সীতাকুণ্ডে জঙ্গী আস্তানায় নিহত কামাল ও জোবাইরার বাড়ি নাইক্ষ্যংছড়ির বাইশারীতে

hamid 19 copy

বাইশারী  প্রতিনিধি:

সীতাকুণ্ড জঙ্গী আস্তানায় নিহত কামাল ও তার স্ত্রী জোবাইরা ইয়াসমিনের বাড়ি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের গহীন অরণ্য যৌথখামার পাড়া এলাকায়। এলাকা থেকে ইতিমধ্যে জহিরুল হক, তার স্ত্রী রাজিয়া বেগম ও মনিজয়ারা বেগম নিখোঁজ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন জঙ্গী আস্তানায় নিহত জোবাইরা ইয়াসমিনের বড় ভাই জিয়াবুল হক। তারা কোথায় আছেন সেই খবরও তিনি জানেন না। নিখোঁজ জহিরুল (২৪) ও মনজিয়ারা (১৬) নিহত জোবাইরা ইয়াসমিনের আপন ভাই ও বোন

কামাল ও জোবাইরা ইয়াসমিন উভয়ে নয় মাস পূর্বে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাবে বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি বলে জানায় কামালের মা দিলবর বেগম।

কামালের পিতা মোজাফ্ফর আহমদ জানায়, তাদের বাড়ি রামু উপজেলার জোয়ারিয়ানালা এলাকায়। তারা সেখান থেকে ১০ বছর পূর্বে বাইশারী ইউনিয়নের যৌথখামার এলাকায় এসে বসবাস শুরু করে। তার সহজ-সরল ছেলে এ ধরনের কাজে জড়িত হতে পারে তা কল্পনাও করতে পারেননি তিনি।

জোবাইরা ইয়াসমিনের পিতা নুরুল আলম প্রকাশ নাগু জানায়, তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে প্রায় ৩০ বছর পূর্বে মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর থেকে বাইশারী ইউনিয়নের যৌথখামার পাড়ায় এসে বসবাস করছেন। তার ছেলে জহিরুল হক ও মেয়ে জোবাইরা ইয়াসমিন ও জামাতা কামাল খুবই ধার্মিক ছিলেন। তারা এলাকায় পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করত। তবে জঙ্গী তৎপরতায় জড়িয়ে যাওয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলেও জানান। তবে দিনে পানের বরজে কাজ করার পর মাগরিবের পর তার ছেলে জহিরুল হক, জামাতা কামালসহ কুমিল্লায় পুলিশের উপর বোমা হামলা করে পালিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের সহায়তায় আটক হাসানের সাথে প্রায় সময় কথাবার্তা বলতো এবং বন্ধুর সম্পর্ক ছিল। তবে কি বিষয়ে কথা হতো জানে না বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আবু তাহের বলেন, যৌথ খামারপাড়ায় যারা বসবাস করে, তারা সবাই বহিরাগত। এখানে মায়ানমার, মহেশখালীসহ দেশের নানা প্রান্তের লোকজন বসতি গড়েছেন। বহিরাগত এবং দুর্গম জনপদ হওয়ায় হয়তো অনেকে বিপদগামী হচ্ছে। তাছাড়া আমরা ইতিমধ্যেই এলাকায় নিখোঁজ ব্যক্তিদের তালিকা তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও তিনি জানান। তাছাড়া তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক লোক বাহিরে অবস্থান করছে। যাদের অনেকের খোঁজ খবর নেই।

ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, বিষয়টি খুবই উদ্বেগের এবং এলাকার জন্য অমঙ্গলজনক। তাছাড়া তিনি এলাকায় বহিরাগত লোকজন ঠেকাতে বাইশারী প্রবেশমুখে পুলিশের তল্লাসি চৌকি বসানো উচিত বলেও মনে করেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবেন বলেও তিনি জানান।

বাইশারী পুলিশ তদন্দ কেন্দ্রের ইনচার্জ (এসআই) আবু মুসা বলেন, বাইশারী এলাকার কোন মানুষ জঙ্গী তৎপরতায় জড়িত মর্মে পুলিশের কাছে অভিযোগ করে নাই এবং কোন তথ্য ছিল না। তাছাড়া কামাল, জুবাইরা, জহিরুল হকসহ অন্যান্য সদস্যরা বাড়ি থেকে চলে গিয়ে বাহিরে অবস্থান করছে, এ ব্যাপারে পরিবারের কাছ থেকে কোন ধরনের জিডি বা অভিযোগ পায়নি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন