রামুতে একমাসেও উদ্ধার হয়নি অপহৃত স্কুলছাত্রী

fec-image

কক্সবাজারের রামুতে টিকা দিতে গিয়ে অপহরণের শিকার হয়েছে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। অপহরণের ১ মাস পার হলেও এখনো ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মেয়েকে উদ্ধারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের এবং পুলিশ, র‌্যাবসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন কুল-কিনারা না পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন ছাত্রীর পরিবার।

অপহৃত ছাত্রীর বাড়ি রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নে। সে রামুর চাকমারকুল ইউনিয়নের আবু বক্কর ছিদ্দিক বালিকা মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে।

বিজ্ঞ আদালতে দায়েরকৃত মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, কক্সবাজার পৌরসভার দক্ষিণ রুমালিয়ারছা সমিতি বাজার এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে রিফাত (২২) দীর্ঘদিন ওই ছাত্রীকে মাদ্রাসায় আসা-যাওয়ার পথে অশোভন কথাবার্তা বলে ইভটিজিং করে আসছিলো।

গত ৩ মার্চ মাদ্রাসার অন্যান্য ছাত্রীদের সাথে সে কোভিড-১৯ টিকা দেয়ার জন্য রামু উপজেলা পরিষদে যান। সেখানে টিকা দিয়ে আরো এক সহপাঠির সাথে ফেরার পথে রামু বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় বখাটে রিফাত তাদের গতিরোধ করে এবং জোরপূর্বক একটি অটোরিক্সায় তুলে কক্সবাজার শহরের দিকে নিয়ে যায়।

এ ঘটনায় রামু থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ বিজ্ঞ আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেয়। এরই প্রেক্ষিতে গত ৭ মার্চ কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ রিফাতকে অভিযুক্ত করে মামলা (নং সিপি ৬৩/২০২২) দায়ের করেন অপহৃত ছাত্রীর পিতা। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।

অপহৃত ছাত্রীর পিতা আরো জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়েরের পর তিনি কিশোরী মেয়েকে উদ্ধারের জন্য গত ২১ মার্চ কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আরো একটি মামলা ( নং ৫৫৬/২০২২) দায়ের করেন। রিফাত ছাড়াও অপহরণে সহযোগিতা করায় এ মামলায় গিয়াস উদ্দিন ও নাসির উদ্দিন নামের আরো দুজনকে অভিযুক্ত করা হয়। এ মামলার প্রেক্ষিতে ভিকটিমকে উদ্ধারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে বিজ্ঞ আদালত।

এছাড়াও এ ঘটনায় অপহৃত ছাত্রীর পিতা বাদি হয়ে ২০ মার্চ কক্সবাজার সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী এবং ২১ মার্চ কক্সবাজারস্থ র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়কের কাছে অপহৃত মেয়ে উদ্ধারের জন্য লিখিত আবেদন দিয়েছেন। র‌্যাবের কাছে দেয়া আবেদনে বাদি উল্লেখ করেছেন- অপহৃত মেয়েটি বর্তমানে কক্সবাজার পৌরসভার রুমালিয়ারছড়া সমিতি বাজার এলাকার মৃত গুরা মিয়ার ছেলে কৃষি ব্যাংকে কর্মরত জয়নাল আবেদিন ও তার ভাই নাছির উদ্দিনের বাড়িতে জিম্মিদশায় রয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পিবিআই কক্সবাজার এর পুলিশ পরিদর্শক কায়সার জানান, অপহৃত ছাত্রীকে উদ্ধারে বিভিন্নস্থানে একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। এখনো চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ভিকটিমকে উদ্ধারের পরই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হবে।

এ ব্যাপারে জানার জন্য অপহরণে অভিযুক্ত রিফাতের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে সংযোগ পাওয়া যায়নি। ফলে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

অপহৃত ছাত্রীর পিতা আরো জানান, অভিযুক্ত রিফাত হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামী। তাছাড়া সে নিয়মিত মাদকাসক্ত। অপরদিকে তার মেয়ের বয়স মাত্র ১৪ বছর। একমাত্র মেয়েকে উদ্ধারে বিলম্ব হলে মেয়েকে জিম্মি রেখে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন করতে পারে। এ জন্য তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে মেয়েকে দ্রুত উদ্ধারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অপহৃত, উদ্ধার, রামুতে
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন