১১ নভেম্বর কক্সবাজারে ১৯ প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

fec-image

কক্সবাজারকে আমূল বদলে দিয়ে দেশের অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার এবং জনগণের জীবনমান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ১১ নভেম্বর ১৯টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে এসব উন্নয়ন প্রকল্প। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।

বর্তমান সরকারের আমলে কক্সবাজারে ধারাবাহিক ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। লক্ষ-কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান রয়েছে মেগা প্রকল্পসহ ছোট-বড় নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। এসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে কক্সবাজারে পর্যটনসহ অর্থনৈতিক গতিধারা আমূল বদলে যাবে। যা জাতীয় অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে অভিমত সংশ্লিষ্ট মহলের। ইতোমধ্যে আগামী ১১ নভেম্বর থেকে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া কয়েকটি মেগা প্রকল্পসহ ১৫টি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ৪টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী উদ্বোধনযোগ্য প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ৯টি বড় প্রকল্প আর ৬টি ছোটো প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে দোহাজারি থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন, মাতারবাড়ির আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেল, বাঁকখালী নদীর উপর নির্মিত সেতু, সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে কুতুবদিয়া দ্বীপকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্তকরণ, উখিয়ার বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প, রামু উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, চকরিয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ আব্দুল হামিদ পৌর বাস টার্মিনালের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কাজ, কুতুবদিয়া ঠাণ্ডা চৌকিদার পাড়া আরসিসি গার্ডার ব্রিজ, মহেশখালীর গোরকঘাটা-শাপলাপুরের জনতাবাজার সড়ক, বিমান বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ভূমি ভরাট, বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প, ঈদগাঁও জাহানারা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মহেশখালীর ইউনুছখালীর উচ্চ বিদ্যালয়, উখিয়ার রত্ন ও মরিচ্যা পালং উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন।

অন্যদিকে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হতে যাওয়া প্রকল্পগুলো হচ্ছে- মাতারবাড়ির গভীর সমুদ্র বন্দর চ্যানেলের ১ম টার্মিনাল, টেকনাফের মাল্টিপারপাস ডিজাস্টার রিসিলেন্ট শেল্টার কাম আইসোলেশন সেন্টার, রামুর জোয়ারিয়ানালার নন্দা খালী সড়কে আরসিসি গার্ডার ব্রিজ নির্মাণ, জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কাব স্কাউটিং সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় ভবন নির্মাণ।

দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল দোহাজারী পর্যন্ত আসা রেল লাইন একদিন কক্সবাজার পৌঁছাবে। দেখা মিলবে স্বপ্নের সেই ট্রেনের। এতোদিন সেই অধরা স্বপ্ন পূর্ণ হতে যাচ্ছে কক্সবাজারবাসীর। পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন ঘোষণায় দারুন খুশি ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

জেলা প্রশাসন মুহাম্মদ শাহীন ইমরান ও দলীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী ১১ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের উত্তর জানারঘোনা এলাকায় স্থাপিত আর্ন্তজাতিকমানের আইকনিক রেল স্টেশনে আয়োজিত সূধী সমাবেশে যোগ দেবেন। এতে বাস্তবায়িত হতে যাওয়া এসব উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে। এরপর ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ঝিনুকের আদলে তৈরি নানন্দনিক সৌন্দর্য্যের এ স্টেশন এবং রেল চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করবেন। এরপর বিকালে মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ীতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কক্সবাজার সফরকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাসহ সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, তালিকায় থাকা প্রকল্পগুলোর কাজ চূড়ান্তের পাশাপাশি আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদনের জন্য চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির কাজ। এখন চলছে সৌন্দর্য্যবর্ধনসহ অনুষ্ঠান আয়োজনে চূড়ান্ত অগ্রগতির খোঁজ খবর।

এই উন্নয়ন প্রকল্প প্রসঙ্গে কক্সবাজার চেম্বার অমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রিজের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা জানান, এদিকে ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা বলছেন, সরকারের এসব উন্নয়ন প্রকল্পগুলো জাতীয় অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দেবে। এতে পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং পণ্য পরিবহনে যুগান্তকারী পরিবর্তনে প্রান্তিক পর্যায় থেকে সকল স্তরের মানুষ সুফল ভোগ করবে। তবে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো চালু হওয়ার পরবর্তী চালঞ্জগুলো মোকাবিলা করাটাই হবে প্রধান কাজ বলে মন্তব্য ব্যবসায়ী নেতাদের।

উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর হতে যাওয়া প্রকল্পগুলোসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় বাস্তবায়নাধীন রয়েছে ৫৩টির বেশি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। এদের মধ্যে রয়েছে বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্পও। এসব প্রকল্পের ব্যয় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার বেশি।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, প্রধানমন্ত্রী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন