থানচিতে সেনা-বিজিবির সাঁড়াশি অভিযান চলছে

bgb

স্টাফ রিপোটার:
বান্দরবানে থানচি উপজেলার দুর্গম বড়মদক এলাকায় চিরুণী অভিযান অব্যাহত রেখেছে সেনা-বিজিবি সদস্যরা। অভিযানে বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীরা পিছু হটে গভীর জঙ্গলে আত্মগোপন করেছে। তবে মিয়ানমার সীমান্তের বাংলাদেশ অংশের গভীর ও দুর্গম জঙ্গলার্কীণ সম্ভাব্য এলাকা গুলোতে গত বুধবার বিকেল থেকে চলা অভিযানে এ পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি।

যৌথবাহিনীর সূত্রে জানা যায়, থানছির রোমাক্রি ইউনিয়নের বড় মদক দুর্গম অঞ্চলে যৌথবাহিনীর কম্বিং অপারেশনের পর মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মির সদস্যরা আত্মগোপনে আছে নয়তবা সীমান্ত পাড়ি দিয়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীরা আবার অস্ত্র লুকিয়ে রেখে লোকালয়ের সাধারণ মানুষের সাথে মিশে যেতেও পারে। যৌথবাহিনী বুধবার বিকেল থেকেই সীমান্ত এলাকায় গহীন অরণ্যে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে।

মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী নিশ্চিহ্ন না হওয়া পর্যন্ত থানচির গভীর জঙ্গলে বিজিবি ও সেনা অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানা গেছে। তবে বর্ষার বৃষ্টি আর রাতের অন্ধকারে গহীন অরণ্যে অভিযান কিছুটা ব্যাহত হয়। অভিযানে এপর্যন্ত ১০ প্লাটুন সৈন্য অংশ নিয়েছে বলে জানাগেছে।

ঘোড়া নিয়ে বিজিবি-মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্রগোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যদের মধ্য গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে তা অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে নান তথ্য। মঙ্গলবার জেলার থানচির বড়মদক এলাকা দিয়ে আরাকান আর্মির সদস্যরা নিজেদের ব্যবহারের জন্য ১৩টি ঘোড়া নিয়ে যাচ্ছিল। দুটি পয়েন্টে বিজিবির সদস্যরা ঘোড়া গুলো আটক করে। এ ঘটনার জের ধরে গত বুধবার সকালে বিজিবি টহল দলের উপর হামলা চালায় আরাকান আর্মির সদস্যরা। গোলাগুলিতে বিজিবির নায়েক (করপোরাল) জাকির হোসেন গুলিবিদ্ধ হন।

গোয়েন্দা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত রোজার ঈদের পর আরাকান আর্মির সদস্যরা সিলেটের জাপলং থেকে সর্বমোট ১৫টি সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্য ৮টি ঘোড়া রাঙামাটির রাজস্থলি বাজারে রাখা হয়। ৭টি ঘোড়া চট্টগ্রামে রাখা হয়। পরবর্তীতে ১৩টি ঘোড়া বান্দরবানের ট্রাকচালক নুর আলমকে ঘোড়াগুলো দুইটি ট্রাকে করে চট্টগ্রাম থেকে সীমান্তে পৌঁছানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

কিন্তু নুর আলম বেঁকে বসায় থানচি বাজারের পরিচিত ব্যবসায়ী মিন্টুর মাধ্যমে বান্দরবানের আব্দুর রাজ্জাক নামের আরেক ট্রাক চালককে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুটি ট্রাকে করে ১৮ আগস্ট মঙ্গলবার একটি বাছুরসহ থানছি বাস স্টেশনের সন্ধ্যায় ১৩টি ঘোড়া পৌঁছে। পরদিন ১৯ আগস্ট পার্বত্য জন সংহতি সমিতি বাজার বর্জন কর্মসূচী থাকায় ঘোড়াগুলো নিয়ে বাহজারে প্রবেশ করতে না পারায় ১৯ আগস্ট থানছি-আলিকদম সড়ক ও নৌ পথে তিন্দু মুখ হইয়ে তিন্দু বাজারে বিভিন্ন হাত হয়ে ১৩টি ঘোড়া পৌঁছে। পথি মধ্য নৌকায় ৩টি মারা যায়। তিন্দু পাড়ায় ৪/৫দিন অবস্থান করার পর গত ২৪ শে আগস্ট সোমবার তিন্দু ও আন্দার মানিক এলাকায় বিজিবি আটক করে।

এই ব্যাপারে ট্রাক চালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, থানচির সিংগ্যাফা মৌজার হেডম্যান রনি মার্মার জন্য মিন্টু ঘোড়াগুলো এনেছিল।

স্থানীয় একাধিক গোয়েন্দা সদস্যদের অনুসন্ধানে জানা যায়, হেডম্যান রনি হচ্ছেন বড় মদকের বাসিন্দা। তিনি চড়া দামে ঘোড়াগুলো আরাকান আর্মির কাছে সরবরাহ করার দায়িত্ব নেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন