খাগড়াছড়িতে ফলদ বাগান মালিক সমিতির সাংবাদিক সম্মেলনে অতিরিক্ত টোল আদায় ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, খাগড়াছড়ি:

খাগড়াছড়িতে উৎপাদিত আমসহ অন্যান্য মৌসুমি ফল পরিবহনে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত টোল ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ, জেএসএস এবং পুলিশের চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছে খাগড়াছড়ি জেলা ফলদ বাগান মালিকরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের হলরুমে সাংবাদিক সম্মেলন করে তারা এসব অভিযোগ করে।

সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সহ-সভাপতি দীপাকর চাকমা। লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে বলা হয়, পাহাড়ের আঞ্চলিক সংগঠন ও পুলিশের পাশাপাশি তিনটি রাষ্ট্রীয় সংস্থা পৌরসভা, পার্বত্য জেলা পরিষদ ও বাজার ফান্ডের অজুহাতে খাগড়াছড়ির বাগানে উৎপাদিত আমসহ অন্যান্য ফল পরিবহনে অতিরিক্ত টোল আদায় করা হচ্ছে খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম ও খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কের বিভিন্ন টোল আদায় কেন্দ্রে। সরকার নির্ধারিত টোলের অতিরিক্ত আদায়ের প্রতিবাদ করলে বাগান মালিক ও সংশ্লিষ্টদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে।

খাগড়াছড়ির তিনটি পৌরসভা, বাজার ফান্ড ও জেলা পরিষদের টোল পয়েন্টগুলো কয়েকটি সিন্ডিকেট বিগত ৮-৯ বছর ধরে নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। তাদের কাছে খাগড়াছড়ি জেলার ব্যবসায়ীরা জিম্মি হয়ে আছে।

এছাড়া ইউপিডিএফ ও জেএসএসসহ কয়েকটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ও পুলিশও চাঁদাবাজি করছে। ফলে বাইরে ব্যবসায়ীরা না আসার কারণে ফলদ বাগান মালিকরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। অবিলম্বে এ অতিরিক্ত টোল আদায় ও চাঁদাবাজি বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা।

ফলদ বাগান মালিক সমিতির সংগঠনিক সম্পাদক সমির হোসেন সুজন বলেন, সড়ক পরিবহনে আঞ্চলিক সংগঠন ও পুলিশদের চাঁদা দেয়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সংস্থা পৌরসভা, বাজার ফান্ড ও জেলা পরিষদের টোল কেন্দ্রগুলোতে নির্ধারিত ফি’র বাইরে বিনা রশিদে টোল নেয়া হচ্ছে। এতে করে প্রতি কেজি আম জেলার বাইরে নিতে খরচ পড়ছে ২৫-৩০ টাকা। যার কারণে বাইরের ব্যবসায়ীরা খাগড়াছড়িতে ব্যবসায় করতে অনীহা দেখাচ্ছে। এতে করে জেলার ২৫০০ বৃহৎ ও ক্ষুদ্র বাগানি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বাগান মালিক সমিতির উপদেষ্টা শাহাজ উদ্দিনের অভিযোগ জনৈক গডফাদারের নেতৃত্বে বিভিন্ন টোল কেন্দ্রে অতিরিক্ত টোল আদায় করছে। ফলদ বাগানের মালিকসহ ব্যবসায়ীরা ওই গডফাদারের বাহিনীর হাতে জিম্মি হয়ে আছে। তবে তিনি গডফাদারের নাম বলতে রাজি হননি।

সমিতির অর্থ সম্পাদক নিহার বিন্দু চাকমা বলেন, অতিরিক্ত টোল আদায় ও চাঁদাবাজির কারণে কোন ব্যবসায়ী খাগড়াছড়ি আসতে চাইছে না। ফলে কৃষক ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

অভিযোগের ব্যাপারে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কংজরী চৌধুরী জানান, পরিষদ নির্ধারিত টোলের অতিরিক্ত কেউ যদি আদায় করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে রামগড়ের সোনাইপুল টোল কেন্দ্রে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন