ট্রফির মহারণী ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও নিউজিল্যান্ড


আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার সমান দু’বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। তাদের সামনে প্রথম দল হিসেবে এবার মেগা টুর্নামেন্টটিতে তৃতীয় শিরোপা জয়ের হাতছানি। অন্যদিকে, আইসিসির ওয়ানডে ইভেন্টে নিউজিল্যান্ডের একমাত্র শিরোপাটি এসেছিল ২০০০ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। এরপর ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেও ফরম্যাটটিতে ২৫ বছরে তাদের আর কোনো বৈশ্বিক সাফল্য নেই।
আজ (রোববার) বিকেল ৩টায় দুবাইয়ের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মহারণী ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। ইতোমধ্যে চলতি আসরেই তারা গ্রুপপর্বে একবার মুখোমুখি হয়েছিল। যেখানে এখন পর্যন্ত অপরাজেয় ভারতই শেষ হাসি হাসে। বিপরীতে, ভারতের বিপক্ষের ম্যাচ বাদে নিজেদের বাকি তিন ম্যাচে জিতেছে কিউইরা। বলা হচ্ছে— ভারতকে এই মুহূর্তে হারানোর মতো কেবল এই দলটিই রয়েছে!
এর আগে ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিরোপা জিতেছিল ২০০২ ও ২০১৩ আসরে। এরপর থেকে ওয়ানডের বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে তাদেরও সর্বোচ্চ সাফল্য নেই। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেই তারা সেই খরা ঘোচানোর কাছাকাছি ছিল। তবে ঘরের মাঠে রোহিত-কোহলি-বুমরাহদের স্বপ্নভঙ্গ করে অস্ট্রেলিয়া। তবে পরের বছরই (২০২৪) ভারত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতেছে। এ নিয়ে সাদা বলে টানা তিনটি আইসিসি ইভেন্টেরই ফাইনালে উঠেছে ভারত। যা রোহিত শর্মার জন্য রেকর্ড। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপসহ চারটি আইসিসি ইভেন্টের ফাইনালে তিনি দলটিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে হারা ভারতের বর্তমান অধিনায়ক রোহিত নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজকের ফাইনাল নিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের সামনে আরও একটি ফাইনাল। টানা তিন বছর আইসিসির তিনটি ফাইনাল (ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি) খেলছি। ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যর্থ হলেও টি-টোয়েন্টির শিরোপা জিতেছি। এবার লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা। গত আসরে আমরা শিরোপা জিততে পারিনি। শিরোপা পুনরুদ্ধার করাই মূল লক্ষ্য। এবারের আসরে দারুণ পারফরমেন্স করেছে নিউজিল্যান্ড। ফাইনালে কিউইদের সমীহ করতে হবে। আমাদের সতর্কতার সঙ্গে ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে।’
এর আগে ২০১৩ সালে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৫ রানে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মত শিরোপা ঘরে তোলে ভারত। আর ২০০২ আসরে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ফাইনাল বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় যৌথভাবে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল তারা। ২০১৭ আসরে ফাইনালে ভারতকে হারায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান। অন্যদিকে, ২০০০ সালে সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতেছিল নিউজিল্যান্ড। ভারতকে হারিয়েই তারা ওয়াডেতে একমাত্র টাইটেল জিতে। এরপর ২০০৯ আসরের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারায় অস্ট্রেলিয়া।
এদিকে, রঙিন পোশাকে লম্বা সময় শিরোপা না জেতা কিউইদের অবশ্য সর্বশেষ বৈশ্বিক সাফল্য এসেছে এই ভারতেরই বিপক্ষে। ২০২১ সালে কেইন উইলিয়ামসনের দল বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরের ফাইনালে হারায় রোহিতদের। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপপর্বে ভারতের কাছে ৪৪ রানে পরাজিত হলেও ফাইনালে জিততে আশাবাদী কিউই অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ভালো ক্রিকেট খেলেছি। এই ধারা অব্যাহত রেখে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে চাই। আমাদের লক্ষ্য শিরোপা জয় করা। ভারতকে হারাতে হলে তাদের চেয়েও ভালো ক্রিকেট খেলতে হবে। দলের সবাই শিরোপার জন্য মুখিয়ে আছে।’
এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে ১১৯ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে ভারত ৬১ এবং নিউজিল্যান্ড জিতেছে ৫০ ম্যাচ। ১ ম্যাচ টাই ও ৭টি পরিত্যক্ত হয়। আইসিসি ইভেন্টে এই দুই দলের মধ্যে রুদ্ধশ্বাস লড়াই হয়েছে। বিশ্বকাপে ১০ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দুই ম্যাচ মিলিয়ে ম্যাচ মিলিয়ে উভয় দল মুখোমুখি হয়েছে মোট ১২ বার, যেখানে দুই দলই জিতেছে ৬টি করে। সমীকরণটা এরকম– বিশ্বকাপে ৫-৫, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ১-১।