মাটিরাঙ্গার শ্রমজীবি দম্পতির ছেলে সাইফুল ইসলাম ‘ডাক্তার’ হতে চায়

20.05.2014_Medhabi Shiful Islam

মুজিবুর রহমান ভুইয়া :

সংসারের প্রতিদিনকার অভাব-অনটন আর দরিদ্রতা অদম্য মেধাবী মো: সাইফুল ইসলামের লেখাপড়ায় কোন বাধা সৃষ্টি করতে পারেনি। নিরক্ষর কৃষি শ্রমিক বাবা মো: মনির হোসেন ও তামাক শ্রমিক মা মমতাজ বেগম সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করেন পরিবারের অভাব গুছাতে। ফলে প্রতিনিয়ত অভাবের মধ্য দিয়েই কাটে তাদের সংসার। ইচ্ছা থাকলেও অর্থাভাবে সবসময় ছেলে মেয়েদের ইচ্ছা পূরণ করতে পারেননি শ্রমজীবি এ দম্পতি। তবে অভাবের সংসারে শিক্ষার আলো জ্বালিয়ে রেখেছেন। আর্থিক অসঙ্গতির কারণে কখনোই গৃহশিক্ষকের কাছে বা কোন কোচিং সেন্টারে পড়ার সুযোগ মিলেনি অদম্য মেধাবী মো: সাইফুল ইসলামের। লেখাপড়ার পাশাপাশি সপ্তম শ্রেনী থেকেই বিভিন্ন জনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রাইভেট টিউশনি করে নিজের ও ছোট বোনের লেখাপড়ার খরচ যুগিয়েছে সাইফুল ইসলাম।

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতি বিকে হাই স্কুল থেকে ২০১৪ সালের এসএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে মো: সাইফুল ইসলাম। তার জিপিএ-৫ প্রাপ্তি পাহাড়ী জনপদে পিছিয়ে পড়া প্রতিনিয়ত অভাব-অনটনের সাথে যুদ্ধ করা পরিবারে বইছে আনন্দবণ্য। যেন ভাঙ্গা ঘরে চাঁদের আলো। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় মো: সাইফুল ইসলাম বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে শুধুমাত্র নিজের মেধার স্বাক্ষরই রাখেনি স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও বাবা-মায়ের মুখ উজ্জ্বল করেছে।
 
ছেলের ভালো ফলাফলে অভিভুত মা-বাবার চোখে-মুখে আনন্দবণ্যা বা খশিকে ম্লান করে দিয়েছে নিত্যদিনকার অভাব। তারা এখনো জানেনা তাদের মেধাবী ছেলে কলেজে ভর্তি হতে পারবে কিনা। ছেলের ভবিষ্যত ভেবে তার চোখে-মুখে শুধুই হতাশার চাপ।

মেধাবী মো: সাইফুল ইসলাম তার ভালো ফলাফলের জন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে ভবিষ্যতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্নের জানায় অনেকটা হতাশার সুরেই। মেধাবী মো: সাইফুল ইসলাম ডাক্তার হয়ে মানবসেবা করার স্বপ্ন পুরনে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামানা করেছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন