টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন

fec-image

টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে সংশ্লিষ্ট জাহাজ মালিক, ঘাট মালিক, কর্মচারী, শ্রমিক, সাধারণ ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী টেকনাফে মানববন্ধন করেছে।

বৃহস্পতিবার ‌(১৩ অক্টোবর) সকাল ১০টায় দমদমিয়া জাহাজ ঘাটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতি অক্টোবরের শুরুর দিকে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়। কিন্তু হঠাৎ করে নাফ নদীর নৌ- রুটে নাব্যতা সংকট দেখিয়ে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ফলে পর্যটন নির্ভরশীল টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দাসহ দেশের শত শত নাগরিক বেকারের পাশাপাশি লোকসানের সম্মুখীন হয়ে পড়ে।

জানা যায়, প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও জাহাজ চলাচলের জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছিল ব্যবসায়ীরা। পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন করে দমদমিয়া বিআইডব্লিউটিএ’র ঘাটে জাহাজ সমূহ অবস্থান করেছিল। একটি বছরের মধ্যে এক লক্ষাধিক মানুষ পাঁচ মাস পর্যটন ব্যবসায় পুঁজি খাটিয়ে সারাবছরের জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। চলতি বছর হঠাৎ করে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করায় পর্যটন খাতের সংশ্লিষ্ট রেস্টুরেন্ট, আবাসিক হোটেল, বাস, মাইক্রো মালিক, চালক ও জাহাজ শ্রমিকেরা বেকার হয়ে পড়েছে। অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

ইতোমধ্যে কক্সবাজার থেকে কর্ণফুলী ও বে-ওয়ান নামে দুটি পর্যটক জাহাজ চালু হলেও পর্যটকেরা ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা জাহাজে অবস্থান করে সাগরের প্রচণ্ড ঢেউয়ে প্রায় পর্যটক অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেই অসুস্থতার কারণে পর্যটকগণ আর জাহাজ নিয়ে কক্সবাজার ফিরতে পারে না।

পর্যটন ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে জানায়, কিছু স্বার্থান্বেষী বড় ব্যবসায়ী তাদের নিজস্ব ফায়দা লুটার জন্য টিকেটের মূল্য বাড়িয়ে ওভারলোডিং করে দীর্ঘ সাগর পথ পাড়ি দিয়ে সাধারণ পর্যটকদের ক্ষতিসাধনের চেষ্টা চালাচ্ছে। কিন্তু টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ- রুট দিয়ে পর্যটকবাহী জাহাজ চালু থাকলে কম খরচে পর্যটকগণ স্বাচ্ছন্দে ভ্রমণে উৎসাহিত হয়। বিগত ১৫ বছর ধরে এই নৌ-রুটে জাহাজ চলাচল করে আসছিল। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ-রুটে জাহাজ চলাচল না করা হলে পর্যটন শিল্পে ধস নামার পাশাপাশি সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে।

ইজারাদার জিয়াউর রহমান জানান, লাখ লাখ টাকায় জাহাজ ঘাট ইজারা নিয়েছিলাম। হঠাৎ কেন, কী উদ্দেশ্যে, কাদের খুশি করার জন্য জাহাজ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে তা বোধগম্য নয়। অনেক পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীরা বেকার হয়ে গেছে। তাদের পরিবার অর্ধহারে-অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করা ছাড়া বিকল্প পথ নেই। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, নদীর নাব্যতা সংকটের কারণে জাহাজ চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অচিরেই ড্রেজিং করে জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: টেকনাফ, পর্যটকবাহী জাহাজ, সেন্টমার্টিন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন