টেকনাফে অপহৃত শিশু উদ্ধার, আটক ৪

fec-image

টেকনাফে অপহৃত শিশু খায়রুল আমিন (১২) কে উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার হৃীলা নাইক্ষ্যংখালী মৌলভী বাজার মো. ইউনুসের ছেলে এবং মৌলভী বাজার ইসলামিক আজিয়া ফয়জুল উলুম হিফজ খানার শিক্ষার্থী ।

বুধবার (২১ জুন) ভোর সাড়ে ৫ টার সময় পাহাড়ের ভেতর অপহৃত শিশুকে পাওয়া যায়।

টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল হালিমর পাঠানো প্রেস নোটে জানানো হয় ” গত শুক্রবার (১৬ জুন) সকাল ১০ টার সময় হ্নীলা বাজার হতে রঙ্গিখালী বন্ধু ফরহাদের বাসায় যাওয়ার জন্য হ্নীলা বাজার থেকে আলমের টমটম গাড়ীতে উঠে। পানখালী যাওয়ার পথে ভিকটিম খায়রুল আমিনের বন্ধু ফরহাদ (১২) এর সাথে দেখা হয়। ফরহাদ অপহৃত শিশুকে তার বাসায় যাওযার জন্য বলে এবং কিছুক্ষণ পরে হ্নীলা বাজার হতে আসার কথা বলে।

অপহৃত শিশু খায়রুল আমিনকে নিয়ে টমটমের ড্রাইভার আলম পানখালী যাওয়ার পথে কৌশলে তার অপর সহযোগীকে গাড়িতে তোলে। পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক অপহৃত খায়রুল আমিনকে টমটম গাড়ি নিয়ে রঙ্গিখালী পাহাড়ের ঢালায় নিয়ে যায়। সেখানে অপহৃত শিশু খায়রুল আমিনের হাত বেঁধে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে। কিছুক্ষণ পর টমটম ড্রাইভার আলম তার গাড়ি নিয়ে সেখান থেকে চলে আসে।

ওই দিন রাত ১০ টার সময় অপহৃত শিশু খায়রুল আমিনকে পাহাড়ের উপরে তুলে অবস্থান করতে থাকে এবং রাত অনুমান ১ টার সময় অপহৃত শিশু খায়রুল আমিনকে নিয়ে একজন অপহরনকারীর বাড়িতে চলে আসে। অপহৃত শিশু খায়রুল আমিনকে অপহরনকারী সদস্য তার বাড়িতে নিয়ে আসলে আসামি আজিজা খাতুন অপহৃত শিশু এবং তার স্বামীকে খাবার খেতে দেয় এবং তার বাড়িতে রাতে আটক রাখে।

১৭ জুন ভোরে ফজরের আযানের সময় টম টম ড্রাইভার আলমের গাড়িতে করে অপহরনকারীরা অপহৃত শিশুকে পাহাড়ের পাদদেশে নিয়ে পুনরায় পাহাড়ের উপরে উঠে অবস্থান করতে থাকে এবং রাত অনুমান ১০ টার সময় অপহরনকারীরা অপহৃত শিশুকে সামনে রেখে তার মায়ের মোবাইলে ফোন করে ৬ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

এ সময় অপহরণকারীরা গাছের ডাল দিয়ে মারধর করে অপহৃত শিশুর কান্না তার মাকে শোনায়। অপহৃত শিশুর মামা থানায় নিখোঁজ ডায়রী করার পর বিষয়টি অত্যান্ত গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হয়। অপহরণকারীদের অবস্থান জেনে স্থানীয় লোকজন ও গ্রাম পুলিশের সহায়তায় দফায় দফায় পাহাড়ের উপর বিভিন্ন ঘর-বাড়ি তল্লাশি করা হয়।

অপহরণকারীরা বার বার অবস্থান পরিবর্তন করতে থাকে। কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলামের দিক-নির্দেশনায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) রাসেল”র সার্বক্ষনিক তত্ত্বাবধানে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক (অপস) সহ অফিসার ফোর্সের একটি অভিযানিক দল সার্বক্ষনিক উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখে।

মঙ্গলবার (২০ জুন) সন্ধ্যায় টমটম ড্রাইভার আলমকে আটক করে ভিকটিম উদ্ধারের জন্য পাহাড়ের উপর অভিযানের একপর্যায়ে পরের দিন বুধবার ভোর অনুমান ৫ টার সময় পাহাড়ের উপর অপহৃত শিশুসহ অপহরণকারীদের সন্ধান পায় পুলিশ।

এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাদের তাড়া করলে অপহরণকারীরা অপহৃত শিশু খায়রুল আমিনকে রেখে পালিয়ে যায়। থানা পুলিশ সকাল সাড়ে ৫ টার সময় অপহৃত শিশু খায়রুল আমিনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।

ঘটনায় জড়িত অপহরণকারীদের গ্রেফতারের জন্য অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে এবং অপহৃত শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

এ ঘটনা সংক্রান্তে হ্নীলা ইউনিয়নের মরিচ্যাঘোনা বড়বিল এলাকার নুর মোহাম্মদের ছেলে মো.আলম(২৭), মৃত ইজ্জত আলীর ছেলে আহম্মদ হোসেন (৫২), আহম্মদ হোসেনের ছেলে মো. পারভেজ(২০) ও সাইফুল ইসলামের স্ত্রী আজিজা খাতুন(২১)কে আটক করা হয়।

উক্ত ঘটনার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান ওসি মো. আবদুল হালিম।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অপহৃত, আটক, উদ্ধার
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন