মাটিরাঙ্গার ছয় ইউনিয়নে বিদ্রোহের আগুনে পুড়ছে আওয়ামী লীগ

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসিনিয়র রিপোর্টার :

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার সাত ইউনিয়নের মধ্যে ছয় ইউনিয়নেই বিদ্রোহের আগুনে পুড়ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তৃতীয় ধাপে আগামী ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি যখন একক প্রার্থী নিয়ে অনেকটা ফুরফুরে মেজাজে ঠিক তখনই একাধিক বিদ্রোহী নিয়ে বিপাকে রয়েছে টানা দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ। জ্বলে উঠা বিদ্রোহ থামানো যাবে কিনা তা নিয়ে দ্বিধায় ভূগছে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তৃনমুলের নেতাকর্মীরা।

উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মো. তাজুল ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মো. সুরুজ মিয়া, ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা মো. হুমায়ন কবীর ও ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মো. আমির হোসেন। তবে শেষ পর্যন্ত মো. সুরুজ মিয়া ও মো. আমির হোসেন তাদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিতে পারেন বলে আভাস পাওয়া গেলেও ভোটের মাঠে থাকার ব্যাপারে অনঢ় ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা মো. হুমায়ন কবীর।

তবলছড়ি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবদুল কাদেরকে চ্যালেঞ্চ করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মো. কামরুল হাসান আমান। বড়নালে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. আলী আকবরকে চ্যালেঞ্জ করেছেন ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. জামাল হোসেন।

উপজেলার গোমতি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. তোফাজ্জল হোসেন (ডা তোফায়েল) কে চ্যালেঞ্জ করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. মুনছুর আলী ও ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. ওমর ফারুক লিটন। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মনোয়নপত্র জমা দেয়া দু‘জনই শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকার ব্যাপারে অনঢ় বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

উপজেলার বেলছড়িতে তৃনমুলের ভোটে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া তরুন প্রার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন। মাটিরাঙ্গার সদর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক হিরনজয় ত্রিপুরা বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি চন্দ্র বিকাশ ত্রিপুরা।

অন্যদিকে, মাটিরাঙ্গার আমতলী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগে কোন বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলেও নির্বাচনের ময়দানে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের বিরোধীতার মুখে পড়তে পারেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী এমনটাই জানা গেছে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে।

দেশে প্রথম বারের মতো দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তৃনমুলের ভোটে প্রার্থী নির্বাচনেরও পরেও বিদ্রোহের আগুন জ্বলে উঠলো কেন এমন প্রশ্নের সরাসরি কোন উত্তর না দিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুবাস চাকমা বলেন, এখনো সময় আছে। শেষ পর্যন্ত সবকিছু মিটে যাবে। খুব শীঘ্রই সব ক্ষোভের অবসান হবে। মাটিরাঙ্গার সুচিত উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সাধারণ ভোটারদের রায়ে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীরা বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন