৭ শত লোকের চলাচলের জন্য নেই কোন সড়ক

বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাঁদা, চরম ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

fec-image

বৃষ্টি হলেই হাঁটু সমান কাঁদা আর পানি জমে জলাশয়ে সৃষ্টি হয়। ফলে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বৃষ্টির পানি ও মাটি মিশে কাঁদায় একাকার হয়ে যায় পুরো রাস্তা। এতে বিপাকে পড়েন ওই এলাকার শত শত মানুষ। এমন দৃশ্যের দেখা মেলে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম তেলিয়াকাটা সড়কটিতে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাহামদ আলীর বাড়ি হতে নুরু ছফার বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ১ কি.মি বা ৩৮ চেইনের অধিক দুরত্বের সড়কটি কাঁদায় ভরপুর। এ এলাকায় প্রায় ৩ শত পরিবারের বসবাস। এ রাস্তায় প্রতিদিন চলাচল করে ৭ শতাধিকের অধিক লোকজন। বিকল্প কোনো রাস্তার ব্যবস্থা না থাকায় রাস্তার অভাবে প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে ওই গ্রামের লোকজনকে হাঁটু সমান কাঁদা মাড়িয়েই চলাচল করতে হয়। যাতায়াতে অনেক কষ্টসাধ্যর মাত্রা হয়ে দাড়ায় এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের। ফলে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের।

এ এলাকার মানুষের আতঙ্ক ও ভয়ের আরেক নাম বৃষ্টি। বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জমে পানি আর হাঁটু সমান কাঁদা। এমনকি বৃষ্টি যখন হয় তখন রাস্তায় কাঁদায় ভরপুর হয়ে গেলে গৃহবন্দি হয়ে যায় ওই এলাকার লোকজন। সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু সমান কাঁদা-পানির সৃষ্টি হয়ে জলাশয়ে পরিণত হয়ে যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, জনপ্রতিনিধি যায় আর আসে, কিন্তু এ এলাকার লোকজনের যাতায়াতের জন্য কোন ব্যবস্থা করে না। এ রাস্তা সংস্কারের নেন না কোন উদ্যোগ। নির্বাচন আসলে ভোটের জন্য নানা প্রতিশ্রুতি দেয় প্রার্থীরা। নির্বাচন চলে গেলে সেই প্রতিশ্রুতির মূল্য আর থাকে না হারিয়ে যায় সেই প্রতিশ্রুতি।

স্থানীয় বাসিন্দা বীর মুক্তিযুদ্ধা এস এম আবু বক্কর ছিদ্দিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উক্ত গ্রাম হবে শহর এর উল্টো উন্নয়ন আমাদের এলাকায়। কত চেয়ারম্যান মেম্বার আসে আর যায়, কিন্তু আমাদের যাতায়াতের দুর্ভোগ লাগলে কেউ এগিয়ে আসেনা। অনেকেই কথা দিয়ে কথা রাখেনি। তেলিয়াকাটা ৩০০ পরিবারের যাতায়াতের জন্য একটি রাস্তা নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছি। বিগত ৫/৬ বছর ধরে স্থানীয় ইউপি চেয়াম্যানসহ বিভিন্ন দফতরে রাস্তা নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য বরাদ্দ চেয়ে একাধিকবার লিখিতভাবে আবেদন করলেও কোন কাজের কাজ হয়নি।

এদিকে মাস্টার আবদুর জব্বার ও শিক্ষার্থী হাবিব বলেন, বর্ষা মৌসুমে নামাজ পড়তে মসজিদে যেতে অনেক কষ্ট হয়। কাঁদার জন্য গ্রামের এ রাস্তায় কোনো অ্যাম্বুলেন্স, মাইক্রোবাস, ভ্যান-রিক্সা আসে না। মোটরসাইকেল, সাইকেলে তো দূরে থাক, খালি পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দায়। বৃষ্টির দিনে গ্রামের কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোনো যানবাহন ও অ্যাম্বুলেন্সও এখানে ঢুকতে পারে না। অনেক সময় কেউ মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়লে কাঁধে করে কর্দমাক্ত রাস্তা পার করা হয়।

বিগত ২০ বছর ধরে আমাদের ৩ শত পরিবারের যাতায়াতের জন্য কোন রাস্তা করে দেয় নাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এবার হলেও যদি জনপ্রতিনিধিরা আমাদের দিকে একটু থাকায় সেই আশায় রইলাম।

স্থানীয় ৭ নং ওয়ার্ডের এমইউপি মো. নাছির উদ্দীন জানান, বিষয়টি নিয়ে অবগত আছি। ওই গ্রামের ৩০০টি পরিবারের যাতায়াতে সমস্যা নিরসনে রাস্তা নির্মাণের জন্য অবশ্যই উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাহাদুর শাহার মুঠোফোনে কল দিলেও সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন