কক্সবাজারে চাঁদার জন্য মারধর করা হচ্ছে ভ্রাম্যমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের

চাঁদাবাজি

কক্সবাজার প্রতিনিধি:
শহরের ভ্রাম্যমান ক্ষুদ্র তরকারী ও মাছ বিক্রেতার কাছ থেকে জোর করে চাঁদা আদায় করছে একটি সিন্ডিকেট। চাঁদা না দিলে ওসব ব্যবসায়ীদের মারধর করছে। ছুড়ে মারছে তাদের ব্যবহৃত দাঁড়িপাল্লা, তরকারী ও মাছের ঝুঁড়ি। চাঁদা আদায়ে এই সিন্ডিকেটটি কখনও কখনও ট্রাফিকের নাম ভাঙ্গাচ্ছে আবার কখনো দেখাচ্ছে স্থানীয় প্রভাব।

অন্যদিকে খোদ ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধেও উঠেছে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ। তারা নাকি টাকার বিনিময়ে ওসব ভ্রাম্যমান বিক্রেতাদের রাস্তার ধারে বসতে দিচ্ছে। আর তাদের দাবীকৃত টাকা না দিলে মারধর করছে। এমনটাই অভিযোগ ভূক্তভোগী ব্যবসায়ীদের।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শহরের ফায়ারসার্ভিস সংলগ্ন এলাকা, বাজার ঘাটা, আইবিপি সড়ক ও হাসপাতাল সড়কে কিছু ভ্রাম্যমান তরকারী আর মাছ বিক্রেতা বসে। যাদের ব্যবসা বেশি চলে রাতে। বাজারঘাটা এলাকায় রাস্তুা সংস্কারের কাজ চলায় রাস্তা বন্ধ থাকায় এসব বিক্রেতাদের বেশি দেখা যাচ্ছে।

এসব ভ্রাম্যমান বিক্রেতাদের দেওয়া অভিযোগে জানা যায়, প্রতিরাতেই চাঁদা তুলে একটি সিন্ডিকেট। তারা টাকা তুলার সময় বলে এই টাকা ট্রাফিকের জন্য। অন্যদিকে হাসপাতাল সড়কের যারা টাকা তুলে তারা বলে এই টাকা পুলিশের জন্য। আর তাদের চাঁদা না দিলে বসতে দেবে না। এছাড়া স্থানীয় প্রভাব দেখিয়েও চাঁদা আদায় করছে। নয়ত মারধর করছে। ছুড়ে মারছে মাছ-তরকারী।

প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, বাজার ঘাটা এলাকায় চাঁদা তুলছে টেকপাড়ার শহরমুল্লুকের নেতৃত্বে মুবিন, মোস্তাফা ও টিপুসহ আরো অনেকে। আর হাসপাতাল সড়কে চাঁদা তুলছেন মোহাজের পাড়ার নেছার। তিনি নিজেকে কমিশনার নোবেলের ভাই পরিচয় দেন। তিনিই পুলিশের ভয় দেখান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। আর প্রভাব দেখায় স্থানীয় হিসেবে।

চাঁদা তুলার সময় শহরমুল্লুকের সাথে কথা বলে বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে। একবার বলে বাজারের ডাক নেওয়া হয়েছে। আবার বলে ট্রাফিক পুলিশকে কিছু দিতে হয়।

অনেকে সরাসরি ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙ্গুল তুলছেন। তারা বলছেন ভোলাবাবুর পেট্রোল পাম্প এলাকায় দায়িত্ব পালন করা ট্রাফিক পুলিশের মধ্যে অনেকে ভ্রাম্যমান বিক্রেতাদের কাছ থেকে ২০-৩০ টাকা করে চাঁদা উঠায়। তারা আরেকজন বিক্রেতাকে দিয়ে এই টাকা উঠিয়ে নেয়।

এমনও অভিযোগ রয়েছে তারা সরাসরি টাকার কথা না বলে ভ্রাম্যমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়দিরে তারকারী আর মাছ ছুড়ে মারে এবং মারধর করে। পরে তাকে ম্যানেজ করার জন্য একজন গিয়ে অথবা কাউকে দিয়ে টাকা উঠিয়ে নিয়ে আসে। প্রতিদিনই এই অত্যাচার করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে বুধবার রাত নয়টায় ওই এলাকায় দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক জাহাঙ্গীর আর শহীদের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তারা বলেন, বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা। মূলত কিছু অসাধু ব্যক্তি এসব দরিদ্র ভ্রাম্যমান ক্ষুদ্র বিক্রেতাদের কাছ থেকে হয়ত চাঁদা নিচ্ছে। আর এই অপকর্মের জন্য ট্রাফিকের নাম ভাঙ্গাচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন