ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন (সংশোধন) আইন-২০১৬ সংসদে পাস হওয়ায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ

প্রেসবিজ্ঞপ্তি :

বিতর্কিত পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিল (সংশোধন)-২০১৬ সংসদে পাস হওয়ার প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ।

বৃহস্পতিবার রাতে প্রচার মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি শাহাদাৎ ফরাজী সাকিব জানান, উপজাতিদের অগ্রাধিকার দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী ভূমি বন্দোবস্ত দেয়ার জন্য ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিল (সংশোধন)-২০১৬ সংসদে পাস হয়েছে।

এই বিলটি পাসের মধ্যদিয়ে পাহাড় থেকে বাঙালি উৎখাত করে তিন পার্বত্য জেলাকে বাংলাদেশ থেকে আলাদা করে জুম্মুল্যান্ড নামক ভিন্ন রাষ্ট্র গঠনের নীল নকশার বাস্তবায়নের প্রতিফলন হতে যাচ্ছে!

উল্লেখ,উক্ত বিলে পার্বত্য ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনের কোরাম ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে বিদ্যমান আইনে সংশোধনী আনা হয়েছে। আগে কমিশন চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই কমিশনের বলে গণ্য হত। বিলটি পাস হওয়ায় এখন থেকে চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সিদ্ধান্ত কমিশনের সিদ্ধান্ত বলে গণ্য হবে।

এছাড়াও আইনে বলা হয়েছে,কমিশনের সচিব এবং অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপজাতীয়দের অগ্রাধিকার প্রদানক্রমে স্থায়ী অধিবাসীদেরকে নিয়োগ করা হবে। এতে করে বাঙ্গালীদের সাথে বড় রকম বৈষম্য তৈরি করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতি বহির্ভূতভাবে জলে ভাসা ভূমিসহ যে কোন ভূমি বন্দোবস্ত প্রদান বা বেদখল করা হয়ে থাকলে তা বাতিলকরণ এবং বন্দোবস্তজনিত বা বেদখলজনিত কারণে কোনো বৈধ মালিক ভূমি হতে বেদখল হয়ে থাকলে তার দখল পুনর্বহাল করা হবে।

তবে শর্ত থাকে যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী অধিগ্রহণ করা ভূমি এবং বসতবাড়িসহ জলে ভাসা ভূমি, টিলা ও পাহাড় ব্যতীত কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা ও বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ এলাকার ক্ষেত্রে এই উপধারা প্রযোজ্য হবে না। এই সংশোধনীর ফলে পার্বত্য অঞ্চলের অধিকাংশ বাঙ্গালী তাদের ভূমির মালিকানা হারাবে।

উক্ত কমিশন, উপজাতিদের প্রথাগত রীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী বিচার কার্য সম্পাদন করবেন। অর্থাৎ কোন প্রকার দলিল পত্র ছাড়াই শুধুমাত্র স্থানীয় হেডম্যান, কার্বারিদের মুখের কথার উপর ভিত্তি করে উপজাতিরা যে কোন ভূমির মালিকানা লাভ করতে পারবেন। সবচেয়ে বড় কথা কমিশনের অধিকাংশ কর্মকর্তা, কর্মচারি উপজাতিদের মধ্যে থেকে নিয়োগ করা হবে। ফলে তারা নিজেদের খেয়াল খুশি মত ভূমি জরিপ ও বন্টন করতে পারবে।

যার ফলে জাতিগত স্বজনপ্রীতির প্রভাব পরিলক্ষিত হবে। পার্বত্য অঞ্চলে মারাত্মক সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। পার্বত্য জনগণের দাবি উপেক্ষা করে বিতর্কিত পার্বত্য ভুমি কমিশন আইন ২০১৬ সংসদে পাস হওয়ায় পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ তীব্র নিন্দা এবং প্রতীবাদ জানায়। সেই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি-বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিল (সংশোধন)-২০১৬ বাতিল পূর্বক দ্রুত স্থানীয় সকলের পরামর্শ ক্রমে সংবিধানের সাথে সঙ্গতি রেখে পুনরায় সংশোধনের জোর দাবী জানায় পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ। অন্যথায় বাংলাদেশের অখন্ডতা রক্ষার্থে সমগ্র দেশের বাঙালীদের সাথে নিয়ে কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন