ভারতে পালিয়ে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের ফেরত চায় বর্মী কর্তৃপক্ষ

fec-image

সামরিক জান্তার আদেশ মানতে অস্বীকার করে ভারতে পালিয়ে যাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে দেবার জন্য ভারত সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছে মিয়ানমারের সরকার।

ভারতীয় কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন সম্প্রতি ওই পুলিশ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারসমূহ সীমান্ত পেরিয়ে তাদের ভূখণ্ডে এসেছেন।

মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ চিঠিতে দুই দেশের মধ্যকার ‘বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের’ খাতিরে ওই কর্মকর্তাদের ফেরত পাঠাতে বলেছে। গত মাসে সংঘটিত সামরিক অভুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে সহিংস বিক্ষোভ এবং ধর্মঘট চলছে। প্রতিবাদ ঠেকাতে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ‘কঠোর অবস্থানে’ যাওয়ার পর এ পর্যন্ত ৫৫ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।

শনিবারও সামরিক জান্তার আদেশ অমান্য করে দেশব্যাপী বিক্ষোভ করেছে গণতন্ত্রপন্থীরা।

মিয়ানমার থেকে পাওয়া খবরে জানা যাচ্ছে, ইয়াঙ্গনে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট এবং স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করেছে। যদিও নতুন কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ভারতীয় রাজ্য মিজোরামের চাম্পাই জেলা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার মারিয়া সিটি জুয়ালি বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, মিয়ানমারের ফালাম জেলা পুলিশের কাছ থেকে তাকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, আটজন পুলিশ কর্মকর্তা পালিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছেন বলে মিয়ানমারের কাছে তথ্য রয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়, “দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সমুন্নত রাখার স্বার্থে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে প্রবেশ করা আটজন পুলিশ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করে মিয়ানমারের কাছে হস্তান্তরের অনুরোধ জানানো হচ্ছে।”

মিস জুয়ালি বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হয়েছে, এবং দিল্লি থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা পাওয়ার পরই সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

রয়টার্স বলছে, পুলিশ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যসহ প্রায় ৩০ জন সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের কাছে আশ্রয় চেয়েছেন।

ভারতীয় কর্মকর্তাদের করাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, শনিবারও মিয়ানমারের বহু নাগরিক ভারতে ঢোকার জন্য সীমান্তে অপেক্ষা করছিলেন।

ফেব্রুয়ারির শুরুতে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত দেশটির নেতা অং সান সুচিকে গ্রেপ্তার করে।

এরপর থেকে দেশটিতে সামরিক শাসন অবসানের দাবিতে গণ-বিক্ষোভ শুরু হয়। শুরুতে সেনাবাহিনী বিক্ষোভকারীদের প্রতি কিছুটা নমনীয়ভাব দেখালেও, গত কয়েক সপ্তাহে কঠোর দমনপীড়ন শুরু হয়েছে, এবং এ পর্যন্ত ৫৫ জন বিক্ষোভকারী মারা গেছেন, যাদের বেশিরভাগই তরুণ।

দেশটির মানুষ ইন্টারনেট ব্ল্যাকআউট, রাতভর সেনা অভিযান, অবৈধভাবে গ্রেফতার, বিক্ষোভকারীদের রাস্তায় ধাওয়া ও মারধর করা, ফাঁকা গুলি ছোঁড়া বা দূর থেকে মাথা বা বুক লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছেন।

সূত্র: বিবিসি

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন