বাইশারী থেকে ঈদগড় সড়ক যেন মরণ ফাঁদ!

IMG_3563 copy

বাইশারী প্রতিনিধি:

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী-ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়ক দেখলে মনে হবে অভিভাবক শূণ্য এই জনপদের রাস্তাটি। দেখলে মনে হবে এটি সড়ক নয় যেন মরণ ফাঁদ।

দীর্ঘ ২২ কিমি সড়কটিতে ৪৪ টিরও অধিক পরিমাণ গর্ত রয়েছে। সড়কটি মাঝে মধ্যে পাহাড়ি ছড়ায় রূপ ধারণ করেছে। কাঁদা মাটি মাড়িয়ে চলছে যানবাহন। ফলে উক্ত সড়কে চলাচলকারী অধিকাংশ যানবহনও এখন অকেজো হয়ে পড়েছে।

বাইশারী-ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়কে মিনিবাস মালিক সমিতির ম্যানেজার ও বর্তমান ঈদগড় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ শাহাজাহান বলেন, সড়কে অধিকাংশ স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে যে কোন মুহুর্তে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যার কারণে তিন ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনিশ্চিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি জনবহুল এলাকা বাইশারী বাজার রামু উপজেলা গর্জনিয়া ইউনিয়নের হিমছড়ি ও টাইম বাজার এবং ঈদগড় ইউনিয়নের ঈদগড় বাজার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে বাজার ঘাট অচল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন বাইশারী বাজার সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বাহাদুর।

দীর্ঘকাল যাবৎ উক্ত পাকা সড়কটি মেরামত না করায় এবার বর্ষা শুরুতেই সড়কের ঈদগাঁও ভুমুরিয়া ঘোনা নামক স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সরাসরি গাড়ি নিয়ে ঈদগড়-বাইশারী আসা মুশকিল হয়ে পড়েছে।

তিন ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষের একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম বাইশারী-ঈদগড়-ঈদগাঁও সড়ক বর্ষা আসার আগেই করুন দশায় পরিণত হয়েছে। এই তিন ইউনিয়নের বসবাসকারী পাহাড়ি-বাঙ্গালী বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোকজনের উৎপাদিত রবি শষ্য ছাড়াও দেশের সর্ববৃহৎ রাবার উৎপাদনশীল এলাকা হিসেবে পরিচিত বান্দরবানের বাইশারী। এসব পণ্য রপ্তানি না হলে হাজার হাজার শ্রমিক ও তাদের পরিবার বেতন ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে। পাশাপাশি সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সরজমিনে পুরো সড়কটি পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, কক্সবাজার জেলার অধীনে ১৪ কিমি এবং বান্দরবান জেলার অধীনে ৮ কিমি সড়কটি দীর্ঘ আট বৎসর যাবৎ মেরামত না করায় বর্তমানে খান খন্দে ভরা এবং পাহাড়ি ছড়াও মৃত্যুকোপে পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ ব্রিজ কালভার্ট মাঝখানে ফাটলসহ ভেঙ্গে পড়েছে। বর্তমানে পুরো সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কোন মুহুর্তে বড় ধরণের দূর্ঘটনা আশঙ্কাসহ মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়লে পায়ে হাঁটা ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ নেই। রোগীদের অবস্থা হবে আরো নাজুক। এছাড়া পাহাড়ে উৎপাদিত ফলফলাদি পচন ধরে যাবে।

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী তোফাইল মিয়ার নিকট মুঠোফোনে বলেন, কাগজপত্র দেখে সড়কটি কার বলা যাবে। তবে তিনি বিষয়টি আমলে নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন।

ঈদগড় ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহম্মদ ভূট্টো বলেন, সড়কের ১৪ কিমি রাস্তার কাজ যাহা কক্সবাজার জেলার অধীনে রয়েছে তা বর্তমানে কাজ শুরু হয়েছে। তবে অন্য রাস্তাটি বান্দরবান জেলার অধীনে হওয়ায় তিনি সে বিষয়ে কিছুই বলতে পারে না বলে জানান।তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সড়কটি যেন দ্রুত নির্মাণসহ কর্তৃপক্ষ নজরদারী করেন সে বিষয়ে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন