বান্দরবানে সাঙ্গু নদীর পাড়ে ধস, আতঙ্কে এলাকাবাসী
স্টাফ রিপোর্টার:
বান্দরবানে বন্যার পানি কমার সাথে পাল্লা দিয়ে সাঙ্গু নদীর পাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। শহরের মধ্যম পাড়া সাঙ্গু নদীর তীরবর্তী এলাকায় ২৪টি কাঁচা ঘর বিলীন হয়ে গেছে এবং ঐ এলাকায় বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। ভুক্তভোগিরা অন্যত্রে আশ্রয় নিয়েছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম।
স্থানীয়রা জানায়, বন্যার পর সাঙ্গু নদীর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে পানির টানে সোমবার ভোর রাতে নদীর তীরের ২৪টি বাড়ীঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া আরো প্রায় শতাধিক বাড়ীঘরে বড় বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। আতঙ্কিত হয়ে স্থানীয়রা বিভিন্ন সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়েছে।
মধ্যমপাড়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত আলেয়া বেগম বলেন, ২৫ বছর ধরে এ এলাকায় বসবাস করে আসছি। এমন ভাঙন আগে কখনো দেখেনি। চোখের পলকে ঘরবাড়ী নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘর থেকে কিছুই বের করতে না পারায় সবকিছু শেষ হয়ে গেছে।
প্রশাসন সূত্রে জানাযায়, শহরের মধ্যম পাড়া এলাকায় সাঙ্গু নদীর পাড়ে সরকারী জমিতে অবৈধভাবে কয়েক হাজার কাঁচা-পাকা ঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছে নিন্ম আয়ের লোকজন। নদী প্রবাহে বাড়ীঘর নির্মাণের ফলে ধসের সৃষ্টি হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মিজানুল হক চৌধুরী জানান, অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় দীর্ঘ দিন ধরে নদীর পাড়ে বাড়ী ঘর তৈরী করে বসবাস করে আসছিল অবৈধ দখলদাররা। এটি আইনত অপরাধ। ঝুঁকিতে বসবাসকারীদের মৃত্যুর ঝুঁকি এড়াতে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে ৩য় দফা বন্যার রেশ কাটিয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে জনজীবন। বন্যার পর রিংওয়েল, টিউবওয়েল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তীব্র পানি সংকটের কবলে পড়েছে স্থানীয়রা। কৃষি জমির বীজ তলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চরম বিপাকের মধ্যে পড়েছে কৃষকরা। জমি থেকে পানি নেমে গেলেও বীজের অভাবে নতুন করে বীজ তলা তৈরীসহ চারা বপন করতে পারছে না কৃষকরা।
অপরদিকে রুমা-থানছি ও রোয়াংছড়ি সড়কের বিভিন্ন অংশে ধসে যাওয়ায় ১৩ দিনের মতো যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ঐসব এলাকার জনসাধারণ বিকল্প হিসেবে নৌ পথে যাতায়াত করছে। সড়ক বিভাগ ও সেনাবাহিনী ধসে যাওয়া সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করেছে।
সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগ রুমা-থানছি সড়ক যোগাযোগ চালু করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। কয়েকদিনের মধ্যেই থানছি-আলীকদম সড়কটি চালু করা সম্ভব হবে বলে সংলিষ্টরা জানিয়েছেন।