রামুতে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন: সংসদ সদস্য কমলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ
প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
আগামী ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিতব্য রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে অস্ত্র ও পেশী শক্তি প্রদর্শন করে ভোট কেন্দ্র দখলের ও ভোট জালিয়াতির চেষ্টা এবং সরকার দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনার নামে সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ করেছেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মেরাজ আহমেদ মাহিন চৌধুরীর সমর্থকরা।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকাল তিনটায় রামু চৌমুহনীস্থ বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ আনা হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সরকারদলীয় প্রার্থীর সমর্থকরা বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর সমর্থকদের হামলা ও মারধর, পুলিশ দিয়ে হয় হয়রানি, নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বিভিন্নভাবে হুমকী দিচ্ছে। এতে ভোটারদের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, রামু উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম ফেরদৌস, কক্সবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী, জেলা বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আবু ছিদ্দিক ওসমানী, বিএনপি নেতা ফয়েজ উদ্দিন রাশেদ। এতে লিখিত বক্তব্য দেন, বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মেরাজ আহমেদ মাহিন চৌধুরীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও রামু উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা আকতার কামাল আজাদ।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএনপি সমর্থিত মেরাজ আহমেদ মাহিন চৌধুরী আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। মাহিনের প্রতিদ্বন্ধিদের মধ্যে একজন সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থী হওয়ার সুযোগে আচরণবিধি লংঘনসহ বিভিন্ন অপকর্ম অব্যাহত রেখেছেন। যে কারনে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
জামায়াত প্রার্থীর সমর্থকরাও ইতিপূর্বে অন্যান্য নির্বাচনে ভোট জালিয়াতিতে জড়িত ছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই প্রতিদ্বন্দ্বী অপর দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক ও তাদের সহযোগিরা মেরাজ আহমেদ চৌধুরীর মাহিনের কর্মী-সমর্থকদের নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার উদ্দেশ্যে নানাভাবে হুমকী প্রদান করে যাচ্ছে।
উপজেলার ফতেখাঁরকুল, দক্ষিন মিঠাছড়ি, রাজারকুল, ঈদগড়, কচ্ছপিয়া, জোয়ারিয়ানালা, কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের প্রায় ২৫ টি ভোট কেন্দ্র সশস্ত্র সন্ত্রাসী দিয়ে দখলের চেষ্টা ও গোপন বৈঠক শুরু করেছে, সরকার দলীয় নেকাকর্মীরা। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রশাসনের কঠোর দায়িত্বশীলতা কামনা করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে, উপ-নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে নির্বাচনে আইনশৃংখলা রক্ষা ও ঝূঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, কক্সবাজার পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী, ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী, মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারী, এলজিইডি’র কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সরকারি-বেসরকারি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে চাকুরিরত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রিসাইডং অফিসার, পোলিং এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ না দেয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জোর দাবি জানানো হয়।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের গোপন বৈঠক ও বিভিন্নসূত্রে জানার পর নির্বাচনে বেশকিছু ঝূঁকিপূর্ণ কেন্দ্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব বিষয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, প্রধান নির্বাচন কমিশন কার্যালয়, জেলা প্রশাসন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার এবং জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এসব ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত আইনশৃংখা বাহিনীর উপস্থিতি নিশ্চিত করে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে।
রামু উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম ফেরদৌস জানান, রামু-কক্সবাজার আসনের সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল নির্বাচনী জনসভার নামে এলাকায় উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। তিনি এও বলেছেন, সরকার দলীয় প্রার্থীকে যে এলাকায় ভোট দেবে, সে এলাকায় উন্নয়ন হবে। আবার বিভিন্ন সভায় তিনি ভোট আদায়ে ভোটারদের হুমকীও দিচ্ছেন। যা নির্বাচনী আচরণবিধি সুস্পষ্ট ও চরম লংঘন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক শাহনুর উদ্দিন বাবু এবং রামু উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবুল বশর বাবুসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং রামুর কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।