষণ ভেঙে গোলরক্ষককে হার মানালেও বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি ফরোয়ার্ড সুরভি আকন্দ প্রীতি। ১০ মিনিটেও সুরভির দুর্বল শট ঠেকে যায় ভুটানি গোলরক্ষক দীক্ষা রাইয়ের গ্লাভসে।

সুরভি যেভাবে বারবার আক্রমণে উঠছিলেন তাতে একটা গোল পাওনা হয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশের। ১৬ মিনিটে সেই সাফল্য এল সুরভি-তৃষ্ণা রানীর জুটিতে। বক্সের ভেতর ভুটানি গোলরক্ষককে হার মানান সুরভি। শট নেন কোনাকুনি। ফাঁকাতেই ছিলেন তৃষ্ণা রানী। সুরভির শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হচ্ছে দেখে আলতো ছোঁয়ায় বল জালে জড়ান তৃষ্ণা।

২১ মিনিটে আবারও বল জালে জড়ান বাংলাদেশি অধিনায়ক রুমা আক্তার। তবে অফসাইডের কারণে সেই গোল বাতিল হয় স্বাগতিকদের। ২৬ মিনিটে ফ্রিকিক থেকে বক্সে সুবিধাজনক অবস্থায় বল পেয়েও পা পিছলে শট নিতে পারেনি সুরভী।

তবে আক্রমণাত্মক ফুটবলের ফল দুই মিনিট পরই তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। ২৮ মিনিটে নুসরাত জাহান মিতুর দারুণ এক রক্ষণচেরা পাস থেকে বাঁ প্রান্ত থেকে কোনাকুনি শটে দলকে দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে দেন তৃষ্ণা রানী।

৩৫ মিনিটে সুলতানা আক্তারের গোলে ব্যবধান ৩-০ করে বাংলাদেশ। জয়নব বিবি রিতার ফ্রি কিক ভুটানি গোলরক্ষকের হাত ফসকালে মাটিতে পড়ে লাফিয়ে ওঠা বলে হেডে লক্ষ্যভেদ করেন সুলতানা।

প্রথমার্ধে ম্যাচে গোল পেয়েছেন দারুণ খেলা সুরভিও। ৪২ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে কানন রানীর বাড়ানো বল বিপদমুক্ত করতে পারেননি ভুটানের ডিফেন্ডার চকি ওম। পেছন থেকে দৌড়ে গিয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডান পায়ের মাপা শটে লক্ষ্যভেদ করেন প্রীতি।

৫৩ মিনিটে হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েছিলেন তৃষ্ণা রানী। ডান প্রান্ত ধরে সুরভির ক্রস থেকে বল নিয়ন্ত্রণে না এনেই শট নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তৃষ্ণা। তবে তাঁর দুর্বল শট ঠেকিয়ে দেন ভুটানি গোলরক্ষক।

৬০ মিনিটে সুরভির বদলি হিসেবে মাঠে নামেন থুইনু মারমা। নেমেই প্রথম স্পর্শেই গোল পান বদলি এই ফরোয়ার্ড। মাঝমাঠ থেকে পূজা দাসের রক্ষণচেরা পাস ধরে ভুটানি গোলরক্ষককে হার মানান থুইনু। বল নিয়ন্ত্রণে রেখে ঠান্ডা মাথায় ফিনিশিং দেন এই ফরোয়ার্ড।

পরের মিনিটেই ব্যবধান ৬-০ করেন আরেক সুলতানা আক্তারের বদলি হিসেবে নামা মুন্নি। নুসরাত জাহান মিতুর পাস ধরে গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়ান মুন্নি।

পরের মিনিটে দ্বিতীয়বারের মতো বল জালে জড়িয়েছিলেন থুইনু, তবে অফসাইডের কারণে ব্যবধান বড় হয়নি স্বাগতিকদের। উল্টো ৬৩ মিনিটে ভুটানের হয়ে এক গোল শোধ দেন প্রিয়া ঘালি।

ভুটানের গোলের জবাবে ৭৬ মিনিটে ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় গোল তুলে নেন থুইনু মারমা। জয়নব বিবির ফ্রি কিক থেকে পোস্টে শট নিয়েছিলেন বদলি খেলোয়াড় সাগরিকা। তার শট ক্রসবারে লাগলে ফাঁকায় বল পান থুইনু, ঠান্ডা মাথায় হেডে বল ঠেলে দেন জালে।

৮৩ মিনিটে হ্যাটট্রিক পেয়েই যেতেন থুইনু। গোলরক্ষককে একা পেয়েও যে শট নিয়েছেন সেটা এবার লক্ষ্যে থাকেনি।

দুই মিনিট পর গোল খাতায় নাম লেখান সাগরিকা। বাঁ প্রান্ত ধরে মুন্নির শট প্রথম দফায় ঠেকায় ভুটানি গোলরক্ষক দীক্ষা। ফিরতি বলে শট নেয় সাগরিকা। দীক্ষা এবারও ফিরিয়েছিল সেই শট, তবে বিপদমুক্ত করতে পারেনি। দৌড়ে আলতো টোকায় দলের অষ্টম গোল তুলে নেয় সাগরিকা।

আজ দিনের প্রথম ম্যাচে শিলজি শাহজির হ্যাটট্রিকে নেপালকে ৪-১ গোলে হারিয়ে শুভসূচনা করেছে ভারতও। অন্য গোলটি পূজার। এই ম্যাচে বুকে আঘাত পেয়ে হাসপাতালে যেতে হয়েছে নেপালি গোলরক্ষক সুজাতা তামাংকে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: উৎসব, গোল, জাল
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন