অতিবৃষ্টিতে প্লাবিত মহেশখালীর অর্ধশত গ্রাম, দিশেহারা নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ
মহেশখালী প্রতিনিধি:
টানা ৫দিনের অতিবৃষ্টির কারণে মহেশখালীর পরিস্থিতি ভয়াবহ! অতিবৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে মহেশখালীর অর্ধশত গ্রাম। দিশেহারা নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষ।
মহেশখালী উপজেলার একটি পৌরসভা ও আটটি ইউনিয়ন। জেলা পরিষদের মহিলা সদস্য ও মাতারবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মশরফা জন্নাত জানান, অতিবৃষ্টিতে মাতারবাড়ি ইউনিয়নের মগড়েইল, ফুলঝান মুরা, দক্ষিণ রাজঘাট, উত্তর রাজঘাট, বান্ডি সিকদার পাড়া গ্রাম প্লাবিত হয় এবং পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।
ধলঘাটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন, ধলঘাটা ইউনিয়নের খাতুর বাপের পাড়া, নাছির মোহাম্মদ ডেইল, বনজামিরাঘোনা ও সুতরীয়ার বাজার এলাকা সাগরের জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়েছে। ঠিকাদারের অবহেলার কারণে বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কার না হওয়ায় ভাঙ্গা বেরিবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি হচ্ছে।
কালামারছাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তারেক বিন ওসমান শরীফ জানান, তার এলাকার বিভিন্ন গ্রামে বেশ কয়েকটি বাড়ির কাঁচা দেয়াল পড়েগেছে এবং পাহাড়ি ঢলে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিহাদ বীন আলী জানান, ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ নলবিলা, আহমদিয়াকাটা , তেলিপাড়া, উত্তরকুল ও বশিরাকুলা এলাকা বৃষ্টির পানিতে প্লাবিত হয়। এছাড়াও বিভিন্ন গ্রামের কাঁচা রাস্তঘাট ভেঙ্গে গেছে ।
হোয়ানক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল জানান, অতিবৃষ্টির কারণে অত্র এলাকার নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষজন দিশেহারা হয়ে পড়ছে। পান চাষিদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে এবং পাহাড় ধ্বসের ঘটনা ঘটছে।
কুতুবজোম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন খোকন জানান, কুতুবজোম এলাকার কুয়েতপাড়া, তাজিয়াকাটার দক্ষিণ সাইড এবং চরপাড়া এলাকা প্লাবিত হয়। কাঁচা রাস্তঘাট ভেঙ্গে গেছে এবং ঝুপড়ি ঘরে বসবাসরত সাধারণ মানুষগুলো অসহায়ত্বের মধ্যে দিন আদিপাত করছে।
বড় মহেশখালী ইউনিয়নের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দলিলুর রহমান জানান, অতিবৃষ্টিতে পান চাষিদের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। পাহাড়ি ছরার ঢল ও বালি এসে কাঁচা রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে পানি জমে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।
শাপলাপুর ইউনিয়নের মেম্বার জসিম উদ্দীন জানান, বর্ষার মৌসুমের জন্য ধানের বীজতলা করেছে অনেক কৃষক। অতিবৃষ্টির কারণে পচে গেছে কৃষকের ধানের চারাগুলো। এছাড়াও পাহাড়ের ঢল এসে কাঁচা রাস্ত গুলোর বিভিন্ন পয়েন্টে ভেঙ্গে গেছে।
মহেশখালী পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দু শুক্কুর জানান, অতিবৃষ্টির কারণে অনেক জায়গায় পানিজমে আছে এবং কলেজ রোড ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সড়ক টি একেবারেই চলাচলের অনোপযোগী হয়ে পড়েছে। নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষগুলো দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও পাহাড়িঢল এসে রাস্তার উপর বালি জমে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যহত হয়েছে অনেক জায়গায়। প্রবল বৃষ্টির পানিতে চিংড়িঘের প্লাবিত হয়ে চিংড়ি চাষিরা দিশেহারা।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাশ জানান, অতিবৃষ্টির কারণে মহেশখালীর নিম্ন আয়ের সাধারণ মানুষজন নিদারুন কষ্টের মধ্যদিয়ে দিন যাপন করছে। মহেশখালী উপজেলার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে।