লংগদুতে বন্যার্তদের মাঝে উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর ত্রাণ সহায়তা

DSC06544-2

লংগদু প্রতিনিধি:
অবিরাম ও অতিবর্ষণে কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় বন্যায় প্লাবিত হয়ে অন্তত চার হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত ও পানিবন্দি হয়েছে। লংগদু উপজেলা প্রশাসন ও সেনা জোনের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিতদের মাঝে আর্থিক সহায়তা, ত্রাণ ও বিনামূল্যে ওষধ ও চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বন্যা দূর্গতদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা এবং উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎস্যা ও ওষধ ও পানি বিষুদ্ধকরণ টেবলেট দেয়া হয়েছে। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ তোফাজ্জল হোসেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন আহম্মদ ও উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা ডাক্তার মোঃ ইব্রাহীম উপস্থিত থেকে এই ত্রাণ বিতরণ করেছেন।

এদিকে লংগদু সেনা জোনের উদ্যোগেও জোনের আওতায় বিভিন্ন এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে। সেনা জোনের ত্রাণ সহয়তার মধ্যে ছিলো শুখনো খাবার চিড়া, গুড় ও পানি বিষুদ্ধকরণ টেবলেট, ওরস্যালাইন।

লংগদু সেনা জোনের জোন কমান্ডার ও ২ইস্ট বেঙ্গল এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ মাহাবুবুর রহমান আলিম মাদ্রাসায় আশ্রয় নেওয়া লোকজনকে দেখতে যান এবং বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন। জোনের উপ-অধিনায়ক মেজর মোঃ গোলাম আজম ও মেজর নোমান এসময় উপস্থিত ছিলেন ।

এছাড়া বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান, ও মেম্বাররা নিজেদের উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করার খবর পাওয়া গেছে।খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অবিরাম ও অতিবর্ষণে কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে লংগদু উপজেলার নিচু এলাকার বাড়িঘর, রাস্তা-ঘাট, গো-চারণ ভূমি, বিশুদ্ব পানীয় জলের টিউবয়েলগুলো হ্রদের পানিতে তলিয়ে গেছে। হ্রদের প্রচণ্ড ঢেউ এর আঘাতে বাড়ি ভিটা, রাস্তা ঘাটের ব্যাপক মাটির ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। কবরস্থান, সব্জীক্ষেত, আমন ফসল, মৎস্যবাঁধ সব ডুবে গেছে।

কাট্রলী বাজার, ফোরেরমুখ সাধুরটিলা, ঝর্ণাটিলা, ভাসান্যাআদম, চাইল্যাতলী, কালাপাকুজ্জা, গুলশাখালী, বগাচতর, মারিশ্যার আটারকছড়া সহ লংগদুর সর্বত্র বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি ফেলে অপেক্ষাকৃত উঁচু এলাকায় আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে এবং স্কুল গৃহের বারান্দায় আশ্রয় নিচ্ছে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হলে এলাকায় তীব্র সমস্যা দেখা দিবে। শাক সব্জীও পাওয়া যাচ্ছেনা। যা মিলছে তাও অগ্নিমূূল্য। এছাড়া সাপের উদ্রপও বেড়েছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।

অবিরাম বৃষ্টিতে ছাত্রছাত্রীরা যোগাযোগের অসুবিধায় স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যেতে পারছে না । ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ছাত্র ছাত্রীদের অনুপস্থিতির সংখ্যা বাড়ছে।

এদিকে, কাপ্তাই হ্রদের পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। ফলে কিছুটা হলেও বন্যার্ত ও পানিবন্দি এলাকাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে আসছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন